Advertisement
E-Paper

জলাভূমি বুজিয়ে আবাসন নির্মাণ, নালিশ কালীগঞ্জে

জলাভূমি বুজিয়ে আবাসন নির্মাণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল দুর্গাপুর পুরসভা লাগোয়া জেমুয়া পঞ্চায়েতের কালীগঞ্জে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৫ ০০:৩০
ছাই ফেলে পুকুরের জায়গা দখল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র।

ছাই ফেলে পুকুরের জায়গা দখল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র।

জলাভূমি বুজিয়ে আবাসন নির্মাণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল দুর্গাপুর পুরসভা লাগোয়া জেমুয়া পঞ্চায়েতের কালীগঞ্জে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে যোগসাজস করে আবাসন নির্মাতারা এলাকার বহু জলাভূমি ভরাট করে আবাসন নির্মাণ করছেন বলে দুর্গাপুর-ফরিদপুর বিডিও-র কাছে অভিযোগ করেছেন পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের শ্রীকান্ত বাউড়ি। বিডিও শুভ সিংহরায় অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

গত কয়েক বছরে দুর্গাপুরে বহু কল-কারখানা, শপিংমল, মাল্টিপ্লেক্স, বেসরকারি নানা কলেজ, তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক গড়ে উঠেছে। কাজের সুবাদে বাইরে থেকে শহরে এসেছেন অনেকে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে বহুতল নির্মাতারা নতুন-নতুন বহুতল গড়তে শুরু করেন। তার অধিকাংশই পুরসভার বাইরে পঞ্চায়েত এলাকায়। কারণ, পুর এলাকায় জমির দাম বেশি। বহুতল নির্মাণের অনুমোদন পাওয়াও সময় এবং খরচসাপেক্ষ। তুলনায় পঞ্চায়েত এলাকায় সহজে জেলা পরিষদ থেকে অনুমোদন মেলে। নির্মাণ খরচও তুলনায় কম। অথচ, একেবারেই পুরসভা লাগোয়া এই সব এলাকার সঙ্গে শহরাঞ্চলের বিশেষ ফারাক নেই। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল রোডের এক দিকে রয়েছে জেমুয়া পঞ্চায়েতের কালীগঞ্জ, শঙ্করপুর, টেটিখোলা, সপ্তর্ষি পার্ক, গোল্ডেন পার্ক, ইন্দো-আমেরিকান পার্কের মতো এলাকা। অন্য পাশে দুর্গাপুরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড। গত কয়েক বছরে ওই সব এলাকায় বেশ কিছু বহুতল গড়ে উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালীগঞ্জে একটি ক্লাবের পাশের পুকুর সম্প্রতি ভরাটের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। লরিতে করে ছাই বয়ে এনে ফেলা হচ্ছে সেখানে। বাসিন্দারা ইতিমধ্যে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, এ ভাবে জলাভূমি ভরাট করে আবাসন নির্মাণ হলে পরিবেশের ক্ষতি হবে। তা ছাড়া এলাকায় পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। ফলে, আবাসন গড়ার কাজ থেকে শুরু করে আবাসিকদের জন্য পানীয় জল, সবই তোলা হবে ভূগর্ভ থেকে। এর ফলে জলস্তর আরও নেমে যাবে বলে আশঙ্কা বাসিন্দাদের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার কয়েক জন বাসিন্দার দাবি, ‘‘প্রতিবাদ করে কোনও লাভ নেই। কারণ, শাসক দলের স্থানীয় নেতাদের মদতেই এ সব হচ্ছে।’’ তাঁরা জানান, ইতিমধ্যে বিষয়টি তাঁরা পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএম নেতা শ্রীকান্ত বাউড়িকে জানিয়েছেন।

শ্রীকান্তবাবু জানান, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিডিওকে চিঠি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ পুকুর ভরাটে আবাসন নির্মাতাদের মদত দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিডিওকে দেওয়া চিঠিতে আমি সে কথা উল্লেখ করেছি।’’ সিপিএমের দুর্গাপুর ২ পূর্ব জোনাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকারের অভিযোগ, ‘‘নিয়মের তোয়াক্কা না করে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে যোগসাজস করে বহুতল নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ওই এলাকায়।’’

জলাশয় বোজানোর অভিযোগের আঙুল যাঁদের বিরুদ্ধে উঠেছে তাঁদের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তৃণমূলও মদত দেওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। দলের ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি সুনীল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি শুনেছি, জেলা পরিষদের কাছে প্রয়োজনীয় অনুমোদন না নিয়ে আবাসন নির্মাণ করতে পারেন না নির্মাতারা। কালীগঞ্জে ঠিক কী হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ বিডিও শুভ সিংহরায় বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। যুগ্ম বিডিওকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেছি। কোনও অনিয়ম হলে প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’’

Durgapur Allegation promoter Trinamool water body BDO
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy