ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজে বুথ লেভল অফিসারদের (বিএলও) আর্থিক সুবিধা প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এ বার এ কাজের সাপেক্ষে ছুটি সংক্রান্ত একটি সরকারি নোটিস প্রকাশিত হওয়ায় বিএলওদের সুবিধা আরও বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তবে প্রকাশিত ওই নোটিসটির পরে হওয়া সংশোধনীতে এই সুবিধার কথা আর উল্লেখ করা হয়নি। সূত্রের দাবি, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা না বলেই এক জন ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) নোটিসটি প্রকাশ করেছিলেন। পরে তিনিই তা সংশোধন করেন। ফলে বিএলও-রা তাঁদের কাজের জন্য শুধু বর্ধিত আর্থিক সুবিধাই পাবেন আপাতত।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রথম নোটিসে দেখা যায়, উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটি বিধানসভার ইআরও জানিয়েছিলেন, ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসআইআরের কাজে যুক্ত থাকবেন বিএলও-রা। ফলে তালিকাভুক্ত প্রত্যেককে হাজির থাকতে হবে। গোটা ওই কাজের সময়ে ‘অন-ডিউটি’-র সুবিধা পাবেন বিএলও-রা। প্রসঙ্গত, বিএলও-দের বেশিরভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের ক্ষেত্রে নির্ধারিত কাজের বাইরে ছুটির দিনে অন্য কোনও কাজের দায়িত্ব সামলাতে হলে অন-ডিউটির সুবিধা দেওয়ার চল রয়েছে। যাতে পরে কোনও সময়ে সেটির সাপেক্ষে ছুটি নিতে পারেন সংশ্লিষ্ট। কিন্তু শুক্রবারই ওই ইআরও সেই নোটিসের একটি সংশোধনী প্রকাশ করেন। সেখানে অন-ডিউটির সুবিধার কথা তিনি আর উল্লেখ করেননি। ধরে নেওয়া হচ্ছে, ঘোষিত সেই সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
কমিশন সূত্রের বক্তব্য, এসআইআরের সময়ে কাজ করার জন্য অন-ডিউটির সুবিধা সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ বা আদেশনামা প্রকাশের সিদ্ধান্ত হয়নি এখনও। তাই ওই ইআরও যে পদক্ষেপ করেছেন, তার সঙ্গে কমিশনের এখনকার অবস্থানের কোনও মিল নেই। অথচ, একটি জায়গায় এমন নোটিসের অর্থ, গোটা রাজ্যে সব বিএলও-কেই সেই সুবিধা দিতে হবে। যা নতুন প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি করতে পারে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিএলও হিসেবে নিযুক্ত হলেও, তাঁদের চাকরির শর্ত-সুযোগ-সুবিধা নিয়ন্ত্রিত হয় শিক্ষা দফতরের অধীনেই। তাঁরা অন-ডিউটির সুবিধা পাবেন কি না, তা নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট স্কুল বা শিক্ষা দফতরের সিদ্ধান্তের উপর। সেখানে কমিশন সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে না। ফলে ভুল বার্তা প্রচারিত হওয়ার আগেই সংশোধিত নোটিস প্রকাশ করতে হয়েছে ওই ইআরও-কে।
তবে এসআইআর-কে কেন্দ্র করে কমিশন বিএলও-দের সাম্মানিক বৃদ্ধি করেছে আগেই। তাতে এক জন বিএলও সাম্মানিক পাবেন ১২ হাজার টাকা। আগে তা ছিল ছ’হাজার টাকা করে। ভোটার তালিকা যাচাইয়ের জন্য উৎসাহ ভাতা আগের এক হাজারের বদলে পাওয়া যাবে দু’হাজার টাকা করে। বিএলও সুপারভাইজ়রেরা ১২ হাজার টাকার বদলে এ বার সাম্মানিক পাবেন ১৮ হাজার টাকা করে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)