অশোক ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।
চলতি অর্থবর্ষের জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গকে এক টাকাও দেয়নি বলে কয়েক দিন আগে অভিযোগ করেছিল রাজ্য সরকার। ৫ জানুয়ারি আনন্দবাজার পত্রিকায় সেই খবর প্রকাশের পরেই নবান্নের বিরুদ্ধে সেই একই অভিযোগ তুলল বাম পরিচালিত শিলিগুড়ি পুরসভা।
রাজ্যের এক পুরকর্তা জানান, ৭৮টি পুরসভা এলাকায় যে-সব বাসিন্দার পাকা বাড়ি নেই, তাঁদের জন্য গত ৫ জানুয়ারি প্রায় ১৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে পুর দফতর। আর্থিক বছরের শেষ দু’মাসে ওই টাকা খরচ করার কথা।
কিন্তু বরাদ্দ টাকার কানাকড়িও শিলিগুড়ি পুরসভার কপালে জোটেনি বলে অভিযোগ ওই শহরের মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-সহ নগরোন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পের রিপোর্ট দিয়ে ১২০০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০১৭-’১৮ আর্থিক বছর শেষ হতে চলল। একটি টাকাও দেয়নি পুর দফতর! শিলিগুড়ি পুরসভা বাম পরিচালিত বলেই রাজ্য বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে।’’
শিলিগুড়ির মেয়রের অভিযোগের জবাবে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, অশোকবাবু ১২০০ কোটি টাকা চেয়েছেন। একসঙ্গে এত টাকা দেওয়ার ক্ষমতা নেই রাজ্যের। ফিরহাদের পাল্ট দাবি, ‘‘পুরমন্ত্রী থাকাকালীন উনি (অশোকবাবু) শিলিগুড়ি পুরসভাকে যে-টাকা দিয়েছিলেন, তার থেকে বেশি টাকা আমরা দিয়েছি। আমরা রাজনীতি করি না। রাজ্যের সর্বত্রই সমান ভাবে উন্নয়নের চেষ্টা করছি।’’
মাত্র কয়েক দিন আগেই আবাস যোজনা প্রকল্পে কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছিল রাজ্য। তখন সরকারের দাবি ছিল, ওই প্রকল্পে বকেয়ার মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৪৯ কোটি টাকা। এই অবস্থায় চলতি অর্থবর্ষে একটিও বাড়ি তৈরি করা যায়নি। রাজ্যের মন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, ‘‘প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাব নিয়ে চলছে কেন্দ্র।’’ কেন্দ্র অবশ্য রাজ্যের অভিযোগ নস্যাৎ করে তখন জানিয়েছিল, চলতি অর্থবর্ষে ২৪ হাজার ১৬৬টি বাড়ি তৈরির জন্য তারা ইতিমধ্যেই ৩০২ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে।
পুর দফতরের এক কর্তার ব্যাখ্যা, এই প্রকল্পে কেন্দ্র, রাজ্য এবং উপভোক্তাকে টাকা দিতে হয়। কেন্দ্র তার আগের দু’বছরের বকেয়া টাকা পাঠিয়েছে। রাজ্য ‘ম্যাচিং গ্র্যান্ট’ দিয়েছে। সব মিলিয়ে অঙ্কটা ১৭৭ কোটি টাকা। যা পুরসভাগুলিকে বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু চলতি আর্থিক বছরের জন্য এখনও কোনও টাকা পাঠায়নি কেন্দ্র।
রাজ্যে পুরসভার সংখ্যা ১২৫। তবে এখন ৭৮টি পুরসভার জন্য ওই ১৭৭ টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। সেই ৭৮ পুরসভার তালিকায় শিলিগুড়ির নাম নেই। এই দু’মাসে টাকা খরচ করা যাবে? পুরমন্ত্রীর জবাব, ‘‘কেন্দ্র থেকে যে-ভাবে টাকা পাচ্ছি, সেই ভাবেই টাকা ছাড়ছি। এর পিছনে কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy