E-Paper

খবর পেয়েও না যাওয়ার নালিশ কি সত্য, তদন্ত

ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় শমসেরগঞ্জে হিংসা এবং বিনা বাধায় কয়েক ঘণ্টা ধরে গ্রামের পর গ্রাম লুট এবং হত্যার পিছনে পুলিশের গাফিলতি এবং রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন আক্রান্ত গ্রামবাসীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:২৫

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জের গোলমালে পুলিশি গাফিলতি ও ব্যর্থতার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। রাজ্য পুলিশের শীর্ষ মহল থেকে জানানো হয়েছে, এলাকায় থমথমে ভাব কেটে গেলেই এ বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান করা হবে। ইতিমধ্যে শমসেরগঞ্জ এবং সুতি থানার ওসি-দের সরিয়ে দু’জন আইসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, পরিস্থিতি পুরো স্বাভাবিক হয়ে গেলে ওই দুই থানার খোলনলচেই বদলে ফেলা হতে পারে। তবে এ বিষয়ে কোনও পুলিশকর্তাই বিশদে কিছু বলতে চাননি।

ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় শমসেরগঞ্জে হিংসা এবং বিনা বাধায় কয়েক ঘণ্টা ধরে গ্রামের পর গ্রাম লুট এবং হত্যার পিছনে পুলিশের গাফিলতি এবং রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন আক্রান্ত গ্রামবাসীরা। তাঁরা একাধিক বার অভিযোগ করেছেন, ১২ এপ্রিল সকাল ৯টার পর থেকে বারবার পুলিশকে ফোন করা হলেও স্থানীয় থানা তাতে কর্ণপাত করেনি। তার জেরেই কার্যত বিনা বাধায় দুষ্কৃতীরা কয়েক ঘণ্টা ধরে পাঁচটি গ্রামের কয়েকশো বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ। পুলিশের ওই ব্যর্থতা এবং খবর পাওয়ার পরেও ঘটনাস্থলে না যাওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তা এ বার খতিয়ে দেখতে চাইছেন বিভাগের কর্তারা।

গত ৮ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের সুতি, ধুলিয়ান, শমসেরগঞ্জের মতো এলাকায় অশান্তির ঘটনা শুরু হয়। ১১ এপ্রিল যা বড় আকার ধারণ করে। ওই দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী নামিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হলেও পরের দিন সকালে শমসেরগঞ্জের বেতবোনা, জাফরাবাদের মতো গ্রামে ঢুকে নির্বিচারে অত্যাচার চালায় একদল দুষ্কৃতী। ওই দিন জাফরাবাদে খুন হন বাবা ও ছেলে। অভিযোগ, ছেলে সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে বেঁচে যেতেন। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই যুবকের মৃত্যুর পিছনে রয়েছে তাঁর দেহের ক্ষত থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশ যদি সঠিক সময়ে চলে আসত, তা হলে তাঁকে বাঁচানো যেত। কিন্তু পুলিশকে বারবার ফোন করা হলেও তারা ঘটনার প্রায় তিন ঘণ্টা পরে ওই গ্রামে পৌঁছেছে।

পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, ১২ এপ্রিল ঘটনার সময় শমসেরগঞ্জে তিন কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল। এ ছাড়া বিরাট পুলিশ বাহিনী সিনিয়র পুলিশকর্তাদের সঙ্গে সেখানে ছিল। তা হলে পুলিশ কেন সেখানে গেল না? অভিযোগ, ওই বাহিনীর বেশির ভাগই বাইরের থেকে গিয়েছে। ফলে তাঁদের পক্ষে স্থানীয় পুলিশকর্মীদের পক্ষ থেকে খবর না দিলে পাওয়া সম্ভব ছিল না। এখানেই স্থানীয় পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে, তাঁরা খবর পেয়েও ঘটনাস্থলে যেতে গড়িমসি করেছেন। পরে যখন বাহিনী সেখানে পৌঁছেছে, তত ক্ষণে দুষ্কৃতীরা হামলা শেষ করে খুন করে ফিরে গিয়েছে। যদিও সেখানে থাকা বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী প্রশ্ন তুলেছেন, এত বড় ঘটনা এক লহমায় হয় না। বিশেষ করে গ্রামের পর গ্রাম বোমাবাজি কিংবা খুনের ঘটনা পরিকল্পনা করেই করা হয়েছে। আর তা যদি হয়, তা হলে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তা জানতে পারল না কেন?

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Murshidabad police Unrest Situation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy