Advertisement
E-Paper

রাতে বন্ধ রাখা যন্ত্রই কি বাড়াচ্ছে বিপদ

দুর্গাপুর দূষণে কালো হয়েছে গাছের পাতাও।তবুও হেলদোল নেই প্রশাসনের।

অর্পিতা মজুমদার

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ০৪:০৪
 দুর্গাপুর দূষণে কালো হয়েছে গাছের পাতাও।

দুর্গাপুর দূষণে কালো হয়েছে গাছের পাতাও।

শিল্পাঞ্চল পুরোপুরি দূষণমুক্ত হয় না। তা নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে নানা ব্যবস্থা। কিন্তু দুর্গাপুরে দূষণ নিয়ন্ত্রণের বালাই নেই, কয়েক দশক ধরেই অভিযোগ করে আসছেন বাসিন্দারা।

দেশ স্বাধানী হওয়ার বছর কয়েক পরে মায়াবাজারে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলে ডিভিসি। ছয়ের দশকে ডিএসপি, ডিপিএল, এএসপি-র মতো কারখানা গড়ে ওঠে এ শহরে। তার পরে এমএএমসি, এইচএফসিএল, বিওজিএল, ডিসিএল থেকে পিসিবিএল, এবিএলের মতো নানা সরকারি-বেসরকারি কারখানা গড়ে ওঠে। দূষণের মাত্রাও বাড়ে পাল্লা দিয়ে। বেশ কিছু কারখানা পরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আবার নয়ের দশকে নতুন করে গড়ে উঠেছে নানা বেসরকারি স্পঞ্জ আয়রন, পিগ আয়রন, ফেরো ম্যাঙ্গানিজ কারখানা। এর পরে দূষণ মাত্রাছাড়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

শহরের সগরভাঙা, অঙ্গদপুর, রাতুরিয়া, ডিটিপিএস কলোনি থেকে অভিজাত সিটি সেন্টার, ননকোম্পানি বা বিধাননগর— দূষণ থেকে রেহাই নেই কোনও এলাকাতেই। পুকুরের জলে পুরু আস্তরণ। বাড়ির উঠোনে, বারান্দায় কালো ছাপ। দরজা-জানলা খুলে রাখার উপায় নেই। শ্বাস নিতে সমস্যা হয় অনেকের। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনে দূষণের মাত্রা কম থাকলেও সন্ধ্যা নামলেই রাস্তায় খালি চোখে হাঁটা বা মোটরবাইক নিয়ে যাওয়ার সময়ে চোখ জ্বালা করে।

শহরবাসীর অভিযোগ, অতিরিক্ত মুনাফার লোভে বিদ্যুৎ খরচ বাঁচাতে বহু কারখানা দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র ব্যবহার করে না। ফলে, বাতাসে বিপজ্জনক ভাসমান কণা বেড়ে যায়। কার্বন, সিলিকা, অ্যাসবেস্টস, লোহা, ম্যাঙ্গানিজ আকরিকের গুঁড়ো, কয়লার গুঁড়ো বাতাসে ভেসে বেড়ায়। চিকিৎসকদের মতে, দূষণ থেকে শহরে শ্বাসকষ্ট-জনিত নানা সমস্যা, ‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ’ (সিওপিডি), চোখের সংক্রমণ, এমনকি ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে। পরিবেশ দফতর জানায়, তুলনায় বড় বা মাঝারি নাকের নানা অংশে আটকে যায়। কিন্তু, ২.৫ মাইক্রন আকারের কণা ফুসফুসে গিয়ে সংক্রমণ ছড়ায়।

দামোদরের জল শহরের বড় ভরসা। তাতেও মিশছে কারখানা থেকে নির্গত রাসায়নিক বর্জ্য। সেই জল শোধন করে পানীয় হিসাবে সরবরাহ করা হয়। দুর্গাপুরে পরিশোধিত জল রাসায়নিকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত কি না, প্রায় দেড় দশক আগে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল খড়গপুর আইআইটি-র একটি সমীক্ষক দল।

শহরবাসীর দাবি, দিনে কিছু কারখানা দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র ব্যবহার করে। কিন্তু, রাতে উৎপাদন খরচ বাঁচাতে সেই যন্ত্র খুলে দেওয়া হয়। তাই সন্ধ্যা নামলে দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। বেসরকারি কারখানার মালিকদের অবশ্য দাবি, অধিকাংশই নিয়ম মেনে উৎপাদন করে। তবে কয়েকটি তা মানে না। তাদের জন্য বাকিদের দুর্নাম হয়। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু বেসরকারি কারখানা নয়, ডিপিএলের মতো সরকারি সংস্থাকেও দূষণ ছড়ানোর জন্য জরিমানা দিতে হয়েছে। তবে শহরের পরিস্থিতি পাল্টায়নি।

(চলবে)

Air Pollution Environment Pollution Durgapur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy