মোটরবাইক নিয়ে পাশ দিয়ে পেরনোর সময়ে টান মেরে মহিলা পথচারীর গলার হার ছিনিয়ে নিল আরোহীরা— বছর কয়েক আগে মাঝে-মধ্যেই শোনা যেত এমন ঘটনা। পুজোর আগে ফের সেই স্মৃতি ফিরে এল দুর্গাপুরে। শনিবার সন্ধ্যায় শহরে পরপর দু’জন মহিলার হার ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। তাতে তারা সফল না হলেও মোটরবাইকের ধাক্কায় জখম হয়েছেন এক মহিলা। পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। যদিও মহিলারা লিখিত অভিযোগ করেননি।
সেল কো-অপারেটিভ এলাকার সুকুমার সরণির বাসিন্দা, বাহাত্তর বছর বয়সী পার্বতী মল্লিক জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যায় তিনি পাড়ার একটি মন্দিরে যান। শনিবার সন্ধ্যায় মন্দির থেকে ফেরার পথে হঠাৎ সামনে থেকে একটি মোটরবাইক এসে তাঁর চোখে চড়া হেডলাইটের আলো ফেলে। তাঁর চোখ ধাঁধিয়ে যায়। সেই সময় মোটরবাইকটি তাঁকে ধাক্কা মারে। তিনি পড়ে যান। দুষ্কৃতীরা তাঁর গলার হার ধরে টান মারে। কিন্তু হার না ছেঁড়ায় দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। আশপাশের বাসিন্দারা পার্বতীদেবীকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেন। পরে তাঁকে ডিএসপি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁর ডান হাতের কব্জির হাড় ভেঙে গিয়েছে। চোখের নীচের অংশ ফুলে গিয়েছে। তাঁর স্বামী শচীনন্দন মল্লিক বলেন, ‘‘গোষ্ঠপাল সরণি ও দীনবন্ধু সরণির মোড়ে ঘটনাটি ঘটে। আমরা আতঙ্কে আছি।’’
ওই সন্ধ্যায় প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটে কিছুটা দূরে মাতঙ্গিনী হাজরা লেনের কাছে। পেশায় শিক্ষিকা কাকলি গুপ্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে এক পরিচিতের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সেই সময়ে তাঁর চোখে মোটরবাইকের আলো ফেলে একই কায়দায় হার ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়। তিনি সতর্ক হয়ে সরে যাওয়ায় পিছনে বসে থাকা দুষ্কৃতীর থাপ্পড় পড়ে তাঁর গালে। কাকলীদেবী জানান, চালকের মাথা হেলমেটে ঢাকা, পিছনের আরোহীর মাথা ফাঁকা ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতার ও পুলিশি টহল বাড়ানোর আশ্বাস দেয় তারা।
মোটরবাইকে চেপে এসে হার ছিনতাইয়ের পরপর ঘটনা এক সময় শিল্পশহরে আতঙ্ক তৈরি করেছিল। সন্ধের পরে হেঁটে রাস্তায় বেরোতে ভয় পেতেন মহিলারা। বছর চারেক আগে সিটি সেন্টার, সেপকো টাউনশিপ, ডিএসপি টাউনশিপের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি হার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। দুষ্কৃতীদের হামলায় জখম হন বেশ কিছু বয়স্ক মহিলাও। তবে পুলিশ টহলদারি শুরু এবং কিছু অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। দুর্গাপুজোর আগে সেই দুষ্কৃতীরাই আবার নতুন করে রাস্তায় নেমেছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy