E-Paper

সামুদ্রিক মাছের কৃত্রিম প্রজনন-কেন্দ্র, দরপত্র ও সমীক্ষা নিয়ে অভিযোগ

প্রায় ২২ কোটি টাকার এই প্রকল্পের সমীক্ষার কাজ না করেই যে পদ্ধতিতে আগেই দরপত্র ডাকা হয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৬:১৪
fish

—প্রতীকী ছবি।

সামুদ্রিক মাছের প্রজননে রাজ্যের দুই জেলার বঙ্গোপসাগরের উপকূলে ‘কৃত্রিম সংরক্ষণ কেন্দ্র’ (আর্টিফিশিয়াল রিফ) নির্মাণ করতে চলেছে রাজ্য মৎস্য দফতর।

প্রায় ২২ কোটি টাকার এই প্রকল্পের সমীক্ষার কাজ না করেই যে পদ্ধতিতে আগেই দরপত্র ডাকা হয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। আরও অভিযোগ, যে দু’টি সংস্থাকে সমুদ্রের নীচে এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাদের এই রকম কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই।

বিশাখাপত্তনম, তামিলনাড়ু, কর্নাটক, কেরলে সমুদ্রের নীচে সামুদ্রিক মাছের প্রজননের সুবিধায় ‘কৃত্রিম সংরক্ষণকেন্দ্র’ আগেই চালু হয়েছে। ওই পদ্ধতিতেই পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার সমুদ্র উপকূলে প্রায় ৩০টি জায়গায় সমুদ্রের নীচে কংক্রিটের নির্মাণ হওয়ার কথা।

সমুদ্রবিজ্ঞানী সুগত হাজরার কথায়, ‘‘সমুদ্রের নীচে ডুবে যাওয়া জাহাজ বা ট্রলারের মধ্যে শ্যাওলা জমে সামুদ্রিক মাছেদের সুস্থ প্রজননকেন্দ্র গড়ে ওঠে। ওই ধারণাকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজ্যে সমুদ্রের নীচে কৃত্রিম সংরক্ষণকেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে।’’

রাজ্য মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, কৃত্রিম সংরক্ষণকেন্দ্র গড়ে তুলতে সমুদ্রের নীচে কংক্রিটের নির্মাণ হবে। যার মধ্যে সামুদ্রিক মাছ সুস্থ ভাবে প্রজননে সক্ষম হবে। এই প্রকল্পে ‘প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনা’-য় রাজ্যের জন্য প্রায় ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। দু’টি ধাপে এই কাজ শেষ করতে ইতিমধ্যেই দরপত্র ডেকে দু’টি সংস্থাকে এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, সমীক্ষার কাজকে গুরুত্ব না দিয়ে যে পদ্ধতিতে আগে দরপত্র ডাকা হয়েছে, তাতে সরব সকলেই।

ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান কেন্দ্রের বর্তমান অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর জেনারেল শুভদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘সমীক্ষা ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্য আগে সমীক্ষা না করে বড় ভুল করেছে। ফলে পুরো প্রকল্প ভেস্তে যেতে পারে।’’ রাজ্য মৎস্য দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর (মেরিন) সন্দীপ কুমার মণ্ডলেরও স্বীকারোক্তি, ‘‘দরপত্র ডাকার আগে সমীক্ষার কাজ করা উচিত ছিল।’’ অভিযোগ উঠেছে কাজের বরাত পাওয়া সংস্থা দু’টির অভিজ্ঞতা নিয়ে। একটি সংস্থার কর্ণধার প্রভাত সিংহ বলেন, ‘‘আমার অভিজ্ঞতা আছে কি নেই, তা দফতরকে জানাব। আপনাকে জানাতে বাধ্য নই।’’ অন্য সংস্থার কর্ণধার শৌভিক সরকার বলেন, ‘‘আমাদের আগে সমুদ্রের নীচে এই কাজে অভিজ্ঞতা নেই।’’

‘ওয়েস্টবেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারিজ় অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক বিজন মাইতির অভিযোগ, ‘‘সমুদ্রের নীচে কোথায় কী ভাবে কংক্রিটের কাজ হবে সে বিষয়ে এখনও আমাদের সঙ্গে আলোচনাই হয়নি।’’ আরও অভিযোগ, আগে সমীক্ষা না হওয়ায় ভবিষ্যতে মৎস্যজীবীরা ট্রলার নিয়ে যাওয়ার সময়ে বিপদে পড়বেন। সমুদ্রের নীচে বাঁধানো কংক্রিটের ধাক্কায় ট্রলার উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

sea Controversy West Bengal Fish

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy