Advertisement
E-Paper

দাপট কমলেও বর্ষণ চলবে এখানে-ওখানে

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস মঙ্গলবার জানান, বর্ষার এই মরসুমে উত্তরবঙ্গ থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত মৌসুমি অক্ষরেখা বিস্তৃত রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৭ ০৫:১৯
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

একটানা ধারাবর্ষণ বা জোরালো বৃষ্টি আপাতত আর নয়। তবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষার বৃষ্টি চলবে বিক্ষিপ্ত ভাবে। আবহাওয়ার মতিগতি খতিয়ে দেখে এমনটাই জানাচ্ছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের কর্তারা।

হাওয়া অফিসের ব্যাখ্যা, একটানা জোরদার বৃষ্টির জন্য ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপের প্রয়োজন হয়। এখন তেমন কোনও পরিস্থিতি সৃষ্টির ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না। যে-জোড়া ঘূর্ণাবর্ত চোখ রাঙাচ্ছিল, তারা ইতিমধ্যেই ক্ষমতা খুইয়েছে। আর তৃতীয় ঘূর্ণাবর্তটি দানা বাঁধতে চাইলেও তার চেষ্টা মোটেই স্থায়ী হয়নি। এতে দু’দিক থেকে স্বস্তির আশা আছে। প্রথমত, দুর্যোগের আশঙ্কা তেমন নেই। দ্বিতীয়ত, কমবেশি বৃষ্টি চললে চাষের কাজ চালাতে সুবিধেই হবে।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস মঙ্গলবার জানান, বর্ষার এই মরসুমে উত্তরবঙ্গ থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত মৌসুমি অক্ষরেখা বিস্তৃত রয়েছে। তার ফলে বিভিন্ন এলাকায় বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হতেই থাকবে। তা থেকেই বৃষ্টি হতে পারে। বিক্ষিপ্ত ভাবে। এই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির চরিত্র কেমন? আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, এই বৃষ্টি বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে হয় না। যখন যে-এলাকার উপরে মেঘ তৈরি হবে, বৃষ্টি হবে সেখানেই। অর্থাৎ দমদমে বৃষ্টি নামলে ধর্মতলা বা টালিগঞ্জ শুকনো থাকতেই পারে।

আবহবিদদের একাংশের মতে, সাধারণ ভাবে এটাই বর্ষার চরিত্র। যখন ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ তাকে শক্তি জোগায়, তখনই সে বিস্তীর্ণ এলাকা ভাসায়। নইলে এখানে-ওখানে বিক্ষিপ্ত বর্ষণ। অনেকের প্রশ্ন, তা হলে কি আপাতত তেমন বৃষ্টি হবে না? ‘‘হয়তো একটানা, জোরালো বৃষ্টি হবে না। তবে বিভিন্ন এলাকায় মোটামুটি নিয়মিত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে,’’ বলছেন গণেশবাবু।

সম্প্রতি একটি গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে দু’তিন দিন প্রবল বৃষ্টি হয় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডে। তার ফলে গাঙ্গেয় বঙ্গের একাধিক জেলার বানভাসি দশা এখনও কাটেনি। দিন দুয়েক আগে বঙ্গোপসাগরের উপরে দু’টি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ায় ফের প্রবল বর্ষণের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তবে উপগ্রহ-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদেরা জানান, সেই জোড়া ঘূর্ণাবর্ত দুর্বল হয়ে গিয়েছে। সোমবার সাগরের উপরে আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত দানা বাঁধলেও তা স্থায়ী হয়নি।

হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, মৌসুমি অক্ষরেখা উত্তরবঙ্গের দিকে সরে যাচ্ছে। তার ফলে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষার জোর ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। সাগর থেকে আসা জোলো হাওয়ার জোগান ইতিমধ্যেই কমেছে। আকাশে মেঘ কমে যাওয়ায় দিনের তাপমাত্রাও কিছুটা বাড়তে পারে। বর্ষার এই মাঝপর্বে বিভিন্ন এলাকার উপরে স্থানীয় ভাবে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়। সেগুলি থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখছেন আবহবিদেরা।

এ বছর জুনে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঝিমিয়ে ছিল। ফলে বর্ষার খাতায় ঘাটতি তৈরি হয়েছিল। জুলাই শেষে জোরালো বৃষ্টিতে ঘাটতি মিটে বর্ষণ উদ্বৃত্ত হয়েছে। এ বার বর্ষা কিছুটা ঝিমিয়ে পড়লে হিসেবের খাতায় ফের রদবদল হতে পারে। তবে তাতে মারাত্মক ঘাটতি তৈরি হবে না বলেই মনে করছেন আবহবিদেরা। তাঁদের ব্যাখ্যা, বর্ষায় বর্ষণের রেখচিত্র এক ভাবে চলে না। এক বার জোরালো পর্ব আসে, তার পরে কিছু দিন ঝিমিয়ে থাকে। আবার ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপের হাত ধরে গা-ঝাড়া দেয় মৌসুমি বায়ু। চলতি মরসুমে জুলাইয়ের জোরালো পর্ব মিটে যাওয়ার পরে ফের গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষা কবে ফের গা-ঝাড়া দিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় সেটাই দেখার।

Alipur weather office Rain আলিপুর হাওয়া অফিস
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy