ফাইল চিত্র।
ইউটিউবের একটি লিঙ্ক ঘিরে তোলপা়ড় কলকাতায় স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার সদর দফতর।
ব্যাঙ্কের এক গ্রাহক ইউটিউবে একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করেছেন, তিনি এসবিআইয়ের সার্ভার হ্যাক করে বহু গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছেন। ওই ভিডিওতে তিনি নিজেকে ‘এথিক্যাল হ্যাকার’ (যে হ্যাকার কোনও কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সুরক্ষা কবচ খতিয়ে দেখার কাজ করেন) বলেও দাবি করেছেন।
সেই দাবি উড়িয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এ দিন জানিয়েছেন, তাঁদের সব তথ্যই সুরক্ষিত রয়েছে। তবে একই সঙ্গে প্রদীপ্ত দাস নামে ওই গ্রাহকের বিরুদ্ধে লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এসবিআইয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আর ললিতা। ব্যাঙ্কের অভিযোগ, এই কাজের জন্য প্রদীপ্তবাবু ব্যাঙ্ক থেকে কোনও অনুমতি নেননি। তাঁর উদ্দেশ্য কী তা-ও ব্যাঙ্কের অজানা।
সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের মতে, এথিক্যাল হ্যাকিংয়ের এই কায়দা ভারতীয় আইনে স্বীকৃত নয়। লালবাজার সূত্রের খবর, অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রদীপ্ত ও তাঁর এক সহযোগীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। তবে রাত পর্যন্ত গ্রেফতারির খবর নেই। প্রদীপ্তকে ফোন করা হলে তিনি কোনও কথার উত্তর দেননি।
বছরখানেক আগে সাইবার হানা হয়েছিল দেশের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের সার্ভারে। বহু গ্রাহকের এটিএম এবং ব্যাঙ্কের গোপন তথ্য চলে গিয়েছিল ভিনদেশি দুষ্কৃতীদের হাতে। তখনই অভিযোগ উঠেছিল, দেশের সব থেকে বড় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এসবিআইয়ের তথ্যও চুরি হয়েছে। ঘটনাচক্রে, তখনই কয়েক লক্ষ গ্রাহকের এটিএম কার্ড বদল করেছিল এসবিআই। ব্যাঙ্কের দাবি ছিল, রুটিনমাফিক কার্ড বদলের ওই প্রক্রিয়া হ্যাকার হানা দেওয়ার আগেই শুরু হয়েছে। এবং তাদের সব তথ্য সুরক্ষিত। এ বার ফের এসবিআইয়ের তথ্য চুরির অভিযোগ ওঠায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে অনেক গ্রাহকের মনে।
এসবিআই কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করছেন, প্রদীপ্ত ভুয়ো তথ্য প্রচার করেছেন। তথ্য হাতানোর যে কৌশল তিনি দেখিয়েছেন, সেটাও অর্ধসত্য। কারণ, নেটব্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে একটি ‘ডাউনলোড’ অপশন আসে। তা থেকে তথ্য পাওয়া গেলেও সেটাই সব নয়। সেই তথ্য নিয়ে ব্যাঙ্কের শাখায় গেলে সই এবং অন্যান্য নথি যাচাই করে তবেই নতুন পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়। ব্যাঙ্কের এক মুখপাত্রের কথায়, ‘‘আমাদের নেটওয়ার্কের সুরক্ষা ব্যবস্থা ১০০ ভাগ নিরাপদ। গ্রাহকদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।’’
তা হলে অভিযোগ দায়ের হল কেন? ব্যাঙ্কের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, কেউ যদি নিজে চুরির কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করে, তা হলে আইনের খাতিরেই পুলিশে অভিযোগ জানানো প্রয়োজন। ‘‘এসবিআইয়ের উপরে লক্ষ লক্ষ মানুষের বিশ্বাস রয়েছে। সেটাকে কেউ নষ্ট করতে চাইলে উচিত শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন’’— মন্তব্য এক ব্যাঙ্ক কর্তার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy