Advertisement
E-Paper

ধূপগুড়ির পাশে দাঁড়াতে আসছে বালি, সুটিয়া

নিহত ছাত্রীর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ধূপগুড়িতে আসছেন বালি, ও সুটিয়ার প্রতিবাদীরা। আসার কথা ছিল টুম্পা-মৌসুমীরও। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে আসতে পারছেন না তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৬ ০১:৩৪

নিহত ছাত্রীর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ধূপগুড়িতে আসছেন বালি, ও সুটিয়ার প্রতিবাদীরা। আসার কথা ছিল টুম্পা-মৌসুমীরও। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে আসতে পারছেন না তাঁরা।

গত মাসের শেষে শিলিগুড়িতে এসে ধূপগুড়ির নিহত ছাত্রীর বাবার সঙ্গে দেখা করেছিলেন কামদুনির মৌসুমী কয়াল, টুম্পা কয়াল-রা। ‘আক্রান্ত আমরা’র তরফে অম্বিকেশ মহাপাত্র ছাত্রীর বাবাকে জানিয়েছিলেন, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের প্রতিবাদীদের নিয়ে তাঁর বাড়িতে যাবেন। মাসখানেক ধরে নানা হুমকির মুখে ঘরছাড়া ওই ছাত্রীর পরিবার। নিজের বাড়ি ছেড়ে স্ত্রী ছেলে-মেয়েদের নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন ছাত্রীর বাবা। গোয়ালঘরের বেড়ার ফুঁটো বুজিয়ে, চাল লাগিয়ে সেখানেই থাকছেন তাঁরা।

কেন ছাত্রীর পরিবার ঘরছাড়া, সেই প্রশ্ন তুলে আজ, রবিবার ধূপগুড়ি থানায় বিক্ষোভ দেখানোর কর্মসূচি রয়েছে প্রতিবাদীদের। থাকবেন সুটিয়ার বরুণ বিশ্বাসের দিদি, বালির তপন দত্তের স্ত্রী। কিন্তু ছেলে অসুস্থ থাকায় আসতে পারছেন না টুম্পা। আর নিজে অসুস্থ হয়ে পড়ায় আসতে পারছেন না মৌসুমীও। বিক্ষোভের পরে ধুপগুড়িতে প্রকাশ্য সভাও করবেন প্রতিবাদীরা। ধুপগুড়িতে ইতিমধ্যেই প্রতিবাদী নাগরিক মঞ্চ গঠিত হয়েছে। নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক জানিয়েছেন, নিহত ছাত্রীর পরিবার যে ‘একা’ নয় সে বার্তা দিতেই প্রতিবাদীদের নিয়ে থানা যাওয়া হবে।

এ দিন ধূপগুড়িতে আসার কথা রয়েছে মালবাজারের রোহিত পাশি এবং সিতাইয়ে নিহত দশম শ্রেণির ছাত্রীর পরিবারেও। ফেসবুকে মন্তব্যের জেরে রোহিত পাশিকে একদিন মালবাজার থানায় কাটাতে হয়। এলাকার এক তৃণমূল নেতার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রোহিতকে গ্রেফতার করেছিল। যদিও, ফেসবুকের ওই মন্তব্যে কোনও নেতার নাম উল্লেখ্য করেনি রোহিত। অভিযোগ, তৃণমূল নেতার ‘নির্দেশে’ই মালবাজার থানা রোহিতকে গ্রেফতার করে। পর দিন অবশ্য সদর মহকুমা শাসকের আদালত থেকে জামিন পান রোহিত। সে সময়েই ‘আক্রান্ত আমরা’র অম্বিকেশবাবু রোহিতের সঙ্গে ফোনে কথা বলে পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

মাসখানেক আগে গভীর রাতে কোচবিহারের সিতাইয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে পাশের কলাবাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ দায়ের হলেও, পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে টালবাহানার অভিযোগ তোলেন ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা। দোষীদের শাস্তির দাবিতে সিতাই থেকে কোচবিহার মিছিলে হাঁটেন বাসিন্দারা। ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা কামদুনিতে গিয়ে মৌসুমী-টুম্পার সঙ্গেও দেখা করেছিলেন। এ দিন মালবাজারের রোহিত এবং সিতাইয়ের ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদেরও ধূপগুড়িতে আসার কথা রয়েছে।

শনিবার রাতেই শিলিগুড়িতে পৌঁছবেন অম্বিকেশবাবুরা। রবিবার ধূপগুড়ির সভা করে সোমবার তাঁদের ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার ডাকা সালিশি সভায় বাবাকে মারধরের প্রতিবাদ করেছিল ছাত্রীটি। অভিযোগ, এরপরেই সভার মাতব্বরেরা ছাত্রীকে থুতু চাঁটানোর নির্দেশ দেয়। প্রতিবাদ করলে ছাত্রীকে চুলের মুঠি ধরে মারধর করার পরে ‘দেখে নেওয়া’র হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। হুমকি-মারধরের ভয়ে ছাত্রীটি সভা থেকে পালিয়ে গেলে কয়েকজন তার পিছু নেয় বলে অভিযোগ। সারারাত নিখোঁজ থাকে ছাত্রীটি। পর দিন সকালে পাশের রেললাইন থেকে ছাত্রীর বিবস্ত্র দেহ উদ্ধার হয়। ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে ১৩ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন ছাত্রীর বাবা। অভিযুক্তরা সকলেই তৃণমূলের নেতা-কর্মী বলে পরিচিত। মামলা দায়েরের পর থেকেই তদন্ত নিয়ে পুলিশি টালবাহানার অভিযোগ ওঠে। বিচার চেয়ে ছাত্রীর বাবা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে অধরা অভিযুক্তদের কেউ আত্মসমর্পণ করে, কাউকে বা গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ দাবি করে।

মামলার প্রধান সাক্ষীও খুন হয়ে যায়। ছাত্রীকে মারধর করা হয়েছিল বলে যে সাক্ষী দিয়েছিলেন, তাঁর দেহ পাওয়া যায় ধানখেতে। উল্টে সে মামলায় ছাত্রীর বাবার নাম জড়িয়ে অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ছাত্রীর বাবা ও মামাকে গ্রেফতার করে। অভিযোগ, মামলা প্রত্যাহারের চাপ দিতেই মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো, হুমকি শুরু হয়। এরপরে কামদুনির অভিযুক্তদের ফাঁসির সাজাকে স্বাগত জানিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দেওয়ার পরেও ওই ছাত্রীর পরিবারকে হুমকি দিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। তারপর থেকেই ঘরছাড়া ছাত্রীর পরিবার। মঞ্চের সদস্যদের আশা, প্রতিবাদীদের পাশে দেখে ওই পরিবার অনেকটাই ভরসা পাবে।

Dhupguri Bali Sutia Student death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy