Advertisement
০৬ মে ২০২৪

ফের নিয়োগ জটে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়

নিয়োগ-সংক্রান্ত ভুলের জালে ক্রমশ জড়িয়ে পড়ছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৮
Share: Save:

নিয়োগ-সংক্রান্ত ভুলের জালে ক্রমশ জড়িয়ে পড়ছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

২০১৫ সালের ৭ এপ্রিল টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্টের ১৯টি পদের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন তৎকালীন রেজিস্ট্রার রজত ভট্টাচার্য। ওই বিজ্ঞাপনে ‘টেম্পরারি সার্ভিস’ বলে উল্লেখ ছিল। কিন্তু ঘটনা হল, চাকরি প্রার্থীদের তিনটি পর্যায়ে পরীক্ষা দেওয়ার পর ওই পদের জন্য ১৯ জনকে নিয়োগ করা হয়। তাঁদের নিয়োগ সংক্রান্ত দুটি চিঠিতেই ‘পাকা’ চাকরির বন্দোবস্ত বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু গোল বাধল এক বছর পর নিয়োগ ‘কনফার্ম’ করার সময়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির এক সদস্যের কথায়, “গত ২২ জানুয়ারি কর্মসমিতির সভায় ওই নিয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে ঠিক হয়, টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট পদের কর্মীদের চাকরি থেকে একটা দিন বসিয়ে দেওয়া হবে। তারপরে অস্থায়ী ভাবে ফের নিয়োগ করা হবে।” ওই কর্মসমিতির সিদ্ধান্তেই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসককে ‘অস্থায়ী’ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি গত বছরের ১৬ জানুয়ারী নিয়োগ হয়েছিলেন। এ বছর চাকরি পাকা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি ‘অস্থায়ী’ হয়ে থেকে গেলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের খবর, প্রাক্তন রেজিস্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যায়, রজত ভট্টাচার্য এবং বর্তমান রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজার আমলেও বিজ্ঞাপনে একই ‘ভুল’ রয়েছে। কী সেই ভুল?

এক আধিকারিকের কথায়, “স্থায়ী নিয়োগ নিশ্চিত করার আগে এক বা দু’বছর শিক্ষানবিশ থাকতে হয়। কিন্তু ওই সব পদগুলি স্থায়ী হলেও বিজ্ঞাপন করা হয়েছিল ‘অস্থায়ী’ বলে। আবার নিয়োগপত্রে স্থায়ী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে আক্ষরিকভাবে একটা সমস্যা থেকেই যাচ্ছে।”

টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে নিয়োগ নিয়ে তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারীদের একটি অংশ সরব। তাঁদের উদ্যোগেই তথ্য জানার অধিকার আইনে বিষয়টি জানতে চেয়ে চিঠিও করা হয়েছে। যদিও ওই সব কর্মীদের দাবি, তাঁরা এ ব্যাপারে এখনও কিছুই জানেন না। কর্মসমিতি কেন এ রকম অমানবিক সিদ্ধান্ত নিতে যাবে, সেটাও তাঁদের মাথায় ঢুকছে না।

যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন দফতরের ধারণা, স্থায়ী কর্মীকে বিজ্ঞাপনের কারণ দেখিয়ে ‘অস্থায়ী’ করে দিলে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়াতে পারে।

নিয়োগের ব্যাপারে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষণ ঠিক ভাবে মানা হয় না বলে প্রশ্ন তুলেছিল তফশিলি জাতি, উপজাতি ও অনগ্রসর দফতর। সেখান থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগের ব্যাপারে কোনও সংরক্ষণ-নিয়ম মানা কার্যত মানা হয়নি।

২০১৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিভাগে ‘প্রোগ্রামার’ নিয়োগ নিয়ে বিজ্ঞাপন হয়। তফশিলিদের জন্য সংরক্ষিত পদটিকে সাধারণ বলে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এরপরেই প্রশাসনের বিভিন্নস্তরে চিঠি ও তথ্য জানার অধিকার আইনে মামলা করেন তফশিলিদের সংগঠন।

বিষয়টি নিয়ে কৈফিয়ৎ তলব করে কমিশন। শেষ পর্যন্ত সাধারণ থেকে ওই পদটিকে ফের তফশিলীদের জন্য সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নোটিশ জারি করেন রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজা। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ফর্ম পূরণের জন্য আবেদনকারীদের খরচ বিশ্ববিদ্যালয় ফিরিয়ে দেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Burdwan university
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE