E-Paper

‘পুলিশ ছাড়া আর কাউকে দিইনি’, মেডিক্যাল সার্টিফিকেট ফাঁস নিয়ে দলের কাছে ক্ষোভ অনুব্রতের

বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারের সঙ্গে কেষ্টর কথোপকথনের ‘অডিয়ো ক্লিপ’ সমাজমাধ্যমে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তোলপাড় শুরু হয়। কেষ্টর বিরুদ্ধে মামলা করে তাঁকে হাজিরার জন্য দু’টি নোটিস দেয় পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৫ ০৭:৪২
অনুব্রত মণ্ডল।

অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।

বোলপুর থানার আইসি-কে হুমকি ও গালিগালাজের অডিয়ো নিয়ে বিতর্কে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডল। তবে সেই অডিয়ো সমাজমাধ্যমে ফাঁসের পিছনে ‘চক্রান্ত’ রয়েছে কি না, সে প্রশ্ন তুলেছেন। অনুগামীদের দাবি, পুলিশকে দেওয়া তাঁর ‘মেডিক্যাল সার্টিফিকেট’ সমাজমাধ্যমে ছড়ানো নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে ক্ষোভ জানিয়েছেন কেষ্ট। অনুব্রতের কথায়, ‘‘এটা পুলিশই ভাল বলতে পারবে। কারণ, পুলিশ ছাড়া মেডিক্যাল সার্টিফিকেট আর কাউকে দিইনি।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি এই মুহূর্তে তদন্তাধীন। তদন্ত শেষে, সবজানা যাবে।”

বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারের সঙ্গে কেষ্টর কথোপকথনের ‘অডিয়ো ক্লিপ’ সমাজমাধ্যমে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তোলপাড় শুরু হয়। কেষ্টর বিরুদ্ধে মামলা করে তাঁকে হাজিরার জন্য দু’টি নোটিস দেয় পুলিশ। তবে অনুব্রতের আইনজীবীরা তদন্তকারীদের জানান, অনুব্রত অসুস্থ। চিকিৎসক তাকে পাঁচ দিনের ‘বেড রেস্ট’ নিতে বলেছেন। তার পরে হাজিরা দেন তিনি।

ঘনিষ্ঠদের দাবি, পুলিশকে ইমেল করে ও আইনজীবীদের মাধ্যমে মুখবন্ধ খামে পুলিশকে অনুব্রতের ‘মেডিক্যাল সার্টিফিকেট’ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সূত্রের দাবি, ওই সার্টিফিকেটে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের যে চিকিৎসকের সই রয়েছে, একই নামে বীরভূমের একটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রশাসনিক পদে কর্মরত এক চিকিৎসক রয়েছেন। প্রশাসনিক পদে থাকা ডাক্তারের পক্ষে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে রোগী দেখা সম্ভব কি না, তা নিয়ে বিতর্ক বাধে। সে সূত্রেই অনুগামীদের প্রশ্ন, “দাদার মেডিক্যাল রিপোর্ট বাইরে এল কী ভাবে!”

সূত্রের দাবি, কয়েক জন অনুব্রত-অনুগামী পুলিশ আধিকারিকদের কাছে সে ব্যাপারে জানতে চান। কিন্তু পুলিশ তাঁদের ‘সদুত্তর’ দিতে পারেনি। এই পরিস্থিতির পিছনে দলের অন্দরে বিরোধী গোষ্ঠীর কারও যোগাযোগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি কেষ্ট-ঘনিষ্ঠেরা। কেষ্ট পুরো বিষয়টি ফোনে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানান। আগামী শনিবার, কলকাতায় কালীঘাটে দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশে বৈঠকে আসার কথা কেষ্ট-সহ বীরভূম তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্যদের। তার আগে কেষ্টর এই ক্ষোভ নিয়ে দলের অন্দরে চর্চা শুরু হয়েছে। বীরভূমের পুলিশ সুপার আমনদীপের সঙ্গে এ দিন ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি মোবাইল-বার্তারও।

এ দিকে, বীরভূম জেলা তৃণমূলে কেষ্ট ও তাঁর বিরোধী শিবিরের দ্বন্দ্বও অব্যাহত। এ দিন সকালে কেষ্ট-বিরোধী গোষ্ঠীর এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সিউড়ি ২ ব্লকের কেন্দুয়ার দেশালপুরে। দুপুরে নানুরের হারমুড় গ্রামে দু’জন ও বাসাপাড়ায় এক কেষ্ট-অনুগামীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে দলের অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এমন ঘটনা কাঙ্ক্ষিত নয়। প্রয়োজনে, দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলব।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Anubrata Mondal TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy