তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনই অভিযোগ তুলে পাকিস্তানের আদিয়ালা জেলের সামনে অবস্থানে বসেছিলেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর বোনেরা। সেই ঘটনার রেশ টেনে এ বার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে মামলা দায়ের হল ইমরানের দুই বোন আলিমা খান ও নৌরিন নিয়াজ়ির বিরুদ্ধে। সঙ্গে নাম জড়াল পিটিআই-এর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মীর।
পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন পাক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রওয়ালপিন্ডির সদর বেরোনি থানায় ইমরানের দুই বোন আলিমা এবং নৌরিনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ধারা অনুযায়ী এফআইআর দায়ের হয়েছে। সঙ্গে পিটিআই-এর নেতা সলমন আক্রম রাজা, নইম পঞ্জোথা, কাসিম খান, আলিয়া হামজ়া, রাজা নাসির আব্বাস-সহ দলের বিভিন্ন নেতা ও সমর্থকের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়েছে। এফআইআরে পাক দণ্ডবিধির ১২০ ধারাও প্রয়োগ করা হয়েছে, যার মধ্যে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, পুলিশকর্মীদের উপর আক্রমণ এবং ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের মতো নানা গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন:
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে আদিয়ালা জেলের সামনে থেকে অন্তত ১৪ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় আরও কারা জড়িত, তা জানার চেষ্টা চলছে। ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার। ওই দিন ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে আদিয়ালা জেলে গিয়েছিলেন প্রাক্তন পাক রাষ্ট্রনেতার তিন বোন। সঙ্গে ছিলেন পিটিআই নেতা তথা খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মহম্মদ সোহেল আফ্রিদি। ছিলেন পিটিআইয়ের অন্য তাবড় নেতারাও। কিন্তু বিকেলে হঠাৎ জেল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানান, পরিবার, সমর্থক কিংবা আইনজীবী— কারও সঙ্গেই দেখা করতে দেওয়া হবে না ইমরানকে। এর পরেই অশান্ত হয়ে ওঠে জেলের বাইরের পরিস্থিতি। বুধবারও আদিয়ালা কারাগারের বাইরে অবস্থানে বসেন ইমরানের বোন আলেমা, নৌরিন এবং উজ়মা। বিক্ষোভ দেখান পিটিআই-এর কর্মী ও সমর্থকেরাও। সব মিলিয়ে বুধবার আদিয়ালা জেলের বাইরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিক্ষোভকারীদের সরাতে জলকামান ছোড়ে পুলিশ। গোরক্ষপুর এবং কারখানা চেকপোস্ট-সহ জেলের একাধিক প্রবেশপথ ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
২০২৩ সালের অগস্ট মাস থেকে আদিয়ালা জেলে বন্দি রয়েছেন পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ইমরান। কিন্তু অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে বার বার ইমরানের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করলেও কারা কর্তৃপক্ষ সেই অনুমতি দিচ্ছেন না। গত মাসেও জেলে ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তাঁর তিন বোন। তাঁদের হটাতে সে বারেও জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। যদিও পরে জেলে গিয়ে ইমরানের সঙ্গে দেখা করেন তাঁর বোন উজ়মা। দাদার সঙ্গে দেখা করার পর জেল থেকে বেরিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন উজ়মা। তিনি জানান, ইমরান এখন শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ। তা সত্ত্বেও তাঁকে নির্জন কারাগারে বন্দি করে রেখে তাঁর উপর মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে।