জলে নির্দিষ্ট সীমা বোঝাতে রাখা হয়েছে ভাসমান বয়া। বকখালিতে। —নিজস্ব চিত্র।
বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জের সৈকতের চেহারাই যেন বদলে গিয়েছে!
পর্যটকেরা এত দিন খোলা তটভূমি পেরিয়ে জলে নেমে প়ড়তেন। আনন্দে মেতে উঠতে গিয়ে বিপদ ঘটত মাঝেমধ্যেই। সেই বিপদ এ়়ড়াতেই সৈকতে ভাসমান পাঁচিল তুলে দিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। সুরক্ষা কবচ হিসেবে রাখা হয়েছে অস্থায়ী আলোকস্তম্ভ, সিসি ক্যামেরা, সাইরেন। ফলে বকখালি-ফ্রেজারগঞ্জে গিয়ে এ বার ইচ্ছেমতো জলে নেমে পড়া যাবে না। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও জানান, বিপদে পড়লে পর্যটকদের দ্রুত উদ্ধার করতে রাখা হয়েছে ওয়াটার স্কুটারও।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত বছর হেনরি আইল্যান্ডে বেড়াতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হয় নৌসেনার এক অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক-সহ তিন জনের। তার পরেই সৈকতের সুরক্ষা বাড়াতে ফ্রেজারগঞ্জের উপকূলরক্ষী বাহিনীর কম্যান্ড্যান্ট অভিজিৎ দাশগুপ্তের কাছ থেকে কয়েক দফা পরামর্শ পৌঁছয় জেলা প্রশাসনের কাছে। পর্যটন দফতরের বরাদ্দ করা ২৫ লক্ষ টাকায় সেই সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে জেলা প্রশাসন। দিঘা, মন্দারমণি, বকখালি-সহ এ রাজ্যে সৈকত-পর্যটনের জায়গা অনেক। পর্যটনের মরসুমে হাজার হাজার ভ্রমণার্থী সেখানে যান। তবে এই উন্নত সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রথম চালু হল ফ্রেজারগঞ্জেই। রত্নাকরের মতে, এই ধরনের কাজে উপকূলরক্ষী বাহিনীর ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই তাদের পরামর্শ মেনে কাজ করাটাই উচিত বলে মনে করেছেন তাঁরা।
কী রকম সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়া হয়েছে বকখালি-ফ্রে়জারগঞ্জে?
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, হাওয়া ভরা মোটা বস্তার মতো বেলুন দিয়ে লম্বা সারি দিয়ে সৈকতের মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়েছে। জোয়ার এলে সেগুলো ভেসে থাকবে। ভাটায় পড়ে থাকবে মাটিতে। জোয়ার হোক ভাটা, ওই বেলুনের সারি পেরোনো নিষেধ। বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জে হঠাৎ-হঠাৎই
জোয়ারের জল বে়ড়ে যায়। ফলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই চোরাস্রোতে ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। রাতে যাতে পর্যটকেরা যাতে ওই এলাকা পেরোতে না-পারেন, সেই জন্য শক্তিশালী জেনারেটরচালিত আলো বসানো হয়েছে। জোয়ার আসার আগে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য বাজছে সাইরেন। তটভূমির বিভিন্ন জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। দিনরাত তাতে নজর রাখবে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ। উদ্ধারকারী দলের হাতে তটভূমির উপরে দ্রুত চলাচলের জন্য ‘অল টেরেন ভেহিক্ল’, দূরবিনও দেওয়া হয়েছে। অন্তত ১৫টি জায়গায় নির্দেশিকা লিখে বসানো হয়েছে বোর্ড।
দিঘা-মন্দারমণিতেও এমন দুর্ঘটনা ঘটনা আকছার ঘটে। অনেকেরই অভিযোগ, ভিড়ের মরসুমে পর্যাপ্ত নজরদারি বা সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকে না। বকখালি ম়়ডেল রাজ্যের অন্যত্রও চালু হবে তো, উঠছে প্রশ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy