Advertisement
E-Paper

রাতে সক্রিয় মোর্চা নেতারা

ফলে দলের বাইরে তো বটেই, ভেতরেও নানা প্রশ্ন উঠেছে। আপাতত আলাদা রাজ্যের দাবিকে সামনে রেখে ফের পুরনো ভাবমূর্তি ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন গুরুঙ্গরা।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৭ ০৩:৪৪
ফাঁকা রাস্তা।

ফাঁকা রাস্তা।

দরকার ছিল রাতে টহলদারি। কিন্তু এখন দার্জিলিং পাহাড়ে পুলিশের বড় দল টহলদারিতে বেরোলে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সমর্থকদের হাতে ফাঁড়ি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। আবার কিছু পুলিশকর্মী ফাঁড়িতে মোতায়েন থাকলে টহলদারির দল দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। ফলে আপাতত ফাঁড়ি সামলানোতেই মন দিচ্ছে পুলিশ। পুলিশ ও গোয়েন্দাদের সন্দেহ, সেই সুযোগে রাতে বাড়ছে মোর্চা নেতাদের আনাগোনা।

গোয়েন্দারা মনে করছেন, রাতের অন্ধকারে মোর্চার কয়েক জন নেতা পাহাড়ি গলি ব্যবহার করে গ্রামের পর গ্রামে মিটিং করে ঝিমিয়ে পড়া দলকে পুনর্গঠন করছেন। শুধু তাই নয়, যে নেতাদের বিরুদ্ধে হালে নানা মামলা হয়েছে, যাঁদের পুলিশ গ্রেফতার করতে পারে, তাঁরা যাতে নিরাপদে এক গ্রাম থেকে আর এক গ্রামে যেতে পারেন, সে জন্য কখনও টর্চের আলো জ্বালিয়ে, আবার কখনও শিস দিয়ে পাখির ডাক নকল করে সঙ্কেত দেওয়া হচ্ছে বলেও গোয়েন্দারা টের পেয়েছেন। ফলে, অধরা নেতাদের হদিস পেতে নতুন করে ছক কষতে হচ্ছে পুলিশ-প্রশাসনকে।

পুলিশের সঙ্গে এমন লুকোচুরির ব্যাপারে মোর্চার প্রথম সারির নেতাদের অনেকেই বেশ পারদর্শী। জিএনএলএফ আমলে বিমল গুরুঙ্গ দিনভর গা ঢাকা দেওয়ার পরে রাতে গোর্খা ভলান্টিয়ার্স সেল-এর অন্যতম কম্যান্ডার হিসেবে পাহাড়ের গ্রামের পর গ্রামে দাপিয়ে বেড়াতেন। মোর্চার আন্দোলন শুরুর পরেও পুলিশি নজরদারি এড়িয়ে একটা সময়ে গুরুঙ্গ, বিনয় তামাঙ্গ-সহ কয়েকজন রাতেই পাহাড়ের গ্রামে হেঁটে-বাইকে-জিপে ঘুরে বেড়াতেন। এ বার ফের সেই সুযোগ তৈরি করতে পারায় মোর্চা নেতাদের অনেকেই খানিকটা হলেও খুশি। কারণ, জিটিএ-র ৫ বছরের মেয়াদ শেষের মুখে তাঁদের একাংশের বিরুদ্ধে ঠিকাদার ঘনিষ্ঠতা, ব্যক্তিগত সম্পদ বাড়ানো-সহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ফলে দলের বাইরে তো বটেই, ভেতরেও নানা প্রশ্ন উঠেছে। আপাতত আলাদা রাজ্যের দাবিকে সামনে রেখে ফের পুরনো ভাবমূর্তি ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন গুরুঙ্গরা।

এই অবস্থায়, কী পদক্ষেপ করা হবে তা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের মধ্যেও নানা ভাবনা চিন্তা চলছে। এক পক্ষ চাইছে, ধীরেসুস্থে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে। তাঁরা জবরদস্তির পক্ষে নন। আবার একাংশের মত, দ্রুত কয়েক জন নেতার হদিস করতে পারলেই পুনর্গঠনের আড়ালে অশান্তি জিইয়ে রাখার ছক রোখা সহজ হয়ে যাবে। পুলিশের একটি সূত্র অনুযায়ী, পাহাড়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক জওয়ান নেই। সে জন্যই রাতে টহলদারিতে সমস্যা হচ্ছে। রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রতিটি জেলার থানা থেকে বাহিনী পাঠানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। তবে আগামী ২০ জুন মোর্চার তরফে সর্বদল বৈঠকে বন্‌ধ শিথিলের বার্তা দেওয়া হতে পারে বলে জিএনএলএফ, সিপিআরএম-সহ অনেক দলের ধারণা। রাজ্যও সে দিকে তাকিয়ে রয়েছে। মোর্চার কয়েক জন নেতা জানান, তাঁরাও কয়েক দিনের জন্য বন্‌ধ শিথিল করে সাধারণ মানুষকে রসদ সংগ্রহের সুযোগ দেএওয়ার পক্ষপাতী। শেষ পর্যন্ত গোপন ডেরা থেকে গুরুঙ্গ কী বার্তা দেন সেটাই দেখার।

পাহাড়ে ক্ষয়ক্ষতি

• শনিবার গভীর রাতে কালিম্পঙের আলে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে আগুন

• গরুবাথানের ডালিম গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে আগুন

• রবিবার দুপুরে কালিম্পং মহকুমা লাইব্রেরি চত্বরে এক কর্মীর আবাসনে আগুন

• কার্শিয়াঙে পুলিশের ভাড়া করা দু’টি বেসরকারি বাসে ভাঙচুর। বাস চালক, কর্মীকে মার

• বিকেলে পেডঙে পুলিশের জিপে আগুন

GJM Darjeeling Unrest মোর্চা Protest Gorkhaland
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy