E-Paper

বিএলও-র দেহ উদ্ধার, ফের বিতর্ক ‘দায়’ নিয়ে

বাঁকুড়ার রানিবাঁধের রাজাকাটা মাঝপাড়া প্রাথমিক স্কুলের শ্রেণিকক্ষ থেকে এ দিন দুপুরে ওই স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক হারাধনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। তিনি স্থানীয় ২০৬ নম্বর বুথের বিএলও ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, দেহের পাশেই স্কুলের হাজিরা খাতার মধ্যে ছিল ‘সুইসাইড নোট’।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:২২

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) শুনানি-পর্ব শুরু হয়েছে শনিবার। আর রবিবার সকালেই ‘কাজের চাপে’ আরও এক বুথ লেভল অফিসারের (বিএলও) আত্মঘাতী হওয়ার অভিযোগ উঠল। হারাধন মণ্ডল (৫২) নামে বাঁকুড়ার ওই বিএলও-র ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ সূত্রে দাবি, বিএলও-র সুইসাইড নোটে লেখা আছে, ‘আমি আর চাপ নিতে পারছি না।’ এই প্রেক্ষিতেই রবিবার বিজেপি ও কমিশনকে নিশানা করে এসআইআর যে ভাবে হচ্ছে, তা নিয়ে ফের সরব হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পক্ষান্তরে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের বিরুদ্ধেই পাল্টা এসআইআর নিয়ে আতঙ্কে থাকার দাবি করেছেন।

বাঁকুড়ার রানিবাঁধের রাজাকাটা মাঝপাড়া প্রাথমিক স্কুলের শ্রেণিকক্ষ থেকে এ দিন দুপুরে ওই স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক হারাধনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। তিনি স্থানীয় ২০৬ নম্বর বুথের বিএলও ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, দেহের পাশেই স্কুলের হাজিরা খাতার মধ্যে ছিল ‘সুইসাইড নোট’। তাতে ‘চাপ নিতে না-পারা’র পাশাপাশি এসআইআর সংক্রান্ত কাজে ভুলভ্রান্তির আশঙ্কার ইঙ্গিতও রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। মৃতের পরিবারের দাবি, সুইসাইড নোটে হাতের লেখা হারাধনের। হারাধনের উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবিটিসের সমস্যা ছিল জানিয়ে তাঁর স্ত্রী মালার অভিযোগ, “আজ এক নিয়ম বলে কাল আবার তা বদলানো হচ্ছে। কী ভাবে কাজ করতে হবে, তা-ও ভাল করে শেখানো হয়নি। দিনরাত ফোন ধরে অস্থির হয়ে উঠেছিলেন উনি।” বাঁকুড়ার জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, বিএলও-প্রশিক্ষণ ঠিক ভাবে হয়নি, এই কথা ঠিক নয়। প্রসঙ্গত, এসআইআর-প্রক্রিয়া শুরুর পরে থেকে রাজ্যে এই নিয়ে মোট ৫ জন বিএলও-র অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। সব ক্ষেত্রেই এসআইআর-চাপের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন মৃতের পরিজনেরা।

ঘটনার পরেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বলেছেন, “তাড়াহুড়ো করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে হওয়া এসআইআর-প্রক্রিয়ার অমানবিক চাপ সইতে না-পেরে আরও এক জন বিএলও আত্মঘাতী হয়েছেন। বিজেপির নির্বাচনী স্বার্থে পরিকল্পিত ভোটার-শুদ্ধিকরণ অভিযানের ফলে আতঙ্ক, উদ্বেগে ৫০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে। কমিশন একটি দলের কাছে মেরুদণ্ড ঝুঁকিয়েছে।” স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডিও হারাধনের মৃত্যুর জন্য এসআইআর-চাপকেই দায়ী করেছেন।

তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা সরব হয়েছে বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর দাবি, “যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। কিন্তু হৃদ্‌রোগে, সাপের ছোবলে, খাট থেকে পড়ে মারা গেলেও তৃণমূল এসআইআর-এর ভূত দেখছে। কারণ, তৃণমূল আতঙ্কে আছে।” বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যেরও বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গে যত মৃত্যু হচ্ছে, তার জন্য তৃণমূল কর্মীরা তৃণমূলকেই দায়ী করছেন! এসআইআর সারা দেশে হচ্ছে। বিহারে এসআইআর হয়েছে, কী ফল হয়েছে সবাই জানে।”

এরই মধ্যে শনিবার রাতে হাওড়ার মন্দিরবাজারের রামভদ্রপুরে পরিমল সর্দার নামে বিজেপির এক বুথ লেভল এজেন্ট (বিএলএ-২) ও তাঁর স্ত্রী’কে লোহার রড দিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল বিধায়ক জয়দেব হালদারের ভাই বাসুদেব ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। গুরুতর জখম পরিমল সর্দার ও তাঁর স্ত্রী ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তৃণমূল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Special Intensive Revision BLO Death Death Case

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy