Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
উত্তপ্ত পাড়ুই

সভায় যাওয়া নিয়ে ফের বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ

এক সভায় যাওয়া আর অন্য সভায় আসা তা নিয়েই গণ্ডগোল। শুক্রবার দুর্গাপুরে তৃণমূলের সভা ছিল। আজ, রবিবার কলকাতায় সভা বিজেপির। তারই মাঝে দু’দলের সংঘর্ষে ফের তেতে উঠল বীরভূমের পাড়ুই। যে গ্রামে কাণ্ডটা হল, মঙ্গলডিহি পঞ্চায়েতের সেই ছাতারবান্দি গ্রামের অবস্থানও রাজনৈতিক সংঘর্ষের জন্য সংবাদ শিরোনামে থাকা চৌমণ্ডলপুর আর মাখড়ার মাঝামাঝি।

পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এক বিজেপি কর্মীর রান্নাঘরের চাল। শনিবার পাড়ুইয়ের ছাতারবান্দি গ্রামে বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীর তোলা ছবি।

পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এক বিজেপি কর্মীর রান্নাঘরের চাল। শনিবার পাড়ুইয়ের ছাতারবান্দি গ্রামে বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীর তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাড়ুই শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৪ ০২:২৯
Share: Save:

এক সভায় যাওয়া আর অন্য সভায় আসা তা নিয়েই গণ্ডগোল। শুক্রবার দুর্গাপুরে তৃণমূলের সভা ছিল। আজ, রবিবার কলকাতায় সভা বিজেপির। তারই মাঝে দু’দলের সংঘর্ষে ফের তেতে উঠল বীরভূমের পাড়ুই। যে গ্রামে কাণ্ডটা হল, মঙ্গলডিহি পঞ্চায়েতের সেই ছাতারবান্দি গ্রামের অবস্থানও রাজনৈতিক সংঘর্ষের জন্য সংবাদ শিরোনামে থাকা চৌমণ্ডলপুর আর মাখড়ার মাঝামাঝি।

শুক্রবার গভীর রাতে ওই সংঘর্ষের পরে দু’দলই পরস্পরের বিরুদ্ধে বোমাবাজি, লুঠপাট এবং বাড়িতে চড়াও হয়ে কর্মী-সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ তুলেছে। দুই বিজেপি কর্মী এবং এক তৃণমূল কর্মী সামান্য জখম হয়েছেন। শনিবার দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে পাড়ুই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। এ দিন রাতেই পাড়ুইয়ের ইমাদপুরের কাছে রঘুনাথ মাল নামে এক বিজেপি কর্মীকে মারধর করার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডলের দাবি, “ওই কর্মী কলকাতার সভায় যাওয়ার গাড়ির ব্যবস্থা করছিলেন। তখন তৃণমূল কর্মীরা মারধর করে। জখম ওই কর্মীকে পুলিশ উদ্ধার করে সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি করেছে।”

বীরভূমের পুলিশ সুুপার অলোক রাজোরিয়া এ দিন বলেন, “রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। তদন্ত শুরু হয়েছে।” খবর পেয়ে শুক্রবার রাতেই পুলিশ ছাতারবান্দি গ্রামে গিয়েছিল। এ দিন দুপুরে সেখানে র্যাফও নামে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন হয়েছে।

গত পঞ্চায়েত ভোটে এই ছাতারবান্দির দু’টি সংসদই তৃণমূল পেয়েছে। পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কামরুল হকের বাড়িও সেখানে। তার পরেও লোকসভা ভোটের পর থেকে এলাকার হাওয়া ঘুরতে শুরু করে।

বর্তমানে বিজেপির দিকেই গ্রামের সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন রয়েছে। এমনকী, চৌমণ্ডলপুর ও মাখড়া-কাণ্ডের পরে, দুই গ্রামের আতঙ্কিত বহু বিজেপি কর্মীকে ছাতারবান্দিতেই আশ্রয় নিতে দেখা গিয়েছিল।

গ্রামে এ দিন দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, বিজেপি এবং তৃণমূলদু’পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতেই বোমার দাগ রয়েছে। কয়েকটি বাড়িতে পড়ে রয়েছে ভাঙা ইটের টুকরো। বিজেপি কর্মী নুর আলির বাড়ির সামনে রান্নাঘরের চালা পুড়ে ছাই। গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য মহুবা বেগমের অভিযোগ, বিজেপির দুষ্কৃতীরা তাঁর বাড়িতে লুঠপাট করেছে। উপপ্রধান কামরুল হকের পরিবারের দাবি, হামলায় এক আত্মীয়া জখম হন।

দুধকুমারের দাবি, “ওই গ্রাম থেকে রবিবার কলকাতার সভায় অনেকেই যাবেন। তা আটকাতেই তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়।” তাঁর সংযোজন: “আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেও ওরা আটকাতে পারবে না।”

অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী তথা বোলপুরের তৃণমূল বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহের অভিযোগ, “ওই এলাকায় সমাজবিরোধীদের কাজ লাগিয়ে অশান্তি জিইয়ে রেখেছে বিজেপি। আমাদের কর্মীরা শুক্রবার দুর্গাপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাওয়ার পর থেকে তারা হুমকি দিচ্ছিল। রাতে ওরা হামলা করে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE