স্কুলগাড়িতে পড়ুয়াদের পাঠানোর সময়ে গাড়ির চালকদের পাশাপাশি সচেতন হতে হবে অভিভাবকদেরও। তাঁদের খোঁজ নিতে হবে, ওই গাড়ি স্কুলগাড়ি হিসেবে চালানোর প্রয়োজনীয় অনুমোদন রয়েছে কিনা। কিন্তু এই বিষয়ে অভিভাবকেরা কি আদৌ সচেতন? বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে তাই একটি শিবিরের আয়োজন করেছিল শহরের একটি পুলকার সংগঠন। পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন নামে ওই সংগঠন কলকাতা পুলিশের সহযোগিতায় শহরের বিভিন্ন স্কুলের সামনে এই শিবির করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে।
শুক্রবার দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলের সামনে ওই শিবিরে বলা হয়েছে, স্কুলগাড়ির নম্বরপ্লেটের রং হলুদ কিনা, তা দেখতে হবে। অনেক সাদা নম্বরপ্লেটের গাড়িও স্কুলগাড়ি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। কিন্তু সেগুলি কোনও ভাবেই স্কুলগাড়ি হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দেয়নি কলকাতা পুলিশ ও মোটর ভেহিক্লস দফতর। তাই ওই সংগঠনের পরামর্শ, যে সব গাড়ি স্কুলগাড়ি হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তার জন্য তাদের প্রয়োজনীয় অনুমতি আছে কিনা, তা অভিভাবকদের দেখে নেওয়া দরকার। চালকের ন্যূনতম পাঁচ বছর গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা আছে কিনা, তা-ও খোঁজ নেওয়া প্রয়োজন। গাড়ির টায়ার থেকে শুরু করে ওয়াইপার-সহ অন্য যন্ত্রাংশ ঠিক আছে কিনা, তারও খোঁজখবর করা দরকারি। স্কুলগাড়িতে ১৭ থেকে ২৭ জনের বসার ব্যবস্থা থাকলে, গাড়িতে পড়ুয়াদের দেখাশোনা করার জন্যে কারও থাকা দরকার। গাড়ি স্কুলে আসার পরে বাচ্চাদের নামানো এবং ছুটির পরে গাড়িতে তোলার সময়ে ওই স্কুলগাড়ির পক্ষ থেকে মহিলা কারও থাকার কথা।
কিন্তু এ দিনের শিবিরে দেখা যায়, অনেক অভিভাবকই এ সব বিষয়ে তেমন সচেতন নন। ওই সংগঠনের সম্পাদক সুদীপ দত্ত বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা ঘটলে চালকদের যেমন দায় থাকে, তেমন অভিভাবকদেরও দায়িত্ব থেকে যায়। দুর্ভাগ্যক্রমে দেখা যায়, অনেক অভিভাবক স্কুলগাড়ি বাছাইয়ের সময়ে কম ভাড়ার দিকেই নজর দেন। ওই গাড়ির বৈধতা, পরিকাঠামো ঠিক আছে কিনা, তা আগে দেখা দরকার।’’ তিনি আরও জানান, এখন স্কুলগাড়িতে ‘ভেহিক্ল লোকেশন ট্র্যাক ডিভাইস’ থাকা বাধ্যতামূলক। তার মাধ্যমে অভিভাবক গাড়িটির গতি, অবস্থান মোবাইল অ্যাপে দেখতে পাবেন।
শিবিরে অংশগ্রহণকারী অভিভাবকেরা অনেকে জানান, শহরের বেশির ভাগ স্কুলেরই নিজস্ব গাড়ি নেই। ফলে বিভিন্ন সংস্থার স্কুলগাড়ির উপরেই তাঁদের নির্ভর করতে হয়। সব নিয়ম মেনে চলা গাড়ি যে হেতু সব সময়ে পাওয়া যায় না, তাই তাদের জেনেশুনেই আপস করতে হয়। তবে এমন শিবির বার বার হওয়া দরকার বলে মনে করেন অভিভাবকেরা। এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘স্কুলগাড়ির যে যে নিয়ম মেনে চলা উচিত, তার অনেকগুলোই জানতাম না। আমার বাচ্চার স্কুলগাড়িতে এগুলো আছে কিনা, সে বিষয়ে খোঁজ নেব।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)