সদ্য দক্ষিণ আমেরিকা থেকে গানের অনুষ্ঠান সেরে ফিরেছেন। পুজোর গানও করছেন। তার উপর সামনের মাসেই বিয়ে। তার তোড়জোড়ও জোরকদমে। তার মধ্যেই কাল রদবদলের পর আজ নতুন মন্ত্রকের দায়িত্ব নিতে ছুটলেন বাবুল সুপ্রিয়।
নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে ভারী শিল্পে বদলিতে অবশ্য স্বস্তি একটাই। পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে আরও বেশি কাজ করতে পারবেন। নিজের কেন্দ্র আসানসোলের শিল্পতালুকের জন্যও ঢেলে কাজ করতে পারবেন। এমনিতেই পশ্চিমবঙ্গে শিল্পায়ন হয় না বলে বদনাম রয়েছে। এই অবস্থায় বাবুল মনে করেন, ভারী শিল্পের প্রতিমন্ত্রী হয়ে রাজ্যের জন্য আরও কাজের সুযোগ রয়েছে। নতুন মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়ে বাবুল বলেন, ‘‘নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের সব অর্থই রাজ্যকে দিয়ে দেওয়া হয়। আর মানুষ আঙুল তুলত আমাদের উপর। কিন্তু কেন্দ্রের মন্ত্রী হয়ে শুধু নীতি রূপায়ণ ছাড়া আর কোনও ভূমিকা ছিল না। নিজের কেন্দ্র আসানসোলকে স্মার্ট সিটি করার অধিকারও আমার হাতে ছিল না। সেটিও রাজ্যের অধিকারে। অন্তত ভারী শিল্পমন্ত্রকে এসে সরাসরি রাজ্যের জন্য কাজ করা যাবে।’’
রাজ্যের মন্ত্রী হয়ে অবশ্য এর আগেও বেশ কিছু কাজ হাতে নিয়েছিলেন তিনি। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডর অনেকটা তাঁর প্রচেষ্টাতেই গতি পেয়েছে। কিন্তু মন্ত্রকে তাঁর মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুর সঙ্গে নিরন্তর মন কষাকষি চলত। বিজেপি সূত্র বলছে, গত সপ্তাহের রদবদলের সময়েই প্রধানমন্ত্রী ভেবে রেখেছিলেন, জি এম সিদ্ধেশ্বরাকে সরিয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে ভারী শিল্পের দায়িত্ব দেওয়া হবে। সে কারণে পরিকল্পনা মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বে থাকা ইন্দ্রজিৎ সিংহকে নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী করে আনা হয়েছিল। বাবুল অনেক দিন ধরেই নগরোন্নয়ন মন্ত্রকে আরও কাজ চাইছিলেন। গান গাওয়াটি এখনও তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন। সামনে বিয়ের তোড়জোড় নিয়েও ব্যস্ততা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আরও কাজ করে তিনি প্রমাণ করতে চাইছিলেন, প্রধানমন্ত্রী যে দায়িত্ব দিয়েছেন তাতে কোনও ঘাটতি রাখতে চাইছেন না তিনি।
আরও পড়ুন: দাদা-বোনের সখ্যে ইঙ্গিত নতুন অঙ্কের
বাবুলের প্রাক্তন মন্ত্রক নগরোন্নয়ন মন্ত্রক সূত্র জানাচ্ছে, গতকালই বেঙ্কাইয়ার সঙ্গে বাবুলের দফতরের কাজ বণ্টন নিয়ে কথা হয়েছে। রাতেই অবশ্য বাবুলের মন্ত্রক বদলে যায়। আজ সকালে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অবশ্য বেঙ্কাইয়া ভারী শিল্পমন্ত্রী শিবসেনার অনন্ত গীতের সঙ্গে কথা বলেন। পরে বাবুলকে ফোন করে কিছুটা রসিকতার ছলে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘‘তোমার বিয়ে তো ৯ অগস্ট, ক্রান্তি দিবসে হচ্ছে!’’ বিজেপির অনেকে অবশ্য মনে করেন, শিবসেনার সঙ্গে এমনিতেই বিস্তর টানাপড়েন চলছে বিজেপির। এ বারের রদবদলে শিবসেনার কাউকে মন্ত্রী করা হয়নি। মহারাষ্ট্রের মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণেও কাউকে ক্যাবিনেট মন্ত্রী করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বাবুলকে শিবসেনা মন্ত্রীর অধীনে রেখে ভারী শিল্পে আরও নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাইলেন মোদী।
আপাতত পশ্চিমবঙ্গই পাখির চোখ বাবুলের। প্রথম দিনেই মন্ত্রকের অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক সেরে ফেলেছেন। সপ্তাহের শেষে যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গে। সেখানে রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় একটি প্রকল্পে যেমন সামিল হবেন, তেমনই উপস্থিত থাকবেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বৈঠকেও। শনিবার রাতেই বিজেপির রাজ্য কোর কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে রাজ্যে যাচ্ছেন অমিত শাহ ও সংগঠনের দায়িত্বে থাকা রামলাল। লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল স্থির হবে সেই বৈঠকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy