E-Paper

শিক্ষকেরা বিএলও-র কাজে, কে নেবে ক্লাস

বেশির ভাগ শিক্ষকই জানাচ্ছেন, বিএলও-র কাজ এবং স্কুলের শিক্ষকতা একসঙ্গে করা কার্যত অসম্ভব। শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, কোনও কোনও স্কুল থেকে সাত-আট জন শিক্ষককেও বিএলও-র কাজে নেওয়া হয়েছে। বহু প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা দু’-তিন জন।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৫ ০৬:০৮

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

লম্বা পুজোর ছুটির পরে স্কুলে ক্লাস শুরু হতে না হতেই ফের প্রশ্ন উঠেছে ক্লাস নিয়মিত হবে তো? কারণ বিএলও-র কাজে চলে গিয়েছেন বহু শিক্ষক। বিশেষ করে দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সিমেস্টারের পাঠ্যক্রম শেষ করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষকদের আশঙ্কা, সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস। কারণ, দ্বাদশ শ্রেণির চতুর্থ সিমেস্টারের প্রায় পুরো পাঠ্যক্রমই পড়ানো বাকি আছে।

পুজোর ছুটির পরে স্কুল খুলেছিল গত শনিবার। কিন্তু এর পরেই আবার ছটে দু’দিন ছুটি পড়ে যায়। ছটের ছুটি কাটিয়ে স্কুল খুলেছে বুধবার থেকে। এ দিকে, শিক্ষকদের বিএলও-র দায়িত্ব পালনও শুরু হয়ে গিয়েছে। বেশির ভাগ শিক্ষকই জানাচ্ছেন, বিএলও-র কাজ এবং স্কুলের শিক্ষকতা একসঙ্গে করা কার্যত অসম্ভব। শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, কোনও কোনও স্কুল থেকে সাত-আট জন শিক্ষককেও বিএলও-র কাজে নেওয়া হয়েছে। বহু প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা দু’-তিন জন। সেই সব স্কুল থেকে বিএলও-র জন্য শিক্ষক নিয়ে নেওয়ায় শিক্ষকের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াচ্ছে এক জন। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বেশির ভাগ স্কুলে বিষয়-ভিত্তিক শিক্ষক এক জন। ওই এক জন শিক্ষকও বিএলও-র কাজে চলে গেলে সেই বিষয়টা পড়াবেন কে, উঠছে প্রশ্ন। এমনকি বিএলও-র কাজের সহকারী হিসেবেও শিক্ষকদের নেওয়ার কথা বলায় পঠনপাঠনের দশা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে শিক্ষকদের আশঙ্কা।

শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী জানান, কত সংখ্যক শিক্ষক বিএলও-র কাজে যাচ্ছেন তার একটা হিসাব তাঁরা করেছেন। কিঙ্করের দাবি, “রাজ্য জুড়ে ৮০ হাজার বুথ রয়েছে। নির্বাচন কমিশন বলেছে আরও ১৪ হাজার বাড়তে পারে। সব মিলিয়ে ৯৪ হাজার বুথ। এই ৯৪ হাজার বুথে ৯০ শতাংশ শিক্ষককে বিএলও-র কাজে নেওয়া হলে ৮১-৮২ হাজারের মতো শিক্ষকই বিএলও-র কাজে যুক্ত থাকছেন। তা হলে স্কুলে পড়াশোনা হবে কী ভাবে?” শিক্ষার অধিকার আইন মেনে চলার স্বার্থে বিএলও-র কাজের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে স্থায়ী কর্মী রাখার আর্জি জানাচ্ছেন কিঙ্কর।

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, পড়ুয়াদের পড়ার ক্ষতি রুখতে তারা ইউটিউব চ্যানেলে আরও বেশি করে বিভিন্ন বিষয়ের ক্লাসের ভিডিয়ো আপলোড করবে। সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “স্কুলে চতুর্থ সিমেস্টারের ক্লাস শুরুর আগে থেকেই আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে বিভিন্ন বিষয়ে ক্লাস শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত ক্লাস কী ভাবে কখন নেওয়া হবে, সেই নিয়ে পরিকল্পনা চলছে।” কিন্তু শিক্ষক এবং পড়ুয়াদের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত সমস্ত বিষয়ের ভিডিয়ো আপলোড নিয়মিত ভাবে হচ্ছে না। তাঁদের অনেকেরই প্রশ্ন, এই ক্লাসগুলি বিভিন্ন স্কুলের সহকারী শিক্ষকেরাই নেন। তাঁরাই যদি বিএলও-র কাজে চলে যান, তা হলে সংসদের ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিয়ো ক্লাসই বা আর কে নেবেন?

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BLO Government Schools

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy