সূচনা পর্বের ব্যর্থতা কাটিয়ে গতি পেয়েছে ‘গতিধারা’ প্রকল্প। সেই সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে ওই প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণও বাড়ানো হচ্ছে।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রের বক্তব্য, কন্যাশ্রী, খাদ্যসাথীর মতো প্রকল্প এবং ক্লাবকে অনুদান দেওয়ার মতো সিদ্ধান্তের সুফল মিলেছে গতিধারা প্রকল্পে। মোটা অঙ্কের বরাদ্দই তার পুরস্কার। মাত্র দু’বছরের মধ্যেই প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে ওই প্রকল্পের বরাদ্দ।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, গতিধারা প্রকল্পে টাকা বরাদ্দ শুরু হয়েছে ২০১৫-’১৬ আর্থিক বছরে। গত দু’টি আর্থিক বছরে সরকার যা বরাদ্দ করেছে, প্রতি বছরই তা পুরোপুরি খরচ করেছে পরিবহণ দফতর। ২০১৫-’১৬ আর্থিক বছরে গতিধারায় বরাদ্দ হয়েছিল ৫২ কোটি টাকা। উপকৃত হয়েছিলেন ৫২০০ যুবক-যুবতী। তার পরের আর্থিক বছরে বরাদ্দ হয়েছিল ৭৫ কোটি। সরকারের ভর্তুকি পেয়েছেন ৭৫০০ যুবক-যুবতী। স্বভাবতই এই সাফল্যে উৎসাহিত নবান্ন ২০১৭-’১৮ আর্থিক বছরের জন্য বরাদ্দ করেছে ৯৩ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা। তাতে ৯৩৮৭ জন যুবক-যুবতী ভর্তুকি পাবেন। নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘‘আপাতত ৯৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। প্রয়োজনে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হতে পারে।’’
প্রথম থেকেই অবশ্য ‘গতিধারা’ প্রকল্পের পথ মসৃণ ছিল না। প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল শ্রম দফতরের অধীনে। প্রথম কয়েক মাসে গতিধারার ব্যর্থতার পরে নবান্ন সিদ্ধান্ত নেয়, প্রকল্পটিকে আনা হবে পরিবহণ দফতরের আওতায়। কারণ, কাজের দিক থেকে পরিবহণ দফতরের সঙ্গেই এই প্রকল্প মানানসই। গতিধারা প্রকল্পে বেকার যুবক-যুবতীরা গাড়ি কিনে ব্যবসা করার সুযোগ পাবেন। এই খাতে সরকারের কাছ থেকে সর্বোচ্চ এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি পেতে পারেন তাঁরা। পরিবহণ দফতরে খোলা হয় পৃথক গতিধারা সেল। নবান্নের শীর্ষ কর্তাদের দাবি, দফতর পরিবর্তনের পরে প্রকল্পে গতি এসেছে। এখনও পর্যন্ত সাড়ে ১২ হাজারের বেশি যুবক-যুবতী সরকারি ভর্তুকিতে গাড়ি কিনে ব্যবসা করছেন।
রোজগারের এমন রাস্তা খুলে দেওয়ায় ভোটবাক্সেও সাফল্য এসেছে বলে মনে করছেন শাসক দলের নেতারা। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, গতিধারা প্রকল্পে লাভের গুড় খাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন শুধু শাসক দলের কর্মী-সমর্থকেরাই। এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে এক মন্ত্রীর ব্যাখ্যা, ক্লাবকে অনুদানের সূত্রে যুবসমাজের একটি বড় অংশকে যেমন শাসক দলের দিকে টেনে আনা সম্ভব হয়েছে, একই ভাবে বেকার যুবক-যুবতীদের অনেকেই গতিধারা প্রকল্পে গাড়ি কিনে উপার্জনের রাস্তা খুঁজে পেয়েছেন। ‘‘এতে আখেরে আমাদের লাভ হয়েছে নিশ্চয়ই। তবে ওই ভর্তুকির সুবিধে পেয়েছেন সব দলের কর্মীরাই,’’ দাবি ওই মন্ত্রীর।