পুরভোটে শোচনীয় পরাজয়ের পর বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বে রদবদল নিয়ে টানাপোড়েন তুঙ্গে। সামনে বিধানসভা ভোট। তাই আপাতত রাজ্যের সংগঠনে কোনও নির্বাচন হবে না বলে এর আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। কিন্তু দলে যাঁরা নেতৃত্ব বদল চান, তাঁরা এর পরেও হাল ছাড়তে নারাজ। রাজ্য সভাপতি এবং পর্যবেক্ষকের পদ থেকে যথাক্রমে রাহুল সিংহ এবং সিদ্ধার্থনাথের অপসারণ চেয়ে দলের একাংশ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং আরএসএস নেতৃত্বের কাছে নতুন করে দরবার করছে।
রাজ্য নেতৃত্বে রদবদল করতে চাইলেও দলে সর্বসম্মত বিকল্পের খোঁজ মেলেনি। তাই নেতৃত্ব বদলের ভাবনা এখনও থমকে বলে বিজেপি সূত্রের ব্যাখ্যা। যদিও রাহুল-বিরোধী শিবিরের দাবি, রাজ্য সভাপতি এবং সিদ্ধার্থনাথের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ জমা পড়েছে, সব ক’টিকেই যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন সঙ্ঘ এবং বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সভাপতি হিসেবে রাহুলবাবুর মেয়াদ ফুরোবে অক্টোবরে। তার কয়েক মাসের মধ্যেই রাজ্যে বিধানসভা ভোট। সে জন্য রেওয়াজ মেনে এখনই সংগঠনের নির্বাচন হবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সিদ্ধার্থনাথ। কিন্তু সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ এক বিজেপি নেতা শুক্রবার দাবি করেন, ‘‘পুরো বিষয়টাই সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের হাতে। তিনি চাইলে এখনই রাজ্য নেতৃত্বে পরিবর্তন হবে। না চাইলে বিধানসভা ভোট পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। তবে দলের বিভিন্ন স্তরে কাজের গতিপ্রকৃতি দেখে আমার মনে হচ্ছে, পরিবর্তন বিধানসভা ভোটের আগেই হবে।’’ ওই নেতাই জানান, রাজ্য নেতৃত্বে পরিবর্তন যে দরকার, সে ব্যাপারে সঙ্ঘ বা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মোটামুটি সহমত। মূল সমস্যা হল— দল এবং রাজ্যবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য ও শিক্ষিত মুখের ব্যাপারে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না।
বিজেপি সূত্রের খবর, আরএসএসের অপছন্দের কাউকে রাজ্য সভাপতি করা দলের পক্ষে সম্ভব নয়। এ রাজ্যের সভাপতি পদের জন্য আরএসএসের কাছে চিকিৎসক সুভাষ সরকার ছাড়া আরও কারও নাম নেই। ওই নেতা জানান, সুভাষবাবু না হলে তুলনায় কম পরিচিত মুখকে ওই পদে আনা হতে পারে। আর সিদ্ধার্থনাথকে পর্যবেক্ষক পদ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সরানো না হলেও কার্যত তাঁর ডানা ছাঁটা হয়েছে। দলের সর্বভারতীয় সহ সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারমন মিলে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। যে কারণে শিবপ্রকাশ এ রাজ্যে যাতায়াত বাড়িয়েছেন। পাশাপাশি, নির্মলা আজ, শনিবার রাজ্যে আসছেন। উত্তরবঙ্গে সরকারি কার্যক্রম সেরে রবিবার কলকাতায় দলের রাজ্য পদাধিকারী এবং সোমবার মোর্চা এবং সেল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। পরে প্রয়োজন হলে শিবপ্রকাশ এবং নির্মলার পাশাপাশি অন্য কাউকেও পর্যবেক্ষক পদে আনা হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy