Advertisement
০২ জুন ২০২৪

বুথপিছু ৭০০ লিড চাই, ওয়ার্নিং দিলেন অনুব্রত

ইলামবাজার ব্লকে ১৩৭টি বুথ রয়েছে। তৃণমূল সূত্রেই খবর, এখানকার সাতটি বুথে হেরে রয়েছে দল। সেই আসনগুলিতে জয় তো বটেই, শুধু ইলামবাজার ব্লক থেকে ৭০ হাজার ভোটের লিড চান বলে জানিয়ে দিয়েছেন অনুব্রত।

প্রচার: ইলামবাজারে জনসভায় অনুব্রত মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

প্রচার: ইলামবাজারে জনসভায় অনুব্রত মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

বাসুদেব ঘোষ 
ইলামবাজার শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৫৭
Share: Save:

বুথ-পিছু ৭০০ ভোট। লোকসভা ভোটে শুধু ইলামবাজার থেকেই কত ভোটে দলকে জেতাতে হবে, সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে সেই লক্ষ্য বেঁধে দিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। রবিবারের ওই প্রকাশ্য সভা থেকে ইলামবাজার ব্লক তৃণমূলের নেতা দুলাল রায়ের ‘একের বদলে এগারোটা বোমা মারার’ হুঁশিয়ারি ঘিরেও নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।

ইলামবাজার ব্লকে ১৩৭টি বুথ রয়েছে। তৃণমূল সূত্রেই খবর, এখানকার সাতটি বুথে হেরে রয়েছে দল। সেই আসনগুলিতে জয় তো বটেই, শুধু ইলামবাজার ব্লক থেকে ৭০ হাজার ভোটের লিড চান বলে জানিয়ে দিয়েছেন অনুব্রত। জেলা তৃণমূলের সভাপতির এমন ঘোষণায় লোকসভাতেও গা-জোয়ারি ভোটের সম্ভাবনা দেখতে শুরু করেছেন বাম-বিজেপির নেতারা। অনেকের আবার মনে পড়েছে পঞ্চায়েত বা গত পুরভোটের স্মৃতি।

আরও পড়ুন: নেতাজি না মোদী, আগে কে? ‘মন কি বাত’ নিয়ে বিস্মিত অনেকেই

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম বলেন, ‘‘আসলে এদের চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি। ভোট পাওয়া নয়। আগামী নির্বাচনে দখল করার রাজনীতির কথাই এখন থেকে বলতে শুরু করে দিয়েছেন। অবাধ, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কতটা হবে, সেই নিয়ে আমরা আশঙ্কায় রয়েছি।’’ বিজেপি জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘ওরা ভয় পেয়েছে বলেই চমকাচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলার পুলিশ দিয়ে ভোট হয়েছে। কিন্তু, লোকসভা নির্বাচন তা হবে না। তবে, আমাদের বিশ্বাস লোকসভা নির্বাচনে নিজের ভোট মানুষ

নিজেই দেবেন।’’

ইলামবাজারের সভামঞ্চে ব্লক তৃণমূলের নেতা দুলাল রায়ের হুঁশিয়ারি ঘিরে এ দিন চর্চা ছিল সর্বত্রই। সভায় তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘কেউ যদি একটা বোম মারে, তা হলে একের পিঠে আর এক অর্থাৎ ১১টা বোম মারুন। আমাদের বিকল্প নেই। ভয়ের কোনও কারণ নেই। আপনাদের পাশে আমরা আছি। ইলামবাজারের সব ভোট তৃণমূলের বাক্সেই পড়বে।’’ এই বক্তব্য ঘিরেও বিরোধীরা আতঙ্কিত। এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী মৎস্য মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, অনুব্রত মণ্ডল সহ একাধিক নেতৃত্ব।

জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে এ বার অভিযোগের শেষ ছিল না। জেলার ১৬৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে হাতেগোনা ক’টা আসনে ভোট হয়েছিল। মনোনয়ন পর্বেও রক্ত ঝরেছিল জেলায়। সিউড়িতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন এক জনের প্রাণ গিয়েছিল।

এ দিন অনুব্রত বলেন, ‘‘আমি বলতে চেয়েছি, মানুষ যদি অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে থাকেন, তবুও যেন বিছানা থেকে উঠে গিয়ে ভোটটা দিয়ে আসেন।’’ মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বের সমালোচনা করেন। সাত বছরে রাজ্য সরকার কী কী কাজ করেছে, তার খতিয়ানও তুলে ধরেন সভামঞ্চে। এ দিনও প্রধানদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘কোন মানুষ যদি পঞ্চায়েত অফিস যায়, তাকে সম্মান করবেন। যদি কোনও মেম্বার ভাবে বাড়ি তৈরির টাকা নেবো, তাকে আমি ছেড়ে কথা বলবো না। থানায় ভরে দেব। মানুষকে পরিষেবা দিন। মানুষের পাশে থাকুন।’’

এ দিন মঞ্চ থেকে ইলামবাজার ব্লকে ১০টি সোলার ও একটি জরুরি রাস্তা দেওয়ার জন্য জেলা সভাধিপতিকে বলেন অনুব্রত। ইলামবাজার ব্লক কমিটির পক্ষ থেকে রুপোর পাঁচনও তুলে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Anubrata Mondal Lok Sabha Election 2019 TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE