Advertisement
E-Paper

পানাগড়ে হোটেলে হানা, জালে তিন পাচারকারী

ওই দলটির সঙ্গে মাদক রয়েছে, এই সন্দেহে খবর দেওয়া হয় নারকোটিক্স দফতরে। এর পরেই ওই দফতরের আধিকারিক, সিআইডি এবং কাঁকসা থানার পুলিশ হোটেলটি ঘিরে ফেলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৫
গ্রেফতার: মাদক পাচারের অভিযোগে ধরা হয়েছে এই তিন জনকেই। নিজস্ব চিত্র

গ্রেফতার: মাদক পাচারের অভিযোগে ধরা হয়েছে এই তিন জনকেই। নিজস্ব চিত্র

সন্ধ্যা সাতটা, সাড়ে সাতটা। লক্ষ্য, একটি হোটেলের ঘর। ততক্ষণে হোটেলটি ঘিরে ফেলেছে সাদা পোশাকের গোয়েন্দা, পুলিশ এবং নারকোটিক্স দফতরের মিলিত দল। ‘সুযোগ’ বুঝেই অভিযান শুরু। মাদকপাচারকারী সন্দেহে গ্রেফতার করা হল পঞ্জাবের এক যুবক ও দুই তরুণীকে। পাচারকারীদের এক জন অবশ্য দোতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে পগারপার হয়ে যায়। সোমবার কাঁকসার পানাগড়ে এ ভাবেই চলল অভিযান।

পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম, জগদীশ সিংহ, হরপ্রীত কৌর, মনপ্রীত কৌর। তাঁরা প্রত্যেকেই পঞ্জাবের অমৃতসরের বাসিন্দা। কী ভাবে দলটির হদিস মেলে? কাঁকসা থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছু দিন ধরেই দু’জন যুবক ও দু’জন তরুণীর ওই দলটির উপরে নজর রাখছিল সিআইডি। বিশেষ সূত্রে খবর মেলে, সোমবার বিকেলে পঞ্জাবের নম্বরপ্লেট থাকা একটি গাড়িতে চড়ে ওই চার জন পানাগড় বাইপাসের লাগোয়া ওই হোটেলে ওঠে।

ওই দলটির সঙ্গে মাদক রয়েছে, এই সন্দেহে খবর দেওয়া হয় নারকোটিক্স দফতরে। এর পরেই ওই দফতরের আধিকারিক, সিআইডি এবং কাঁকসা থানার পুলিশ হোটেলটি ঘিরে ফেলে। পুলিশ জানায়, ‘বিপদ’ বুঝে এক যুবক হোটেলের দোতলার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে চম্পট দেয়। বাকি তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সিআইডি-র আধিকারিকরা ওই চার জন যে গাড়ি চড়ে এসেছিল, তার নানা যন্ত্রাংশ খুলে তল্লাশি শুরু করেন। তখনই উদ্ধার হয় একটি আগ্নেয়াস্ত্র। তবে শেষ পর্যন্ত মাদক মেলেনি। গোয়েন্দা ও পুলিশের দাবি, ধৃতরা জেরায় স্বীকার করেননি, তাঁরা মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘ধৃতদের কাছে একটি বেআইনি নাইন এমএম পিস্তল মিলেছে। তবে এ পর্যন্ত মাদক উদ্ধার হয়নি।’’

তবে এই দলটি পঞ্জাব থেকে মাদক (সম্ভবত নানা ধরনের ড্রাগ) এনে রাজ্যের নানা প্রান্তে পাচার করত বলেই পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দাবি। তা হলে ধৃতদের কাছ থেকে মাদক মেলেনি কেন? গোয়েন্দাদের দাবি, মাদক সরবরাহের কাজ শেষ করে ওই দলটি পানাগড়ের হোটেলে উঠেছিল। সম্ভবত, এই হোটেলেই ওই দলটির সঙ্গে অন্য মাদক কারবারিদের টাকার লেনদেন হওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার দুর্গাপুর আদালতে ধৃতদের মধ্যে তোলা হলে দুই তরুণীর তিন দিন জেল-হাজত এবং যুবকের তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ
দেন বিচারক।

এর আগে এই এলাকা থেকেই মাস চারেক আগেই প্রায় দু’শো কেজি গাঁজা-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার আগেও একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু একই এলাকা থেকে বারবার এমন ঘটনা কেন? পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, এর কারণ এলাকাটির ভৌগলিক সুবিধা। কারণ, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগকারী অন্যতম পানাগড়–দুবরাজপুর রাজ্য সড়ক ও কলকাতা-দিল্লি দু’নম্বর জাতীয় সড়কের সংযোগকারী এলাকা পানাগড়ের দার্জিলিং মোড়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই এখান থেকে রাজ্যের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়তে সুবিধা হয় পাচারকারীদের।

পরপর এমন ঘটনায় এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তবে কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, ওই এলাকায় বহু ধাবা ও হোটেল রয়েছে, যেগুলিতে দুষ্কৃতীরা নানা সময়ে এসে আশ্রয় নিচ্ছে। পুলিশের দাবি, ধাবা ও হোটেল মালিকদের বারবার সচিত্র পরিচয়পত্র ছাড়া ঘর ভাড়া না দেওয়ার অনুরোধ করেও লাভ হয়নি। এ বার তাই মাঝেসাঝেই অভিযান চালানো হবে বলে জানান পুলিশ কর্তারা।

Drug traffickers Drug Arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy