মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি এবং সচিবের সঙ্গে বৈঠক চাকরিহারাদের প্রতিনিধি দলের। —নিজস্ব চিত্র।
এসএসসির চাকরি ফিরে পেতে প্রত্যেক চাকরিহারাকেই নতুন করে পরীক্ষায় বসতে হতে পারে বলে সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের পরে শুরু হয়েছে জল্পনা। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার দুপুরে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দফতরে গিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আবেদন জানাল চাকরিহারাদের এক প্রতিনিধিদল।
পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সচিব সুব্রত ঘোষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিজেদের উদ্বেগ এবং আর্জির কথা জানায় চাকরিচ্যুতদের সাত জনের প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধি দলের তরফে জানানো হয়, এসএসসি কর্তৃপক্ষ তাঁদের নির্বাচন করলেও নিয়োগকর্তা যে হেতু মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, সে কারণেই তাঁরা সেখানে আবেদন জানাতে গিয়েছেন।
প্রতিনিধিদলের সদস্য আজাহারউদ্দিন রকি জানান, পর্ষদকর্তাদের কাছ থেকে তাঁরা আশ্বাস পেয়েছেন, যোগ্যদের চাকরি হারাতে হবে না। ডায়মন্ড হারবার এলাকার একটি স্কুলের শিক্ষক আজাহারউদ্দিন বলেন, ‘‘মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি এবং সচিব আমাদের জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা মতোই রাজ্য সরকার এবং এসএসসি কর্তৃপক্ষ হাই কোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন।’’
সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের এসএসসির সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দিয়েছে। ২৮২ পাতার ওই রায়ের ফলে শিক্ষক পদের পাশাপাশি গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি মিলিয়ে বাতিল হয়েছে মোট ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি। রায় ঘোষণা করে দুই বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে এসএসসিকে। ঘোষিত শূন্যপদের প্রেক্ষিতে নিয়োগ হবে।
হাই কোর্ট রায় ঘোষণার পরেই রায়গঞ্জের জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আদালতের সোমবারের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে যাবে তাঁর সরকার। হাই কোর্টের রায়কে ‘বেআইনি’ বলেও দাবি করেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানান এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারও। তাঁর প্রশ্ন, পাঁচ হাজার জনের বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তার জন্য ২৬ হাজার জনের কেন চাকরি বাতিল হবে?
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সকালে শহিদ মিনার চত্বরে ধর্নায় বসেন চাকরিহারাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্যের নির্যাস, কেন অযোগ্য কয়েক জনের জন্য যোগ্যদের শাস্তি পেতে হবে? সিবিআই এত দিন ধরে তল্লাশি চালিয়ে কেন যোগ্য আর অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের মধ্যে ফারাক করতে পারল না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন ধর্নায় বসা চাকরিহারারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy