প্রতীকী ছবি।
সাতসকালে বেশ কিছু ক্ষণ ধরে তাঁর হাঁকডাকেও বাড়ির কেউ বেরিয়ে আসেননি। তাতেই সন্দেহ হয় ওই বাড়ির পরিচারিকার। প্রতিবেশীদের পাশাপাশি ওই বাড়ির গ়ৃহকর্ত্রীর মেয়ে-জামাইকেও ডেকে আনেন তিনি। ঘরে ঢুকে তাঁরা দেখেন, বাড়ির গৃহকর্ত্রীর ভাইয়ের দেহ গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলন্ত। পাশের তালাবন্ধ ঘরে পড়েছিল গৃহকর্ত্রী ও তাঁর ছেলের নিথর দেহ। রবিবার পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের একই বাড়ি থেকে মা-ছেলে এবং মামার দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কেন এই মর্মান্তিক পরিণতি হল একই বাড়ির তিন বাসিন্দার? প্রশ্ন স্থানীয়দের। তিনটি দেহ উদ্ধারের পর বাড়ছে রহস্য।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার মন্তেশ্বরের খান্দরা গ্রামের বাসিন্দা মালবিকা চক্রবর্তী (৫০), তাঁর ছেলে কৌশিক চক্রবর্তী (২৪) এবং মালবিকার ভাই উৎপল চট্টোপাধ্যায় (৪২)-এর দেহ তাঁদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার মালবিকার ওই বাড়ির একটি ঘরে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছিল উৎপলের দেহ। ঠিক তার পাশের ঘরের বিছানায় উৎপলের দিদি মালবিকা ও ভাগ্নে কৌশিকের দেহ পড়েছিল। স্থানীয়দের থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহগুলি উদ্ধার করে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ। তবে একই দিনে পরিবারের তিন সদস্যের এমন মৃত্যু নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পাঁচ বছর আগে মালবিকার স্বামী মারা যান। তার পর থেকেই নাদনঘাট থানার দীর্ঘপাড়ায় নিজের বাড়ি ছেড়ে মালবিকাদের বাড়িতে চলে আসেন উৎপল। সে সময় থেকেই মন্তেশ্বরের বাড়িতেই থাকতে শুরু করেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রতি দিনের মতো রবিবার সকালেও মালবিকার বাড়িতে কাজ করতে এসেছিলেন তাঁদের পরিচারিকা। তবে হাঁকডাক করেও বাড়ির কারও সাড়া না পেয়ে পরিচারিকাই প্রতিবেশীদের ডাকেন। এর পর ওই এলাকা থেকে মালাবিকার মেয়ে-জামাইকেও ডেকে আনেন। তাঁরাই মালবিকার বাড়িতে গিয়ে একটি ঘরে উৎপলকে গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পাশের ঘরটি তালাবন্ধ ছিল। এর পর সেই ঘরের তালা ভেঙে মালবিকা ও তাঁর ছেলের নিথর দেহ উদ্ধার হয়। তিন জনকে উদ্ধার করে মন্তেশ্বর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দিদি ও ভাগ্নেকে বেশি মাত্রায় ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তাঁদের ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে দরজায় তালা দিয়ে দেন উৎপল। এর পর আত্মঘাতী হন তিনি। মালবিকাদের ঘর থেকে অনেক ঘুমের ওষুধ পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে কী কারণে এই তিন জনের একসঙ্গে এই পরিণতি হল, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy