জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে শুরু হওয়া বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর প্রভাব পড়ল রাজ্যের অন্যতম সামাজিক প্রকল্প ‘বাংলার বাড়ি’র বাস্তবায়নে। ডিসেম্বরের মধ্যেই দ্বিতীয় দফায় ১৬ লক্ষাধিক পরিবারকে বাড়ি নির্মাণের প্রথম কিস্তির অর্থ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে প্রশাসনিক ব্যস্ততার কারণে সেই টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া এ বার জানুয়ারিতে পৌঁছোচ্ছে।
সোমবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “এই প্রক্রিয়াটা এসআইআরের চাপে কিছুটা দেরি হয়েছে। তবে জানুয়ারির মধ্যেই ১৬ লক্ষ ৩৬ হাজার ৫২২টি পরিবারকে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা প্রদান সম্পূর্ণ হবে।” তাঁর দাবি, বরাদ্দকৃত টাকার প্রক্রিয়া এখন দ্রুতগতিতে চলছে এবং নির্ধারিত সময়ের সামান্য বিলম্বে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। রাজ্যের তরফে ইতিমধ্যেই প্রথম দফায় প্রায় ১২ লক্ষ উপভোক্তা বাড়ি নির্মাণের অর্থ পেয়েছেন। কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ হওয়ার পর এই প্রকল্প পুরোপুরি রাজ্যের নিজস্ব খরচে চালানো হচ্ছে বলেও সোমবার ফের স্মরণ করিয়ে দেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী।
এ দিন বাংলার বাড়ি ছাড়াও শিল্প, সড়ক ও পরিকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। শিল্পোদ্যোগ বাড়াতে রাজ্যের ডব্লিউবিআইডিসি–র বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে নতুন প্লট বরাদ্দ করা হবে। কোচবিহার, কল্যাণী, উলুবেড়িয়া, বিষ্ণুপুর ও ফলতা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে সাতটি প্লট নতুন শিল্পোদ্যোগীদের হাতে যাচ্ছে। এই জমি শিল্প সম্প্রসারণ, নতুন উৎপাদন ইউনিট স্থাপন এবং পরিকাঠামো উন্নয়নে ব্যবহৃত হবে।
অন্যদিকে, গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে বড়সড় ঘোষণা করা হয়েছে পথশ্রী প্রকল্পে। গ্রামীণ অংশে প্রায় ৯,০০০টি নতুন রাস্তা নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার মোট দৈর্ঘ্য ১৫,০১১ কিলোমিটার। শহর অঞ্চলে ‘পথশ্রী আরবান’–এ ১১,৩৬৫টি রাস্তা নির্মাণ করা হবে, মোট দৈর্ঘ্যে যা প্রায় ৫,০১৯ কিলোমিটার। চলতি অর্থবর্ষেই এই রাস্তাগুলির নির্মাণ শেষ হবে বলে জানান চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, “গ্রাম ও শহর— দুই ক্ষেত্রেই যাতে মানুষের চলাচল আরও সহজ হয়, সেই লক্ষ্যেই প্রকল্প বাস্তবায়ন দ্রুততর করা হচ্ছে।”