ছবি: সংগৃহীত।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন যে দিন সিপিএম নেতা মুজফ্ফর আহমদের নামাঙ্কিত পুরস্কার গ্রহণ করলেন, সে দিনই তাঁর সম্পর্কে মন্তব্য করে বিতর্ক বাঁধালেন রাজ্যের নবাগত মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।
বিজেপিতে থাকাকালীন ওই দলের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী অনেক সময়ই বাবুলও কটাক্ষ করেছেন অমর্ত্যকে। তবে তৃণমূল সরকারে মন্ত্রী হয়েই শুক্রবার তিনি ফের যা বললেন তেমন কথা প্রকাশ্যে তৃণমূলের কেউ এখনও বলেননি। বাবুলের বক্তব্য, ‘‘উনি (অমর্ত্য সেন) বারবার প্রমাণ করছেন যে এক জন কিংবদন্তী অর্থনীতিবিদ হওয়া সত্ত্বেও রাজনীতির রঙের বাইরে বেরোতে পারছেন না।’’ অমর্ত্যকে এ দেশে ‘পর্যটক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন রাজ্যের নাবগত মন্ত্রী বাবুল।
তৃণমূল অবশ্য তাঁর এই বক্তব্যের পাশে দাঁড়ায়নি। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘অমর্ত্য সেনের অসম্মান হয় এমন কোনও কথাই দল সমর্থন করে না। আর তিনি কোন পুরস্কার নেবেন, কোনটা নেবেন না তা-ও তাঁর সিদ্ধান্ত।’’
রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য কার্যত বাবুলের বক্তব্যের পাশেই দাঁড়ান। তাঁর কথায়, ‘‘অমর্ত্যবাবু মেধাবী হতে পারেন। কিন্তু উনি দেশের সম্পর্কে, প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন তাতে জনমানসে তিনি নিজেকে বাছাই প্রতিবাদী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।’’
সিপিএম ও কংগ্রেস বাবুলকে পাল্টা আক্রমণ করেছে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘অমর্ত্য সেনকে নিয়ে বাবুল সুপ্রিয় মন্তব্য করছেন, ব্যাপারটাই হাস্যকর! যিনি বিজেপির সরকারে মন্ত্রী ছিলেন, আবার তৃণমূলের সরকারেও মন্ত্রী হয়েছেন, তিনি অমর্ত্যবাবুকে পর্যটক বলছেন! অর্মত্য তো এমন পর্যটন করেননি। আমাদের রাজ্য, দেশ এবং গোটা পৃথিবীর রাজনীতি ও অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান, চেতনার ক্ষেত্রে অমর্ত্য সেন ধ্রুবতারার মতো। আর বাবুলেরা রাজনীতির দুর্ভাগ্য!’’
কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের মতে, ‘‘তৃণমূলের মন্ত্রিসভায় প্রকৃত শিক্ষা, কাণ্ডজ্ঞানহীন যে সব লোকজন রয়েছেন, তাঁদের মুখেই এমন কথা শোভা পায়। অমর্ত্য সেন বিদ্বান মানুষ, গোটা পৃথিবী তাঁকে সম্মান দিয়েছে। এই সব মন্তব্যে অমর্ত্যের কিছুই এসে যাবে না। যাঁরা বলছেন, তাঁদের মানুষ চিনে নেবেন!’’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজ্য সরকার অমর্ত্যকে বঙ্গ-বিভূষণ সম্মান দিতে চেয়েছিল। অমর্ত্য তা নিতে ‘অপারগ’ হন। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানিয়েছিলেন, ‘রাজ্য সরকার অমর্ত্য সেনকে বঙ্গ-বিভূষণ দিতে চেয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তিনি তখন কোভিডে আক্রান্ত অবস্থায় শান্তিনিকেতনে ছিলেন। সরকারকে তিনি বলেছিলেন, এ বার তাঁর পক্ষে এই সম্মানগ্রহণ সম্ভব হবে না। কারণ তিনি বিদেশে চলে যাবেন।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy