E-Paper

ধর্মঘট রুখতে প্রস্তুত পুলিশ, পাল্টা বার্তা প্রতিরোধেরও

শ্রম কোড বাতিল, দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরি, ন্যূনতম ২৬ হাজার টাকা মাসিক বেতন-সহ বিভিন্ন দাবিতে দেশ জুড়ে আজ, বুধবার ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫ ০৬:০৩
ধর্মঘট নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রমিক নেতৃত্ব। শ্রমিক ভবনে।

ধর্মঘট নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রমিক নেতৃত্ব। শ্রমিক ভবনে। —নিজস্ব চিত্র।

কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে জোর-জবরদস্তির চেষ্টা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানাল পুলিশ-প্রশাসন। উল্টো দিকে, ধর্মঘটীদের বক্তব্য, জোর করে ধর্মঘট ভাঙার চেষ্টা হলে প্রতিরোধ হবে।

শ্রম কোড বাতিল, দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরি, ন্যূনতম ২৬ হাজার টাকা মাসিক বেতন-সহ বিভিন্ন দাবিতে দেশ জুড়ে আজ, বুধবার ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি। তাকে সমর্থন জানিয়েছে সংযুক্ত কিসান মোর্চা। এর মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই নবান্ন নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, আগে থেকে ঘোষিত কোনও কারণ ছাড়া আজ দফতরে অনুপস্থিত থাকা যাবে না। মধ্যশিক্ষা পর্ষদও বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ধর্মঘটের দিন সব শিক্ষকের স্কুলে আসা বাধ্যমূলক বলে জানিয়েছে। এ-ও জানানো হয়েছে, কেউ স্কুলে না-এলে তার কারণ দর্শাতে (‘শো-কজ়’) হবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে। পাশাপাশি, প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ-প্রশাসনও। লালবাজার সূত্রে খবর, জোর করে দোকান-বাজার বন্ধ, রাস্তা অবরোধ, সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি নষ্টের চেষ্টা হলে কলকাতায় পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি, কলকাতা পুলিশের ১০টি ডিভিশনে সংশ্লিষ্ট ডেপুটি কমিশনারদের নেতৃত্বে বিরাট বাহিনী শহরের বিভিন্ন প্রান্তে টহল দেবে।

সাম্প্রতিক কালে কোনও ধর্মঘটের প্রভাবই এই রাজ্যে তেমন পড়েনি। তবে এ বার পরিবহণ-ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাম শ্রমিক সংগঠনগুলির অনুমোদিত বিভিন্ন অ্যাপ ক্যাব, হলুদ ট্যাক্সি এবং বাইক ট্যাক্সি চালক সংগঠন পরিষেবা বন্ধ রেখে ধর্মঘটে শামিল হওয়ার কথা জানিয়েছে। উল্টো দিকে, রাজ্য পরিবহণ দফতর সরকারি পরিবহণ নিগমগুলির ক্ষেত্রে বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া কর্মীদের ছুটি বাতিল করেছে। পূর্ণ ক্ষমতায় রাস্তায় সরকারি বাস নামাতে বলা হয়েছে। বেসরকারি বাস যাতে রাস্তায় নামে, সে দিকে নজর রাখার জন্য আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিকদের বলা হয়েছে।

যদিও ধর্মঘট ভাঙতে এলে পাল্টা প্রতিরোধের বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির নেতৃত্ব। সিটু-র রাজ্য দফতর ‘শ্রমিক ভবন’ থেকে মঙ্গলবার সিটু, আইএনটিইউসি, এআইসিসিটিইউ, এআইটিইউসি, ইউটিইউসি, এআইইউটিইউসি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ধর্মঘটের সমর্থনে আজ এন্টালি মার্কেট থেকে কেন্দ্রীয় মিছিল এবং যাদবপুর, শিয়ালদহ, খিদিরপুরে মিছিল হবে। সিটু-র রাজ্য সম্পাদক জিয়াউল আলমের বক্তব্য, “ব্যাঙ্ক, রেল, বিমা-সহ রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রগুলি শেষ করে দিচ্ছে কেন্দ্র। আর এই রাজ্য সরকার মহার্ঘ ভাতা ( ডিএ) দেয় না। অথচ বলে, ধর্মঘটের দিন দফতরে না-এলে বেতন কাটা হবে।” ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারও বলেছেন, “দেশে শ্রমিকের অধিকার খর্ব হচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের বিলগ্নিকরণ, দু’-এক জন শিল্পোদ্যোগী ফুলে-ফেঁপে ওঠার ফলে শ্রমিকেরা আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়ছেন। আর রাজ্য সরকার শ্রমিকের অধিকার ধর্মঘট কেড়ে নিতে চাইছে।”

সঙ্ঘের শ্রমিক সংগঠন বিএমএসের পাশাপাশি ধর্মঘটে নেই এ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি। বরাবরের মতোই তারা ধর্মঘটের বিরোধিতা করছে। সংগঠনের প্রতি বার্তায় রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে ধর্মঘট কোনও কার্যকর সমাধান আনে না। কর্মদিবস নষ্ট করা আমাদের নীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Strike CITU INTUC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy