Advertisement
E-Paper

মন্ত্রীর গাড়িতে হামলা, জালে গ্রামীণ পুলিশ

মোটরবাইক নিয়ে রাজ্যের এক মন্ত্রীর গাড়ির পিছু ধাওয়া করে হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হলেন তিন জন। ধৃতদের এক জন আবার গ্রামীণ (ভিলেজ) পুলিশ!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:২৯
এই গাড়িতেই ছিলেন মন্ত্রী। — নিজস্ব চিত্র।

এই গাড়িতেই ছিলেন মন্ত্রী। — নিজস্ব চিত্র।

মোটরবাইক নিয়ে রাজ্যের এক মন্ত্রীর গাড়ির পিছু ধাওয়া করে হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হলেন তিন জন। ধৃতদের এক জন আবার গ্রামীণ (ভিলেজ) পুলিশ!

অষ্টমীর (রবিবার) রাতে সপরিবার রেস্তোরাঁয় গিয়ে কয়েক জন মদ্যপ যুবকের ‘অভব্যতা’র মুখে পড়েন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা। প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁদের সঙ্গে বচসায় জড়ান মন্ত্রীর দেহরক্ষী। ওই ঘটনার জেরে ধাওয়া করে মন্ত্রীর গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল হামলাকারীদের বিরুদ্ধে। একাদশীর দিন, বুধবার ওই ঘটনায় জয়পুর থানার গ্রামীণ পুলিশ অর্পিত মণ্ডল এবং জয়পুরের আরও দুই বাসিন্দা—অনুপ মুখোপাধ্যায় ও বাপন দে-কে গ্রেফতার করা হয়। অর্পণের বাড়ি জয়পুরের হাতগেড়িয়ায়। অনুপ নবাসন এবং বাপন দে ফুটকড়া
গ্রামের বাসিন্দা।

বিষ্ণুপুর আদালতে এ দিন হাজির করানো হলে বিচারক ধৃতদের ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “তদন্ত চলছে। ভিলেজ পুলিশের ওই কর্মীর বিরুদ্ধে যা ব্যবস্থা নেওয়ার, নেওয়া হবে।”

কোতুলপুর কেন্দ্র থেকে বিধানসভা ভোটে জেতা পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শ্যামলবাবুর বাড়ি জয়পুরের ডিহা গ্রামে। তিনি জানান, অষ্টমীর রাতে পরিবারের লোকজনদের নিয়ে জয়পুরের একটি রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে এক জন দেহরক্ষী ছিলেন। পাইলট কারে ছিলেন পাঁচ পুলিশকর্মী। রেস্তোরাঁয় সেই সময় ঠাসা ভিড় ছিল। তাই রেস্তোরাঁর সামনে খোলা আকাশের নীচে চেয়ারে পরিবারের লোকজনদের নিয়ে বসেছিলেন তিনি। সেই সময় আঠাশ থেকে তিরিশ বছরের জনা পাঁচেক যুবক নিজেদের মধ্যে বচসা শুরু করে। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘মদ্যপ ছেলেগুলো চিৎকার করে একে-অন্যকে গালাগাল দিচ্ছিল। বাড়ির লোকেদের সামনে ওই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ি।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্ত্রীর দেহরক্ষী ওই যুবকদের থামাতে গেলে তারা আরও চিৎকার জুড়ে দেয়। পাইলট কারের পুলিশকর্মীরা এগিয়ে গিয়ে তখনকার মতো পরিস্থিতি সামলে দেন। রেস্তোরাঁয় ঢুকে যান মন্ত্রী। খাওয়াদাওয়া সেরে রাত ১০টা নাগাদ শ্যামলবাবু বাড়ির দিকে রওনা দেন। মন্ত্রীর অভিযোগ, তাঁর বাড়ি থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে কুম্ভস্থল মোড়ের কাছে তাঁর গাড়িতে হামলা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘রেস্তোরাঁ ছে়ড়ে একটু এগোতেই খেয়াল করি, কিছু মোটরবাইকে রেস্তোরাঁয় গোলমাল পাকানো ছেলেগুলো পিছনে আসছে। তখন পাত্তা দিইনি। কিন্তু কুম্ভস্থল মোড়ের কাছে মোটরবাইকের গতি বাড়িয়ে ওরা খুব কাছ থেকে আমার গাড়ির পিছনের কাচে পাথর ছুড়ে মারে। পাইলট কারের পুলিশকর্মীরা গাড়ি ঘোরানোর আগেই ওরা পালায়।’’

পাথর বা ভাঙা কাচের আঘাতে কেউ চোট না পেলেও ঘটনার কথা সঙ্গে সঙ্গে জয়পুর থানাকে জানান শ্যামলবাবু। সোমবার তিনি জয়পুর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় যুবকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বহু থানাতেই গ্রামীণ পুলিশকর্মীরা রয়েছেন। তাঁরা ‘সিভিক ভলান্টিয়ার’দের মতো অস্থায়ী নন। প্রত্যেক গ্রামীণ পুলিশের নির্দিষ্ট এলাকা রয়েছে। সেখানে ঘটনা ঘটলেই তাঁরা সংশ্লিষ্ট থানায় খবর দেন। গ্রামীণ পুলিশ হিসেবে জয়পুর থানায় দীর্ঘদিন কাজ করছেন অর্পণ। এর আগে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠতে শোনা যায়নি।

আদালতে হাজির করানোর সময় এ দিন ধৃতদের কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তাঁরা মন্তব্য করেননি। তবে তাঁদের আইনজীবী অঞ্জন গড়াই দাবি করেন, ‘‘ওঁদের ফাঁসানো হয়েছে।’’

allegation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy