Advertisement
E-Paper

অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা, শহরে আসছে সৃজল

যন্ত্রণায় মুখচোখ কুঁকড়ে যাচ্ছে মাঝেমাঝে। পাশে বসে বাবা রমেশ রাই মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। জিগ্গেস করছেন, কষ্ট হচ্ছে, বেটা?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৪
বাবার সঙ্গে অসুস্থ সৃজল। — নিজস্ব চিত্র

বাবার সঙ্গে অসুস্থ সৃজল। — নিজস্ব চিত্র

যন্ত্রণায় মুখচোখ কুঁকড়ে যাচ্ছে মাঝেমাঝে। পাশে বসে বাবা রমেশ রাই মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। জিগ্গেস করছেন, কষ্ট হচ্ছে, বেটা?

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের বিছানায় শুয়ে আট বছরের ছোট্ট সৃজল জানেই না, আনন্দবাজারের পাতায় তার দুরারোগ্য অসুখের কথা জানতে পেরে শনিবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন কত মানুষ! দিনভর সমানে ফোন এসেছে। কখনও কলকাতা, খড়্গপুর, বারাসত, বীরভূমের কোনও গ্রাম থেকে, কখনও দিল্লি, মুম্বই, বড়োদরা, সুরাতের মতো দেশের নানা প্রান্ত থেকে। কখনও বা ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া থেকেও মানুষ জানিয়েছেন, কালিম্পঙের প্রান্তিক চাষি পরিবারের এই খুদে সদস্যকে সুস্থ করে তুলতে তাঁরা সাহায্য করতে চান।

ততক্ষণে অবশ্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও। এমনিতেই তৃণমূল আমলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হয় বিনে পয়সায়। কিন্তু যে জটিল রোগ নিয়ে সৃজল শিলিগুড়িতে এসেছিল, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে তার চিকিৎসা হয় না। তাই তাকে রেফার করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। কিন্তু গরিব রমেশ রাইয়ের হাতে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করার টাকাও ছিল না। শনিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, সৃজলকে কলকাতায় পাঠানোর ব্যবস্থাও সরকারই করবে।

বস্তুত, শুক্রবারই প্রশ্ন ওঠে, সরকারি হাসপাতাল যদি অন্যত্র রেফার করে কোনও রোগীকে, তা হলে অ্যাম্বুল্যান্সে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও তারা করবে না কেন? উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাসকে চিকিৎসার সমস্ত ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন। এর পরেই শনিবার এসএসকেএম এবং এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। পরে সৃজলকে এনআরএস-এ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল। আজ, রবিবার দুপুরে অ্যাম্বুল্যান্সে করে সৃজলকে নিয়ে কলকাতায় যাবেন রমেশ এবং তাঁর ভাই দীপম। সেই অ্যাম্বুল্যান্সে থাকছে বিশেষ ‘এয়ার ম্যাট্রেস’ও। যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি সৃজলকে কালিম্পঙ থেকে শিলিগুড়ি নিয়ে আসে, তাদের উত্তরবঙ্গের কো-অর্ডিনেটর শেখর সাহা বললেন, ‘‘যে ভাবে সরকার থেকে সাধারণ মানুষ, সকলেই দ্রুত এগিয়ে এসেছেন, তা অভাবনীয়। আশা করি ও তাড়াতাড়িই সুস্থ হয়ে উঠবে।’’

জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক পরে বলেন, ‘‘এনআরএস-এ ওই বালককে পাঠানো হচ্ছে চিকিৎসার জন্য। অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’’ সৃজলের চিকিৎসা করছিলেন অমরেন্দ্র সরকার। তিনি বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এখানে শুরু হয়েছে। তবে ঘা হয়ে শরীর থেকে মাংস খসে পড়ার ক্ষেত্রে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। সে জন্য কলকাতার হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।’’

Srijal Ambulance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy