E-Paper

প্রাণ হাতে বৈষ্ণো দেবী থেকে জম্মু পৌঁছলেন শহরের চার বন্ধু

মঙ্গলবার রাত রাত ৯টা ৫০ মিনিটে জম্মু স্টেশন থেকে তাঁদের ট্রেন ধরার কথা ছিল। গাড়িতে কাটরা থেকে জম্মু পৌঁছতে সাধারণত সওয়া এক ঘণ্টার কাছাকাছি লাগে।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৫ ০৯:২৩
বৈষ্ণোদেবীতে বিপর্যয়।

বৈষ্ণোদেবীতে বিপর্যয়। নিজস্ব চিত্র।

বৈষ্ণো দেবী দর্শন করে জম্মু ফেরার পথে ধস ও প্রবল বৃষ্টিতে সমস্যায় পড়লেন দুর্গাপুরের চার পর্যটক। মঙ্গলবার পথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকার পরে, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ভোরে জম্মু পৌঁছলেও, বুধবার সারা দিন ট্রেন বাতিল ও বিমানের টিকিট না থাকায় কার্যত হোটেলে বন্দি হয়ে থাকতে হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।

দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের বেসরকারি কারখানার কর্মী সঞ্জয় চক্রবর্তী, প্রাক্তন বায়ুসেনা কর্মী পিন্টু সিংহ, ডিএসপির কর্মী সুশান্তকুমার ঘোষ ও ডিএসপি টাউনশিপের বি-জ়োনের বাসিন্দা, একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্ণধার প্রদীপকুমার প্রামাণিকেরা জানান, প্রায় প্রতি বছরই তাঁরা বৈষ্ণো দেবী যান। এ বারও সে ভাবেই বেরিয়েছিলেন ২৩ অগস্ট। ২৫ অগস্ট ভোরে কাটরা পৌঁছে, সে দিনই বৈষ্ণো দেবী দর্শনে বেরিয়ে যান তাঁরা। যাওয়ার সময় তাঁরা তারাকোট মার্গের কম দূরত্বের রাস্তা ধরে যান। কিন্তু দর্শন সেরে নামা শুরু করতেই অঝোরে বৃষ্টি নামে। সঙ্গে ধস। তারাকোট মার্গের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। তাই আর একটি পথ, অর্ধকুঁয়ারীর রাস্তা ধরে তাঁরা নামতে থাকেন। সঞ্জয় বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সকাল ৬টা নাগাদ নীচে নামি। আমরা পেরিয়ে আসার পরেই ওই রাস্তায় ধস নেমে কয়েক জনের প্রাণহানি হয় বলে জেনেছি। বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছি!’’

তাঁরা জানান, মঙ্গলবার রাত রাত ৯টা ৫০ মিনিটে জম্মু স্টেশন থেকে তাঁদের ট্রেন ধরার কথা ছিল। গাড়িতে কাটরা থেকে জম্মু পৌঁছতে সাধারণত সওয়া এক ঘণ্টার কাছাকাছি লাগে। কিন্তু টানা বৃষ্টি দেখে তাঁরা সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদই জম্মু রওনা হন। ধীর গতিতে গাড়ি এগোতে থাকে। জম্মু থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে আটকে যায় সব গাড়ি। ধস নেমে বন্ধ হয়ে যায় যাতায়াত। সঞ্জয় জানান, উপর থেকে দু’-একটি পাথর এসেও পড়ে তাঁদের গাড়িতে। প্রাণ হাতে করে সময় কাটে। রাস্তার পাশে দু’-একটি ছোট ধাবা ছিল। সেখানেই বহু মানুষ ভিড় জমান। সঞ্জয়ের কথায়, ‘‘কোনও রকমে একটি বাটিতে সামান্য নুডলস ও চা পাওয়া যায়। ওই বিপদসঙ্কুল পরিবেশে তা জুটবে, সেটাও ভাবতে পারিনি!’’ রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ফের সামান্য চলাচল শুরু হয়। জাতীয় সড়ক ছেড়ে বাইপাস রাস্তা ধরে এগোয় তাঁদের গাড়ি। সঞ্জয় বলেন, ‘‘তাওয়াই নদীর সেতুর উপর দিয়ে জল বইছে দেখে চালক ভয় পাচ্ছিলেন। আমরা বললাম, আমাদের উপায় নেই। ভরসা করে চালককে এগোতে বলি। শেষে ভোরবেলা জম্মু পৌঁছে হাঁফ ছেড়ে বাঁচি!’’

তাঁরা জানান, জম্মুতে একটি হোটেলে রয়েছেন তাঁরা। মঙ্গলবার রাতের ট্রেন পাননি। বুধবার জম্মু রাজধানীর টিকিট কেটে রেখেছিলেন। কিন্তু সব ট্রেন বাতিল। বাসও বন্ধ। বিমানে ফেরার টিকিট নেই। সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ির লোকজন চরম উদ্বিগ্ন হয়ে রয়েছেন। বিমানের টিকিটের দামও খুব চড়া। তবু আমরা ভ্রমণ সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিমানের টিকিট জোগাড়ের চেষ্টা চালাচ্ছি। কবে টিকিট পাব, সেই অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Vaishno Devi katra

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy