Advertisement
০৫ মে ২০২৪

জয়প্রকাশ-কাণ্ডে ধরা দিয়ে জামিন অভিযুক্তদের

সোমবার উপ-নির্বাচন চলাকালীন দলীয় প্রার্থীর উপরে এই হামলার পরেই নির্বাচন কমিশনে অভিযোগে ন’জনের নাম দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু জয়প্রকাশ বা তাঁর দলের কেউ পুলিশে অভিযোগ করেননি।

করিমপুরের বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারকে পদাঘাত। ইনসেটে অভিযুক্ত তারিকুল শেখ।

করিমপুরের বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারকে পদাঘাত। ইনসেটে অভিযুক্ত তারিকুল শেখ।

সুস্মিত হালদার ও কল্লোল প্রামাণিক
করিমপুর শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৯ ০২:২৯
Share: Save:

করিমপুর বিধানসভায় উপনির্বাচনের দিন ওই কেন্দ্রের প্রার্থী তথা দলের রাজ্য সহ সভাপতি বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারকে মারধরের অভিযোগে ছ’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। যাঁর লাথিতে জয়প্রকাশকে ঝোপের মধ্যে হুমড়ি খেয়ে পড়তে দেখা গিয়েছিল, রয়েছেন সেই তারিকুল শেখও। তৃণমূল নেতারাই তাঁকে থানায় নিয়ে গিয়ে আত্মসমর্পণ করান। মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে পাঁচ জন জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, ষষ্ঠ জনকে বিকেলে ধরা হয়েছে।

সোমবার উপ-নির্বাচন চলাকালীন দলীয় প্রার্থীর উপরে এই হামলার পরেই নির্বাচন কমিশনে অভিযোগে ন’জনের নাম দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু জয়প্রকাশ বা তাঁর দলের কেউ পুলিশে অভিযোগ করেননি। তবে প্রার্থী আক্রান্ত হওয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দ্রাশিস ঘোষ কিছু ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তার ভিত্তিতেই পুলিশ তদন্ত ও ধরপাকড় করছে। তবে বিজেপির তালিকায় থাকা নামের মধ্যে তারিকুল ছাড়া আর কাউকে পুলিশ এখনও ধরেনি।

পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাস্থল থেকেই সোমবার এক জনকে ধরা হয়েছিল। রাতেই আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তারিকুলকে নিয়ে থানারপাড়া থানায় যান তৃণমূলের ধোড়াদহ ২ অঞ্চল সভাপতি বঙ্কিম মণ্ডল। ঘটনাচক্রে, বিজেপির তালিকায় বঙ্কিমের নামও ছিল। তবে পুলিশ তাঁকে ধরেনি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর আঠাশের তারিকুলের নামে এর আগে কখনও হাঙ্গামার অভিযোগ ওঠেনি। তবে তাঁর মাথা-গরম বলে পড়শিরা অনেকেই জানিয়েছেন। করিমপুর পান্নাদেবী কলেজ থেকে ভূগোলে স্নাতক হয়ে তিনি বাড়িতেই রেশমগুটির চাষ করেন। তাঁর স্ত্রীও বিএ পাশ। তাঁদের একটি বছর দেড়েকের মেয়ে আছে।

পুলিশ জানায়, তারিকুল ছাড়াও পিপুলখোলা এলাকার অমিরুল শেখ, দাউদ শেখ, রফিক মণ্ডল ও নতিডাঙার বাসিন্দা নীলকান্ত সর্দার গ্রেফতার হয়ে জামিন পেয়েছেন। বিকেলে থানারপাড়ার পণ্ডিতপুর রামনগর থেকে সুকুমার সর্দার নামে আরও এক জনকে ধরা হয়। আজ, বুধবার তাঁকে আদালতে হাজির করানোর কথা।

কিন্তু বিজেপির দেওয়া তালিকার সঙ্গে পুলিশের তদন্ত মিলছে না কেন?

এ দিন প্রশ্ন শুনেই ফোন কেটে দেন কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশের সুপার জাফর আজমল কিদোয়াই। বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের দাবি, ‘‘ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেটা তো আর বদলাতে পারব না।’’ যদিও ভিডিয়ো ফুটেজে যাঁদের হাত চালাতে দেখা গিয়েছিল, তাদের সকলকে পুলিশ চিহ্নিত করতে পারেনি। তালিকায় নাম থাকা কেউ-কেউ অন্য কোনও বুথের পোলিং এজেন্ট ছিলেন। আবার বঙ্কিম মণ্ডলের মতো লোকের নামও আছে, যিনি সংবাদমাধ্যমের একাংশকে দূর থেকে ঘটনাস্থলের পথ দেখিয়ে দিয়েছিলেন।

বিজেপি যদি হামলাকারীদের চিনেই থাকে, জয়প্রকাশ কেন নিজেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেন না? তাঁর দাবি, ‘‘আমি এক জন সাধারণ কর্মী। বিষয়টি আমাদের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব দেখছেন। পুলিশ তো এখন নির্বাচন কমিশনের অধীন। কমিশন যা করার, করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

By Election Jay Prakash Majumdar BJP Karimpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE