এলাকার লোককে কাজে নেওয়ার দাবিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে চালু হওয়া কারখানায় কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ চলছিল দু’দিন ধরে। আন্দোলনে নেমেছিল শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন ইএনটিটিইউসি। সামিল হয়েছিল আইএনটিইউসি-ও। সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসলেন নেতারা। আন্দোলন থেকেও সরে দাঁড়াল দুই সংগঠন।
সদ্য উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়া এই কারখানায় দুই সংগঠনের আন্দোলনের জেরে বৃহস্পতিবার থেকে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। শনিবার ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’য় সেই খবর বেরোতেই তৎপর হন দু’দলের নেতারা। তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘এমন আন্দোলন দল বরদাস্ত করছে না, তা কর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
আইএনটিইউসি-র বর্ধমান জেলা সাধারণ সম্পাদক চণ্ডী চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়েছে। সোমবার দাবিদাওয়া নিয়ে বৈঠক হবে।’’ কারখানার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার স্বপনকুমার বসু বলেন, ‘‘সোমবার থেকে ফের নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারব বলে মনে করছি।’’
রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা উৎপাদনশূন্য কুলটি ইস্কো কারখানায় রেল-সেলের যৌথ উদ্যোগে ওয়াগন কারখানা তৈরির প্রথম প্রস্তাব দেন। ২০১০ সালে তিনি কারখানার শিলান্যাস করেন। পরের বছর যন্ত্রাংশ বসানোর কাজ হয়ে গেলেও উৎপাদন শুরু না হওয়ায় কারখানার ভবিষ্যৎ নিয়ে এলাকাবাসী ও কর্মীরা সংশয়ে ভুগছিলেন। শেষমেশ গত মঙ্গলবার কাজ শুরু হয়। কিন্তু দু’দিন যেতে না যেতেই দুই শ্রমিক সংগঠন ব্যানার-ফেস্টুন বেঁধে কারখানার গেটে অবস্থান শুরু
করেন। আধিকারিক ও কারিগরি বিশেষজ্ঞদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে কারখানা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
তবে বিষয়টি জানাজানি হতেই আসরে নামেন তৃণমূলের জেলা নেতারা। শিবদাসন বলেন, ‘‘লোক নিয়োগে কারখানা কর্তৃপক্ষকে আরও সময় দিতে হবে, তা আন্দোলনকারীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
শনিবার সকাল থেকে আইএনটিটিইউসি কর্মীদের আর কারখানার গেটে দেখা যায়নি। তবে আইএনটিইউসি কর্মীরা এ দিন বিকেল অবধি বিক্ষোভ চালান। সংগঠনের নেতারা কারখানার কর্তাদের বৈঠকের প্রস্তাব দিলে তাঁরা জানিয়ে দেন, আগে অবস্থান তুলতে হবে, তার পরে আলোচনা। আইএনটিইউসি-ও এর পরে আন্দোলন তুলে নেয়।
কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই সংগঠনকে জানানো হয়েছে, প্রয়োজন অনুযায়ী এলাকার লোক নেওয়ার কথা ভাবা হবে।
ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার স্বপনবাবু জানান, ডামাডোল দেখে বাইরে থেকে আসা কর্মী-আধিকারিকদের অনেকে এলাকা থেকে চলে গিয়েছেন। তাঁদের খবর পাঠানো হয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষের আশা, সামনের সপ্তাহ থেকে পুরোদমে কাজ শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy