Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
TET 2022 Result

‘চাকরি তো এখনও অনেক দূর’! টেটে দ্বিতীয় হওয়া অদিতি উচ্ছ্বাসে মাততে রাজি নন এখনই

দীর্ঘ বিতর্ক ও চাপান-উতোরের পর শুক্রবার ২০২২ সালের টেটের ফলপ্রকাশ হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন চার জন। তাঁদের অন্যতম অদিতি। তিনি পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার শ্রীখণ্ড গ্রামের বাসিন্দা।

image of Aditi Mazumdar stood second in TET

২০২২ সালের টেটে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন অদিতি মজুমদার। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:৪১
Share: Save:

প্রাথমিকে নিয়োগের যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা (টেট)-য় পাশ করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তালিকায় তাঁর নাম দু’নম্বরে। তবু ‘চাকরি পাওয়া’ এখনও অনেক দূরের ব্যাপার বলেই মনে করছেন অদিতি মজুমদার। তাঁর মতে, টেটের ফলে রয়েছে মাত্র পাঁচ নম্বর। বাকি অনেকটাই ইন্টারভিউয়ে। তবে ফলপ্রকাশের পর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রতি তাঁর ভরসা ফিরে এসেছে বলে জানিয়েছেন অদিতি।

দীর্ঘ বিতর্ক ও চাপান-উতোরের পর শুক্রবার ২০২২ সালের টেটের ফলপ্রকাশ হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন চার জন। তাঁদের অন্যতম অদিতি। তিনি আদতে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার শ্রীখণ্ড গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক। কলকাতার বাঁশদ্রোণির ভাড়াবাড়িতে স্বামী, বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন। ২০১৪ সালেও টেট দিয়েছিলেন অদিতি। যে পরীক্ষা নিয়ে এখনও মামলা ঝুলে রয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। অদিতি যদিও সে বারের টেটে সফল হননি। তবে এ নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই তাঁর। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘তখন হয়নি, এখন হয়েছে, এ নিয়ে কিছু বলব না। হয়তো পরীক্ষা ভাল হয়নি। তখন তো আমার প্রশিক্ষণও ছিল না।’’

রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে একের পর এক মামলা চলছে হাই কোর্টে। শুক্রবারই হাই স্কুলের ১,৯১১ জন গ্রুপ ডি কর্মীর চাকরি গিয়েছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যখন এ নিয়ে রায় দিচ্ছেন, তখনই টেটের ফল প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। টেট নিয়ে রোজ শুনানি চলছে আদালতে। চাকরি যাচ্ছে বহু জনের। এ নিয়ে কি বাড়তি চাপ ছিল? অদিতির কথায়, ‘‘কোনও চাপ ছিল না। পড়ছিলাম। অত ভাবার সময় পাইনি।’’ চাপ না থাকলেও আশা ছিল। এমনটাই জানাচ্ছেন ২৯ বছরের অদিতি। তিনি বলেন, ‘‘পর্ষদ সভাপতি বলেছিলেন, স্বচ্ছ ভাবে পরীক্ষা হবে। সেটাই আশা ছিল। তাই পড়ছিলাম। এখন চাকরি হলে আশা পূরণ হবে।’’

তবে লড়াই এখনও থামেনি, জানালেন অদিতি। কারণ টেটের ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারভিউ। অদিতির কথায়, ‘‘যত দিন না চাকরি পাচ্ছি, এই রেজাল্ট বিশ্বাস করতে পারছি না। ইন্টারভিউই তো বাকি। যে হেতু টেটের রেজাল্টে মাত্র ৫ নম্বর রয়েছে, আর ইন্টারভিউতে অনেক বেশি নম্বর রয়েছে, সে কারণেই বলছি।’’

২০২২ সালের টেটের পরেও কম বিতর্ক হয়নি। তৃণমূলের যুবনেতা কুন্তল ঘোষের বাড়ি থেকে মিলেছিল উত্তরপত্র (ওএমআর শিট)-এর প্রতিলিপি। সে সব শুনে অবশ্য ভয় পাননি অদিতি। তিনি বলেন, ‘‘সে রকম কিছু না। আমি অন্য অনেক চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছি তো, এ সব নিয়ে ভাবার সময়ই পাইনি।’’ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়েও কোনও অভিযোগ নেই অদিতির। বাড়িতে পড়াশোনা করেই টেটে বসেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রশ্ন খুব সহজ হয়েছিল। আগে শুনেছি, কঠিন হত। আমি আগেও দিয়েছিলাম, তখন কঠিন কি সহজ বুঝতেই পারিনি। কারণ তখন প্রশিক্ষণ ছিল না।’’

আদালত বার বার বিভিন্ন রায়ে জানিয়েছে, টেটে দুর্নীতি হয়েছে। তাতে কি কখনও হতাশ হয়েছিলেন? অদিতি বলেন, ‘‘হতাশ তো হয়েইছি। তবে অত কিছু ভাবিনি। ঈশ্বরে ভরসা ছিল। যদিও এখনও চাকরি পাইনি, এত কিছু বলা ঠিক নয়। শুক্রবারের ফলের পর পর্ষদের উপরেও ভরসা রাখছি। আশা রাখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE