Advertisement
E-Paper

পদ্মার ইলিশ কোথায়, হতাশ এ পার বাংলা

ও পার বাংলা থেকে ইলিশ আমদানির উপরে নিষেধাজ্ঞা এখনও তোলেনি বাংলাদেশ সরকার। রবিবার জামাইষষ্ঠীতে তাই জামাইকে পাঁঠার মাংস বা গলদা চিংড়িতেই বরণ করতে হচ্ছে শ্বশুর-শাশুড়িদের। আগামী কিছু দিনের মধ্যেও ইলিশ ঢোকার তেমন সম্ভাবনা আছে বলে শোনা যাচ্ছে না। তবে রাজ্যে ইলিশ আমদানিকারীদের অন্যতম সংস্থা ‘হিলশা’ সূত্রের খবর, মায়ানমার থেকে গত বর্ষায় নিয়ে আসা ইলিশ কোল্ডস্টোরে কিছু রাখা ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৫ ০৪:০৫

ও পার বাংলা থেকে ইলিশ আমদানির উপরে নিষেধাজ্ঞা এখনও তোলেনি বাংলাদেশ সরকার। রবিবার জামাইষষ্ঠীতে তাই জামাইকে পাঁঠার মাংস বা গলদা চিংড়িতেই বরণ করতে হচ্ছে শ্বশুর-শাশুড়িদের। আগামী কিছু দিনের মধ্যেও ইলিশ ঢোকার তেমন সম্ভাবনা আছে বলে শোনা যাচ্ছে না। তবে রাজ্যে ইলিশ আমদানিকারীদের অন্যতম সংস্থা ‘হিলশা’ সূত্রের খবর, মায়ানমার থেকে গত বর্ষায় নিয়ে আসা ইলিশ কোল্ডস্টোরে কিছু রাখা ছিল। তার কিছু বাজারে দেখা মিলতে পারে। তবে রবিবার সেই ইলিশ মিলেছে, বিভিন্ন জেলার বড় বাজারগুলি থেকেও তেমন খবর আসেনি।

বাংলাদেশের ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা এখনও প্রায় নেই বললেই চলে। জামাইষষ্ঠীর আগে চোরাপথে কিছু ইলিশ ঢুকবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত এলাকাতে সেই খবর নেই।

‘হিলশা’ সূত্রের খবর, বাংলাদেশে মূলত পদ্মা-মেঘনার মোহনা, বরিশাল, ভোলা, মনপুরা, পাথরঘাটা, চাঁদপুর থেকে ইলিশ আসে। এ বারও সেখানে ইলিশ না ওঠার কারণ নেই। কেননা ইতিমধ্যে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সমুদ্রের নোনা জল ছেড়ে স্বাদু জলের খোঁজে নদীতে আসতে শুরু করেছে ইলিশের ঝাঁক। ‘হিলশা’ সভাপতি অতুলচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘বাংলাদেশ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে শুধু এই জামাইষষ্ঠীতেই আমরা তিরিশ টন ইলিশ আমদানি করতে পারতাম।’’

পুব থেকে পশ্চিমে ইলিশ আসা প্রথম বন্ধ হয়েছিল ২০০৭ সালে। বাংলাদেশে ইলিশের দাম মধ্যবিত্তের নাগালে থাকছে না, এই যুক্তিতে রফতানি নিষিদ্ধ করে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় এসে ২০০৯ সালে ওই নিষেধাজ্ঞা আংশিক প্রত্যাহার করে সাইজ অনুযায়ী মাছ রফতানির দর বেঁধে দেয়। কিন্তু তার পরে ফের ও দেশের বাজারে ইলিশের দাম বাড়তে থাকে। ২০১২ সালের ৩১ জুলাই তিন মাসের জন্য পরীক্ষামূলক ভাবে ইলিশ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। তা আর ওঠেনি। এর পরে বারবার ঢাকার কাছে নিষেধাজ্ঞা তোলার আর্জি জানিয়েছে নয়াদিল্লি। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাংলাদেশ সফরে গিয়ে শেখ হাসিনাকে ইলিশ পাঠাতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি উল্টে বলেন, ‘তিস্তার পানি’ না পেলে ইলিশ দেওয়া যাবে না।

এমন নয় যে নিষেধাজ্ঞা জারি করে এ রাজ্যে ইলিশ ঢোকা পুরোপুরি বন্ধ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। প্রতি মরসুমেই চোরাপথে ঢুকছে ইলিশ। ফলে বাংলাদেশের ঘরোয়া বাজারে যতটা দাম কমা উচিত ছিল, ততটা কমেনি। বিপুল রাজস্ব থেকেও সে দেশের সরকার বঞ্চিত হচ্ছে। হিলশার মতে, সোজা পথে ইলিশ আমদানি বন্ধ থাকায় বরং লাভ হচ্ছে এ রাজ্যের অন্য মাছের কারবারিদের।

রাজ্যের ইলিশ আমদানিকারীরা এখন চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন বাংলাদেশ সফরের দিকে। ‘হিলশা’র অতুলবাবু বলেন, ‘‘আমরা চাই, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীও ফের এক বার বাংলাদেশে যান। তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি হয়ে গেলেই ফের এ রাজ্যে পদ্মার ইলিশ ঢুকবে।’’

বনগাঁর জয়শ্রী সরকার সদ্য মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বড় সাধ ছিল, সীমান্তপারের রুপোলি ইলিশ দিয়ে নতুন জামাইকে আপ্যায়ন করবেন। তাঁর কথায় ঝরে পড়ে খেদ, ‘‘আমার বিয়ের পরে প্রথম জামাইষষ্ঠীতে বাপের বাড়িতে বাংলাদেশের ইলিশ খাইয়েছিল। ভেবেছিলাম, আমার মেয়ে-জামাইকেও তা-ই খাওয়াব। তা আর হল কই! ’’

Bangladesh fish hilsa sk hasina padma
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy