Advertisement
E-Paper

স্বপ্ন পূরণ বছর তিরিশ পরে

মঙ্গলবার বারাসতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বনগাঁর মুড়িঘাটা ও গোপালনগরের অম্বরপুরের মধ্যে সংযোগকারী সেতুটির উদ্বোধন করেন। এতে খুশি এলাকাবাসী।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:১২
মিটল-দাবি: নতুন সেতুর উপর সাইকেল র‌্যালি। আনন্দে মেতেছে এলাকাবাসী। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক 

মিটল-দাবি: নতুন সেতুর উপর সাইকেল র‌্যালি। আনন্দে মেতেছে এলাকাবাসী। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক 

দুপুর আড়াইটে। ইছামতীর নদীর উপর তৈরি হওয়া কংক্রিটের সেতুর উপর উঠে এল একটি বাইক মিছিল। মিছিলের সামনে টোটো। তার সঙ্গে ঘোষণা চলছে, ‘‘আমাদের দীর্ঘদিনের আশা পূরণ হল। এই সেতু উদ্বোধনের জন্য ধন্যবাদ জানাই মুখ্যমন্ত্রীকে।’’ শোনামাত্র কাতারে কাতারে লোক বাড়ির থেকে বেরিয়ে এলেন। সবার মুখে জয়ের হাসি। দীর্ঘ তিরিশ বছর পর দাবি মিটল এলাকাবাসীর।

মঙ্গলবার বারাসতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বনগাঁর মুড়িঘাটা ও গোপালনগরের অম্বরপুরের মধ্যে সংযোগকারী সেতুটির উদ্বোধন করেন। এতে খুশি এলাকাবাসী। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘এর ফলে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের যাতায়াত সমস্যার সমাধান হল। বিশেষ করে গঙ্গানন্দপুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের বনগাঁ শহরে আসাটাও সহজ হল।’’

১৯৮৭ সাল থেকে গ্রামের মানুষের দাবি ছিল, ইছামতী নদীর উপর একটি কংক্রিটের সেতুর। সেতুর দাবিতে বহু বছর ধরে আন্দোলন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হল। আজ আমরা খুশি। সেতুর অভাবে জলে ডুবে অনেকে মারা গিয়েছেন। আজ তাঁদের কথা খুব মনে পড়ছে।’’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অতীতে ওই এলাকায় নদীতে নৌকা করে মানুষ যাতায়াত করতেন। সে সময় নৌকা ডুবিতে অনেকেই মারা গিয়েছেন। জলে পড়ে আহত হওয়ার সংখ্যাটাও কম ছিল না। এরপরে মানুষ কচুরিপানা দিয়ে সেতু তৈরি করেছিলেন। তারপর তৈরি হয় বাঁশের সাঁকো। বড় গাড়ি তার উপর দিয়ে যাতায়াত করতে পারত না। সেতুর দাবিতে এলাকার মানুষ সাংসদ বিধায়ক, মন্ত্রী-সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে একাধিকবার স্মারকলিপি দিয়েছেন। সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।

পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার সেতুটির শিলান্যাস করেছিলেন। সেতু তৈরি করতে জমির প্রয়োজন ছিল। জমি জটে বহুদিন সেতু তৈরির কাজ থমকে ছিল। পরবর্তী সময়ে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা দিয়ে জমি কেনা হয়। ১৫৬ মিটার লম্বা ও সাড়ে ৭ মিটার চওড়া সেতু তৈরি করতে খরচ হয়েছে ২৬ কোটি টাকা। স্থানীয় বাসিন্দা ভোলানাথ পাল বলেন, ‘‘সব দিক থেকে আমরা উপকৃত হলাম।’’ এতদিন অম্বরপুর থেকে বনগাঁ শহরে আসতে হলে গোপালনগর ঘুরে আসতে হতো। যার দূরত্ব প্রায় ২১ কিলোমিটার। এখন সেতু হওয়াতে দূরত্ব কমে হল রারো কিলোমিটার। চাষিরা হাটে-বাজারে আনাজ নিয়ে যেতে পারতেন না। ঘুর পথে যেতে হলে পরিবহণ খরচ বেড়ে যেত। বাঁশের সাঁকো দিয়ে সন্ধ্যার পর যাতয়াত করা যেত না। স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদেরও গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হয়ে যেত।

কিন্তু শেষমেশ সেতু উদ্বোধনের পর মুখে হাসি ফুটেছে কচিকাঁচা থেকে শুরু করে প্রবীণদের। অনেককে আবার আনন্দে সেতুর উপর দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতেও দেখা গেল।

Bridge Ichamati River Mamata Banerjee মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইছামতী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy