Advertisement
E-Paper

ষষ্ঠীর সকালে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ, চলল বিক্ষোভ

চিকিৎসার গাফিলতিতে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ উঠল কালনা মহকুমা হাসপাতালে। শুক্রবার ভোরে কৃষ্ণদেবপুর এলাকার সাড়ে তিন বছরের সুবর্ণ পালের মৃত্যুর পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। অভিযুক্ত চিকিৎসক এবং নার্সের শাস্তি দাবি করেন তার পরিজনেরা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৪৬
কালনা হাসপাতালে চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

কালনা হাসপাতালে চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

চিকিৎসার গাফিলতিতে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ উঠল কালনা মহকুমা হাসপাতালে। শুক্রবার ভোরে কৃষ্ণদেবপুর এলাকার সাড়ে তিন বছরের সুবর্ণ পালের মৃত্যুর পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। অভিযুক্ত চিকিৎসক এবং নার্সের শাস্তি দাবি করেন তার পরিজনেরা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ওই শিশুটির পরিবারের দাবি, বমি এবং পেট ব্যথা নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় সুবর্ণকে। শরীর খারাপ থাকলেও হাঁটাচলা করতে পারছিল সে। সুবর্ণকে দেখেন হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ সঞ্জয়কুমার সহিস। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে শিশুটিকে হাসপাতালের শয্যায় শুইয়ে রাখার পরামর্শ দেন তিনি। অভিযোগ, রাত ১১টার পর থেকে তীব্র পেট ব্যথায় ছটফট করতে থাকে সে। শুরু হয় বমি। কিন্তু নার্সদের বারবার বলা সত্ত্বেও তাঁরা কোনও চিকিৎসককে ডাকেননি বলে অভিযোগ সুবর্ণর বাবা সুকান্তবাবুর। পুলিশকে লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, ওই সময় শিশু বিভাগে ডিউটিতে ছিলেন টুম্পা হালদার এবং সপ্তসোনা দাস নামে দুই নার্স। বারবার ডাক্তারকে খবর দেওয়ার কথা বললেন তাঁরা শিশুকে কোলে নিয়ে বারন্দায় ঘোরার পরামর্শ দিয়েই ছেড়ে দেন বলে তাঁর দাবি। সুকান্তবাবু বলেন, ‘‘ভর্তি থাকা অন্য শিশুদের অভিভাবকেরাও ছেলের অবস্থা দেখে ডাক্তার ডাকার কথা বলেন। কিন্তু ওরা কান দেননি।’’ সাড়ে তিনটে যন্ত্রণায় নিস্তেজ হয়ে পড় সুবর্ণ। তখন নার্সরা জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নিমাই বিশ্বাসকে ডেকে পাঠান। উনি একটি ইঞ্জেকশন দেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ছেলে মারা যায় বলে সুকান্তবাবুর দাবি।

খবর ছড়াতেই কৃষ্ণদেবপুর এলাকার বাসিন্দারা হাসপাতালে পৌঁছে যান। অভিযুক্ত চিকিৎসক এবং নার্সদের গ্রেফতারের দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরিস্থিতি দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশ ডাকেন। পৌঁছে যান কালনার আইসি এবং ওসি। আসেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। সুপারের ঘরে বৈঠকও বসে। ১১টা নাগাদ শিশুটির দেহ ময়না-তদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠানো হয়। তদন্তের আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভ থামে।

সুকান্তবাবু বলেন, ‘‘সারা রাত ধরে নার্সদের কাছে ডাক্তার ডাকার আর্জি জানিয়েছি। যদি এক জন বিশেষজ্ঞকে ডাকা হতো, তাহলে ছেলেটা এমন ভাবে প্রাণ হারাত না।’’ সুকান্তবাবুর বাবা বীরেন পালের দাবি, ‘‘বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নাতি অসুস্থ ছিল। শহরের এক শিশু চিকিৎসককে প্রথমে দেখানো হয়। তিনি হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে স্যালাইন দেওয়ার কথা বলেন। আমাদের দুর্ভাগ্য এত আকুতির পরেও কোনও চিকিৎসককে পেলাম না।’’ তাঁরও অভিযোগ, যতবার নার্সদের কাছে গিয়েছি ততবার নাতিকে কোলে নিয়ে ঘোরার পরামর্শ দিয়েছে।

হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। আমরা একটি বোর্ড তৈরি করে বিষয়টির তদন্ত করব। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাকে শাস্তি পেতে হবে।’’ বিধায়কও বলেন, ‘‘বমি, পেট ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয়ে যদি ফুটফুটে একটা শিশুকে মরতে হয় তার মতো দুর্ভাগ্যের আর কিছু হয় না।’’

Allegation kalna district hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy