Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Abhishek Banerjee

Abhishek Banerjee: একুশের মঞ্চ থেকে জাতীয় রাজনীতিতে অভিষেককে প্রতিষ্ঠা দিলেন মমতা

এক একুশে জুলাই তাঁর রাজনৈতিক জীবনের গতিপথ ঠিক করে দিয়েছিল। সেই একুশে জুলাইয়ের মঞ্চেই সর্বভারতীয় রাজনীতিতে অভিষেককে প্রতিষ্ঠিত করলেন মমতা।

২১-এর মঞ্চে অভিষেক।

২১-এর মঞ্চে অভিষেক। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২১ ১৮:১২
Share: Save:

আড়ি পাতা-কাণ্ডে রাহুল গাঁধী, প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে নাম উঠে এসেছে তাঁর। ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার কাজে লাগিয়ে তাঁর উপরও কেন্দ্রের নজর ছিল বলে অভিযোগ। তা নিয়ে চর্চার মধ্যেই একুশে জুলাইয়ের শহিদ স্মরণের মঞ্চ থেকে জাতীয় রাজনীতিতে উত্থান ঘটল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। খাতায়কলমে আগেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদকের পদ পেয়েছেন। তবে একুশে জুলাইয়ের ওজনদার মঞ্চ থেকে দলীয় প্রতিনিধি হিসেবে পি চিদম্বরম, শরদ পওয়ার, সুপ্রিয়া সুলেদের সঙ্গে ‘রাজনৈতিক বার্তালাপ’ অভিষেককে জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রেও আরও একধাপ এগিয়ে দিল বলেই মনে করছেন তৃণমূলের নেতারা। এবং অভিষেককে সেই আসনে প্রতিষ্ঠা করালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই।

বুধবার একুশের মঞ্চ থেকে মমতার ভার্চুয়াল ভাষণ শুনতে দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে হাজির হয়েছিল বিজেপি-বিরোধী শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশ। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী জোটের চালকের আসনে মমতাকে রাখা নিয়ে যখন জল্পনা তুঙ্গে, সেই সময় তাঁদের এই সমাবেশ এমনিতেই তাৎপর্যপূর্ণ। সেই সন্ধিক্ষণেই অভিষেককে মমতা এগিয়ে দিলেন জাতীয় স্তরের নেতাদের সামনে। বয়সে তরুণ অথচ সুবক্তা অভিষেক বর্ষীয়ান নেতাদের বললেন, ‘‘আমাদের আশীর্বাদ করবেন।’’

শহিদ স্মরণের মঞ্চে মমতা-অভিষেক। পিছনে মুকুল রায়।

শহিদ স্মরণের মঞ্চে মমতা-অভিষেক। পিছনে মুকুল রায়। —নিজস্ব চিত্র।

২৮তম শহিদ দিবসে কালীঘাটের বাড়ির লাগোয়া দলীয় দফতর থেকে ভার্চুয়াল ভাষণ দেন মমতা। সেখানে মঞ্চে তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত বক্সী এবং মুকুল রায়। সুব্রত কর্মসূচির সূচনা করলেও প্রত্যাশিত ভাবে মূল বক্তা ছিলেন মমতাই। সেই ভাষণে তিনি জানান, দিল্লি থেকে বিজেপি-কে সরাতে আর একটি মুহূর্তও নষ্ট করতে চান না। কোনও রকম রাখঢাক না করে বিরোধী জোটের প্রস্তুতি শুরু করতে আর্জি জানান বিজেপি বিরোধী শিবিরের নেতাদের।

মমতার পরেই ভাষণ দিতে আসেন অভিষেক। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ভাষণটি মূলত ‘ধ্যনবাদজ্ঞাপক’ হলেও তার মধ্যে রাজনৈতিক বার্তাও দিয়েছেন তিনি। তৃণমূলের শহিদ স্মরণে শামিল হওয়ার জন্য বিজেপি-বিরোধী শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রথমে ধন্যবাদ জানিয়ে মমতার সুরে লোকসভা ভোটে বিজেপি-কে হারানোর বার্তা দেন অভিষেক। বলেন, ‘‘আপনাদের অনুপ্রেরণায় আগামী দিনে বৃহৎ, উজ্জ্বল এবং উন্নততর ভারত গড়ে তুলব আমরা। একসঙ্গে হাতে-হাত রেখে চলব। কর্তৃত্ববাদী শক্তিকে পরাজিত করার চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখব না আমরা। যতই ভয় দেখাক, মাথা নত করব না।’’

দিল্লি থেকে বিজেপি-কে তাড়াতে তৃণমূলই যে পথপ্রদর্শক হতে পারে, একুশের মঞ্চ থেকে বিরোধী নেতৃত্বকে তা-ও বুঝিয়ে দেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘বাধা-বিপত্তি কম ছিল না। কিন্তু জান লড়িয়ে দিয়েছিলাম আমরা। তাই জয়ী হতে পেরেছি। এখন দিল্লির কর্তৃত্ববাদী জুড়ির হাত থেকে ভারতকে সঠিক শৃঙ্খলামুক্ত করার সময়। তার জন্য শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়বে তৃণমূল।’’

তৃতীয় বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরেছেন মমতা। কিন্তু এ বার তাঁর লক্ষ্য যে দিল্লি, সে কথা তৃণমূল নেত্রী নিজেই জানিয়েছেন। তাই তাঁকে বিরোধী জোটের মুখ করে ভোটে লড়ার জল্পনাও শুরু হয়েছে। বুধবারের মঞ্চ বুঝিয়ে দিল, সর্বভারতীয় রাজনীতিতে অভিষেককেও ‘গুরুত্ব’ দেবে তৃণমূল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE