Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
নর্থ সিহারসোল

আধিকারিককে নিগ্রহের নালিশ, কাজ বন্ধ খনিতে

আধিকারিককে মারধরের অভিযোগে ঘণ্টা দুয়েক খনির কাজ বন্ধ রাখল খনির দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা। পরে ইসিএল কর্তৃপক্ষের আশ্বাস পেয়ে কাজ শুরু হয়।

তখনও চালু হয়নি কাজ। নিজস্ব চিত্র।

তখনও চালু হয়নি কাজ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৫৩
Share: Save:

আধিকারিককে মারধরের অভিযোগে ঘণ্টা দুয়েক খনির কাজ বন্ধ রাখল খনির দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা। পরে ইসিএল কর্তৃপক্ষের আশ্বাস পেয়ে কাজ শুরু হয়। জামুড়িয়ার কুনস্তরিয়া এরিয়ার নর্থ সিহারসোল প্যাচে গোটা ঘটনার পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দায়ী বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। তবে পুলিশের কাছে মারধরের কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।

গত বিধানসভা ভোটে দলের জামুড়িয়ায় প্রার্থী হয়ে হেরে যান তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন। তার পরেই এলাকায় দলের নেতৃত্বে রদবদল আনা হয়। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, নর্থ সিহারসোল প্যাচ এলাকায় আগে দলের তরফে দায়িত্বে ছিলেন সুজিত তফাদার। ভোটের পরে তাঁকে সরিয়ে লালু মাজিকে নেতৃত্বে আনা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুজিতবাবুর অনুগামীদের একটি ক্লাবের সরস্বতী পুজো নিয়ে এলাকায় চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। শুক্রবার সেই পুজোর খাওয়াদাওয়ার কথা ছিল। সুজিতবাবু অভিযোগ করেন, খিচুড়ি রান্নার জন্য এরিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেই ক্লাবের সদস্যেরা কয়লা আনতে প্যাচে গিয়েছিলেন। ভ্যানে কয়লা বোঝাই করা শুরু হতেই লালুবাবুর নেতৃত্বে এক দল লোক হামলা চালায়। ক্লাবের জনা পাঁচেক সদস্যকে মারধর করা হয়। বাধা দিতে গিয়ে খনির ঠিকাদার সংস্থার এক আধিকারিকও প্রহৃত হন বলে অভিযোগ। এর পরে পুলিশের হাতে কয়লা বোঝাই ভ্যানটি তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ এক জনকে আটক করে, পরে ছেড়ে দেয়।

সুজিতবাবু দাবি করেন, ‘‘আসলে ওরা কয়লা চুরি করতে পারছে না। তাই ছুতো খুঁজে প্যাচের আধিকারিককে মারধর করল। দলের গোটা বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ ঠিকাদার সংস্থার আধিকারিক পৃথ্বীশ মুখোপাধ্যায়েরও অভিযোগ, “কয়লা কাকে দেওয়া হবে, ঠিক করে ইসিএল। শুক্রবার বিকেলে আমি খনিগর্ভ থেকে উপরে উঠে দেখি, একটি পিক-আপ ভ্যানের সামনে ভিড়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়েক জন আমাকে মারধর করে।’’ তবে পুলিশে কোনও অভিযোগ করেননি তিনি।

তৃণমূলের জামুড়িয়া ১ ব্লক সভাপতি সাধন রায় অবশ্য বলেন, “লালু প্যাচে কাজ করছিল। খনিতে নেমে পিক-আপ ভ্যানে কয়লা তুলতে দেখে বাধা দেয়। বহিরাগত কেউ নয়, খনির অন্য কর্মীরাই দুষ্কৃতীদের তাড়িয়ে পুলিশে খবর দেয়। কোন কর্তাকে মারধর করেনি।” লালুবাবুরও দাবি, কয়লা পাচারে বাধা দেওয়া হয়েছে, কাউকে মারধর করা হয়নি।

আধিকারিককে মারধরের প্রতিবাদে ও নিরাপত্তার দাবিতে শনিবার খনিকর্মীরা কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখান। নর্থ সিহারসোল কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার আশ্বাস দিলে কাজ শুরু হয়। ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, ঘণ্টা দুয়েক কাজ বন্ধ ছিল। তবে সমস্যা সব মিটে গিয়েছে।

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, খনি লাগোয়া এলাকায় আবেদন জানালে পুজো-সহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে বিনা পয়সায় জ্বালানির কয়লা দেওয়া হয়। শুক্রবারও সে ভাবেই কয়লা দেওয়া হচ্ছিল। পুলিশ জানায়, কোনও লিখিত অভিযোগ না মেলায় আটক যুবক ও পিক-আপ ভ্যানটি ছেড়ে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Assault Allegation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE