আন্দোলনে যাদবপুরের পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই জমি শক্ত করতে চাইছে সঙ্ঘ পরিবারের অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ। কিন্তু বাম, অতিবাম ছাত্র সংগঠনের দাপটে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মতো এখানে তারা কোণঠাসা। প্রবেশিকা পরীক্ষা ফেরানোর দাবিতে যখন পড়ুয়া-অধ্যাপকদের বড় অংশই এককাট্টা, তখন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পাশে দাঁড়াল এবিভিপি। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যয়ের সুরে তাদেরও দাবি, এক বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’রকম নিয়ম থাকতে পারে না। ভর্তি নেওয়া উচিত নম্বরের ভিত্তিতেই। তাতে দুর্নীতি কমবে।
কীসের দুর্নীতি? এ বিষয়ে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সহ-সভাপতি সুবীর হালদারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে পড়ুয়া ভর্তি হলে অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি আশঙ্কা থেকে যায়। সব বিভাগেই যখন নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি হচ্ছে, তাহলে কেন শুধু কলা বিভাগে আলাদা নিয়ম হবে? এত আন্দোলনের দরকার কী?”
এখনও সরাসরি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে খাতা খুলতে পারেনি এবিভিপি। যদিও তাদের দাবি, যাদবপুরে তারা রয়েছে। বহু পড়ুয়া তাদের সমর্থনও করেন। কিন্তু বাস্তব চিত্র হল এবিভিপি যাদবপুরে ‘ন্যাশনাল স্টুডেন্ট ফ্রন্ট’-কে সমর্থন করে থাকে। সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে কলেজের বাইরে এবং ভিতরে মিছিল করে নিজেদের উপস্থিতি জাহির করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন।
আরও পড়ুন: পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন বাড়াল রাজ্য সরকার
এ বিষয়ে সুবীরের দাবি, “আমাদের শক্তি ধীরে ধীরে বাড়ছে। ন্যাশনাল স্টুডেন্ট ফ্রন্টের মতো যারা দেশবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে সামিল হবেন, তাদেরই সমর্থন জানাব। যাদবপুরের ক্ষেত্রেও আমাদের অবস্থান একই।”
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি মণিশঙ্কর মণ্ডল বলেন, “যাদের শুভ বুদ্ধি রয়েছে, তারা কেউ প্রবেশিকার পক্ষে থাকবেন না। এবিভিপি ঠিক কথাই বলছে। নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত একেবারেই সঠিক। আমরাও তারই পক্ষে।”
আন্দোনকারীদের বক্তব্য, তৃণমূল এবং বিজেপি যতই এই ইস্যুতে এক হোক না কেন, প্রবেশিকা ফেরানোর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত বিভাগের পড়ুয়ারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। অনশন করছেন ২০ জন ছাত্রছাত্রী। অধ্যাপকেরা পাশে রয়েছেন। শিক্ষাবিদ থেকে শুরু করে প্রাক্তনীদেরও একই দাবি। ছাত্র পরিষদ, এবিভিপি কিংবা পার্থ চট্টোপাধ্যায় জোর করে নিয়ম বদল করতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: পেনশনের সংস্কারে কী পদক্ষেপ, প্রশ্ন অর্থ কমিশনের
আন্দোলনকারীদের দাবি, প্রবেশিকা উঠিয়ে দেওয়া গেলে, শাসকদলেরই সব থেকে বেশি সুবিধা। এখানেও টাকার ভিত্তিতে ভর্তি হবে। কলা বিভাগে নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি হলে কোনও ভাবেই মেধা যাচাইয়ের উপায় থাকছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা বুঝতে পারছেন। আর শিক্ষামন্ত্রী বুঝতে পারছেন না।
যাদবপুরের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজ এবং জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। এই আন্দোলন সারা ভারতে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলছেন তাঁরা। উপাচার্য সুরঞ্জন দাস যতই স্বাধিকারের পক্ষে কথা বলুন না কেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোনোর সময়, সোমবারও তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy