বিপদের নাম গোপন খরচ। তার হাত থেকে মুক্তি না হলে মানুষের ক্ষোভ নিরসন হবে না, নিশ্চিত করা যাবে না চিকিৎসকদের নিরাপত্তাও।
‘ডক্টর সুব্রত মৈত্র স্মারক বক্তৃতা ২০১৭’র অনুষ্ঠানে শনিবার এ কথাটার উপরেই সবচেয়ে বেশি জোর দিলেন এ বারের বক্তা হৃদশল্য চিকিৎসক কুণাল সরকার।
এ রাজ্যে সম্প্রতি যে ভাবে একের পর এক চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্মীদের হেনস্থা হতে হয়েছে, সে প্রসঙ্গে কুণালবাবুর বক্তব্য, ‘‘চিকিৎসকদের অবস্থা এখন খাদ্য সংকটের সময় চালের গুদাম পাহারাদারের মতো হয়েছে। চারপাশে সাধারণ মানুষ অনেক সুযোগ সুবিধার কথা শুনতে পাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে সেটা হচ্ছে না। সেই ক্ষোভ গিয়ে পড়ছে চিকিৎসকদের উপরে।’’
শনিবার রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচারে ‘মেডিক্যাল কন্সর্টিয়াম অব ডক্টর সুব্রত মৈত্র’ এবং একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের যৌথ প্রচেষ্টায় এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উঠে বর্তমানে স্বাস্থ্যব্যবস্থার সমস্যার নানান দিক।
কুণালবাবু বলেন, পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটিয়ে চিকিৎসা খাতে ‘গোপন খরচ’ না কমালে পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব নয়। সরকার একাধিক প্রকল্প চালু করছে, বিনামূল্যে পরিষেবার কথাও ঘোষণা হচ্ছে, কিন্তু বাস্তব ছবিটা অনেকাংশে অন্য রকম। আবার বেসরকারি ক্ষেত্রেও বিজ্ঞাপনের ভাষ্য আর বাস্তব অভিজ্ঞতার মধ্যে ফারাক থেকে যাচ্ছে। যার জেরেই মানুষ ছোট ঘটনাতেও চিকিৎসকের উপরে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। বারবার চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা ঘটছে।
কুণালবাবু মনে করিয়ে দেন, গত দু’বছরে এ দেশে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ব্যয়ের পরিমাণ কমেছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতি হয়েছে, কিন্তু সেই অনুপাতে পরিকাঠামোগত উন্নতি ঘটেনি। স্পেনের স্বাস্থ্য প্রকল্পের উদাহরণ টেনে তিনি প্রস্তাব করেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে যুক্ত করা যেতে পারে। তবে তাঁর মতে, এ বিষয়ে সরকারের পর্যাপ্ত পরিকল্পনা জরুরি।
এ দিন প্রয়াত চিকিৎসক সুব্রত মৈত্র সম্পর্কে চিকিৎসক কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই পেশার দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল সেবা। সেই দায়বদ্ধতা সুব্রত মৈত্রের থেকে শেখার মতো।’’ অধ্যাপিকা মমতা রায় বলেন, ‘‘শুধুই চিকিৎসক নয়, নাগরিক হিসেবে সমাজকে সুস্থ রাখার দায়িত্ববোধ ছিল চিকিৎসক মৈত্রের মধ্যে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy