Advertisement
E-Paper

উৎকর্ষের চিহ্ন, রাজ্যের গর্ব: সরব সুরঞ্জনও

যাদবপুর-প্রেসিডেন্সি কিছুদিন বন্ধ করে দেওয়া উচিত কি না, সেই বিতর্কে প্রেসিডেন্সির উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়ার বক্তব্যের সঙ্গে মিলে গেল যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের মতও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৬ ০৩:১৭

যাদবপুর-প্রেসিডেন্সি কিছুদিন বন্ধ করে দেওয়া উচিত কি না, সেই বিতর্কে প্রেসিডেন্সির উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়ার বক্তব্যের সঙ্গে মিলে গেল যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের মতও। আগের দিন প্রেসিডেন্সি যথেষ্ট ভাল চলছে বলে দাবি করেছিলেন অনুরাধা। বুধবার সুরঞ্জনও বললেন, কলকাতা, যাদবপুর এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্যের গর্ব। যাদবপুরের উৎকর্ষ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত। সুরঞ্জন মনে করান, ইতিহাসে এমন উদাহরণ বিরল যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রেখে সমস্যার সমাধান হয়েছে।

দিন কয়েক আগে যাদবপুর এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বলেছিলেন, যাদবপুর-প্রেসিডেন্সি ক্যাম্পাসে যে ধরনের অপসংস্কৃতি চলছে, তা বন্ধ করতে আমূল সংস্কার প্রয়োজন। দরকার হলে তিন বছর বন্ধ থাক দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়।

মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সির মেন্টর গ্রুপের বৈঠক শেষে অনুরাধা দেবী বলেছিলেন, ‘‘এত ভাল কাজ করছে প্রেসিডেন্সি, কেন তা বন্ধ হয়ে যাবে? প্রেসিডেন্সির অন্দরে এমন কোনও কাজ হয় না যা মাইকে বলা যাবে না।’’ এ দিন তিনি কার্যত পাশে পেয়ে গেলেন সুরঞ্জনবাবুকেও। বুধবার আনন্দবাজারকে সুরঞ্জনবাবু জানান, কলকাতা-যাদবপুর-প্রেসিডেন্সি এ রাজ্যের গর্ব। এখানকার পঠনপাঠনের মান নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। সুরঞ্জনের কথায়, ‘‘যদি যাদবপুরে উত্কর্ষের স্থান না থাকত তবে তা বিভিন্ন জাতীয় বা আন্তর্জাতিক স্তরে ঠাঁই পেত না। যাদবপুর উত্কর্ষের কেন্দ্র ছিল, আছে থাকবে। আগামী দিনে আমরা যে আরও এগিয়ে যাব তার সব চিহ্নই স্পষ্ট।’’

সুব্রতবাবুর মন্তব্য নিয়ে সরাসরি কিছু না বলেও সুরঞ্জনবাবু জানান, সবার যেমন মত প্রকাশের গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে, তেমনই একই বিষয়ে অন্য মত পোষণের অধিকারও সকলের থাকে। যে কোনও উচ্চমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই বিতর্ক হয়। কিন্তু কখনও অন্যের গণতান্ত্রিকতাকে আঘাত করে নিজের মত প্রকাশ করা যায় না। এবং সুরঞ্জনবাবু এ কথাও জোর দিয়ে বলেন যে, ‘‘অভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া কোনও কাজের কথা নয়। ইতিহাসে এমন উদাহরণ বিরল যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রেখে সমস্যার সমাধান হয়েছে।’’

মঙ্গলবার উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া প্রেসিডেন্সির হয়ে সওয়াল করেছিলেন। মেন্টর গ্রুপের চেয়ারম্যান, তৃণমূল সাংসদ সুগত বসুও প্রেসিডেন্সি ক্রমশ উন্নতি করছে বলেই মত দিয়েছিলেন। সুব্রতবাবুর কথার পরিপ্রেক্ষিতে সরাসরি কিছু না বলেও সুগতবাবুর বক্তব্য ছিল, ২০১১-র পর থেকে প্রেসিডেন্সির উন্নতির পথেই গিয়েছে। এ দিন প্রেসিডেন্সি সম্বন্ধে সুরঞ্জনবাবুও বলেন, ‘‘আমি মনে করি, প্রেসিডেন্সির মান ক্রমেই বাড়ছে। সব কিছু সব সময় যথাযথ হওয়া সম্ভব নয়। কাজ করলে বিতর্ক হবেই, কিন্তু উন্নয়নের প্রক্রিয়া জারি রয়েছে।’’

যাদবপুরে পড়ুয়া-গবেষকদের নজরদারির আওতায় আনার জন্য নতুন বিধি চালু করার প্রস্তাব নিয়ে সম্প্রতি জোর বিতর্ক চলছে। পালিত হয়েছে কর্মবিরতিও। সুরঞ্জনবাবুর বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনের সমস্যা, পড়ুয়াদের সমস্যা— এ সবই অভ্যন্তরীণ সমস্যা। যা আগেও ছিল আগামীতেও থাকবে। তবে সেই সমস্যা সকলের সঙ্গে আলোচনা করে মিটিয়ে ফেলা যায় বলেই তিনি বিশ্বাসী। ‘‘আমি মনে করি সারা পৃথিবীর যত ব়ড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় আছে তাদের উত্কর্ষ বিচারের মাপকাঠিই হল মুক্ত পঠনপাঠন, গবেষণা, তর্ক এবং আলোচনার সুযোগ। যাদবপুরে সেই পরিবেশ রয়েছে। সুতরাং যাদবপুরের মান নিয়ে কারও ধোঁয়াশা বা সন্দেহ থাকা উচিত না,’’ বলেন তিনি।

বিধি-বিতর্ক নিয়ে সুরঞ্জনবাবু জানান, বুধবার বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন স্মারকলিপি দিয়েছে। শিক্ষক, আধিকারিক, পড়ুয়া, শিক্ষাকর্মী সকলেরই মত চাওয়া হয়েছে। সুরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘আমারও নিজস্ব কিছু মত রয়েছে। সব একত্রিত করে আমরা কর্মসমিতিকে দেব। কর্মসমিতির বৈঠকে যে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হবে, সেটা সরকারকে জানানো হবে। এমন তো নয় যে বিধি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়নি কিছু।’’

Anuradha lohia Suranjan das
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy