Advertisement
E-Paper

খুনের পরে বিক্ষোভও দেখায় জামাল

পূর্বস্থলীর বাবুইডাঙা গ্রামে ৪ ডিসেম্বর সকালে বছর চোদ্দোর আর্শেদ শেখের দেহ উদ্ধার হয়। সোমবার পুলিশ ওই গ্রামেরই বাসিন্দা জামালকে গ্রেফতার করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৫৪
—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

সর্ষেখেতে কিশোরের দেহ উদ্ধারের পরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন গ্রামবাসীরা। তাতে সে-ও শামিল হয়েছিল। ঘটনার তদন্ত করে দোষীর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছিল বছর আটত্রিশের জামাল শেখ। কিন্তু ঘটনার তিন সপ্তাহের মাথায় খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে সে নিজেই।

পূর্বস্থলীর বাবুইডাঙা গ্রামে ৪ ডিসেম্বর সকালে বছর চোদ্দোর আর্শেদ শেখের দেহ উদ্ধার হয়। সোমবার পুলিশ ওই গ্রামেরই বাসিন্দা জামালকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক অশান্তির জেরে আর্শেদের মা কাটু বিবি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপেরবাড়িতে চলে এসেছিলেন। সেখানেই তিনি আর্শেদের জন্ম দেন। বছর আটেক পরে তাঁর মৃত্যু হয়। মোর্শেদ কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তিনি দ্বিতীয় বিয়েও করেছেন।

আর্শেদের সঙ্গে মোর্শেদের কখনও দেখা হয়নি। পুলিশের দাবি, এ কথা জানার সুযোগ নিয়ে জামাল মোর্শেদকে ফোন করে তাঁর ছেলে বলে পরিচয় দেয়। অর্থাভাবে পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে তাঁর কাছ থেকে দু’দফায় ১৩ হাজার টাকা নেয়। মোর্শেদ পুলিশকে জানিয়েছেন, এর পরে ‘ছেলে’ মোটরবাইকের আব্দার করায় তাঁর সন্দেহ হয়। তা ছাড়া ফোনে নানা সময়ে ছেলের নানা রকম কণ্ঠস্বরেও তাঁর সন্দেহ বাড়ছিল। তিনি তাকে জানান, খুব তাড়াতাড়িই গ্রামে এসে দেখা করবেন তার সঙ্গে।

পুলিশের দাবি, জামালকে জেরা করে জানা গিয়েছে, মোর্শেদের এই কথায় ভয় পেয়ে সে প্রতারণা ঢাকার জন্য আর্শেদকে খুন করার ছক কষে। ৩ ডিসেম্বর স্কুল থেকে ফিরে পাশের গ্রামে একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিল আর্শেদ। সন্ধ্যার মুখে রাস্তায় তাকে আটকায় জামাল। মাঠে একটা ঔষধি গাছ আনতে তার সঙ্গে যেতে বলে আর্শেদকে। সে রাজি হয়ে যায়। তদন্তকারীদের দাবি, ধৃত জেরায় তাঁদের জানিয়েছে, সর্ষেখেতের কাছে নিয়ে গিয়ে নানা কথার ফাঁকে একটি ভাঙা ইট দিয়ে আর্শেদের মাথায় আঘাত করে জামাল। মাটিতে পড়ে ছটফট করার সময়ে শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করে দেহ মাঠে ফেলেই পালিয়ে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পর দিন এলাকার লোকজন যখন ঘটনাস্থলে ভিড় করে, সেখানে হাজির হয় জামালও। অপরাধীকে গ্রেফতার করার দাবি তোলে সে-ও। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক সময়ে জামালের পরিবারের বাস ছিল নদিয়ায়। পরে তার বাবা সেরাজুল শেখ তামাঘাটা, আটপাড়া হয়ে বাবুইডাঙা গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। জামাল তাঁতের শাড়ি বোনার কাজ করত।

জেলার এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘জামালের নামে কোনও দুষ্কর্মের রেকর্ড নেই। কিন্তু মোর্শেদের কাছে টাকা হাতানোর পরে ও বুঝে গিয়েছিল, প্রতারণার কৌশল দ্রুত ধরা পড়ে যাবে। তাই তড়িঘড়ি আর্শেদকে খুন করে।’’ জামালকে মঙ্গলবার থেকে ৮ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। তাকে আরও জেরা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বুধবার মোর্শেদ শেখের বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর ফোনটি বন্ধ ছিল। পুলিশ জানায়, কাটোয়ার অগ্রদ্বীপের বাসিন্দা মোর্শেদের কাছে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে। তাঁকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

Crime Murder Arrest Protest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy