Advertisement
E-Paper

Jangalmahal: জঙ্গলমহলে সীমানা সামলাবে আদিবাসী মেয়েদের ‘উইনার্স’

জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য নতুন করে মাওবাদী কার্যকলাপের সম্ভাবনা পুরোপুরি নস্যাৎ করলেন।

কিংশুক গুপ্ত ও রঞ্জন পাল

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২২ ০৬:৪৪
 মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় পশ্চিম মেদিনীপুর মহিলা পুলিশের ‘উইনার্স’ বাহিনী। এই ধাঁচেই বাহিনী হবে জঙ্গলমহলে।

মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় পশ্চিম মেদিনীপুর মহিলা পুলিশের ‘উইনার্স’ বাহিনী। এই ধাঁচেই বাহিনী হবে জঙ্গলমহলে। ফাইল চিত্র

একের পর এক মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার ঘিরে শোরগোল পড়েছিল ঝাড়গ্রামে। ধরপাকড়ও হয়েছে। জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য নতুন করে মাওবাদী কার্যকলাপের সম্ভাবনা পুরোপুরি নস্যাৎ করলেন। বুধবার জেলার প্রশাসনিক সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘‘কিছু লোক মাওবাদীদের নাম করে মিথ্যে বলছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে তদন্ত হবে।’’ তবে নজরদারিতে কোনও ফাঁকফোঁকর রাখতে নারাজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী। সেই লক্ষ্যে বেলপাহাড়ির ঝাড়খণ্ড সীমানায় আদিবাসী মহিলাদের নিয়ে পুলিশের টিম ‘উইনার্স’ গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

গত ২৭ এপ্রিল নবান্ন থেকে ভার্চুয়াল বৈঠকেও ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত ও তৎকালীন পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ সে দিন জানিয়েছিলেন, মাওবাদী গতিবিধির কোনও প্রমাণ মেলেনি। মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগেই অবশ্য বিশ্বজিৎকে বদলি করে দেওয়া হয়। এ দিন নতুন পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহার প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বেলপাহাড়ির আইসি বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের কাছে এলাকার নিরাপত্তার খুঁটিনাটি জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। প্রশ্ন করেন, ‘‘বাইরে থেকে কাউকে ঢুকতে দেখেছেন?’’ আইসি জানান, সিরপির ৬টি ও রাজ্যের স্ট্রাকো বাহিনীর একটি ক্যাম্প আছে এলাকায়। ৩০-৩৫ কিলোমিটার ব্যাপী ঝাড়খণ্ড সীমানায় নিয়মিত নাকা তল্লাশি হচ্ছে। পুলিশের উদ্যোগে সিসি ক্যামেরাও লাগানো আছে। সিআরপির সঙ্গে চলছে যৌথ তল্লাশি অভিযান। সীমানাবর্তী এলাকায় পুলিশের নিয়মিত জনসংযোগ কর্মসূচিও হয়। এরপরই মমতা জানতে চান ওখানে মহিলাদের কোনও উইনার্স টিম আছে কি না? নেই জেনে ডিজিকে তাঁর নির্দেশ, ‘‘আদিবাসী মহিলাদের নিয়ে একটি উইনার্স টিম করে দাও ওখানে। যেহেতু ছ’টি রাস্তা রয়েছে ওখানে, ভাল রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে ঢুকে যাচ্ছে। অযোধ্যা পাহাড়ে একই সমস্যা হচ্ছে।’’ সীমানাকে যৌথ ভাবে রক্ষা করতে ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে কথা বলতে মুখ্যসচিবকেও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।

মাওবাদীদের নাম করে কোনও রকম অশান্তি তৈরির চেষ্টা যে বরদাস্ত করা হবে না, এ দিন তা স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সরাসরি জানতে চান, ‘‘সন্ধে ছ’টার পরে গ্রামের লোকজনকে বাড়ি থেকে বেরোতে বারণ করা হচ্ছে। এটা কি পুলিশ বলছে?’’ জবাবে পুলিশ সুপার জানান, এটা একেবারেই গুজব। এরপরই মমতা বলেন, ‘‘মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে সবসময় নজরে রাখবেন। অনেকে সাম্প্রদায়িক গোলমাল লাগানোর চেষ্টা করে। আর মাওবাদীদের নামে মিথ্যা কথা বলে। মাওবাদী আসছে বলে প্রচার করে। কেউ নিজে একটা পোস্টার লিখে লাগিয়ে দিল। অনেকে আবার সেটা ছবি তুলে সেটা বিক্রি করল। লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিল। আমি খবর নিয়ে দেখেছি। এটা কেউ কেউ করেছে।’’ ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রমের অবশ্য অভিযোগ, ‘‘রাজ্যের ক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্যে মাওবাদী তৈরি করেছিল তৃণমূলই। এখন সেই প্রাক্তন মাওবাদীরীই তৃণমূলের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ দিন মাওবাদী পুনর্বাসন প্রকল্পে ৩১ জনকে স্পেশাল হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী ও চারজন মাওবাদী হানায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। জঙ্গলমহলের খুঁটিনাটি সমস্যাতেও যে তাঁর নজর রয়েছে, এ দিন বারবারই তা বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। আদিবাসী, বিশেষ করে লোধা-শবরদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার কেমন হচ্ছে, তা জানতে সমীক্ষা করানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। আদিবাসী যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান ও স্বনিযুক্তি প্রকল্পেও জোর দিতে বলেছেন।

Mamata Banerjee jangalmahal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy