Advertisement
E-Paper

ভোট লুঠ করেই কুর্সি রাখার চেষ্টা

প্রত্যাশিতই ছিল। শনিবার চিত্র ১: আসানসোলের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের নিশ্চিন্তা গ্রাম। এক সিপিএম কর্মীকে ঘরে বন্ধ করে রেখেছিল তৃণমূল। খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করতে যান ওই ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী মানিক রুইদাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৫ ০০:৪৬
তখনও বিসি কলেজে বহিরাগতদের হাতে আক্রান্ত হননি কংগ্রেস প্রার্থী কমলজিৎ সিংহ (ডান দিকে)।  ছবি: শৈলেন সরকার।

তখনও বিসি কলেজে বহিরাগতদের হাতে আক্রান্ত হননি কংগ্রেস প্রার্থী কমলজিৎ সিংহ (ডান দিকে)। ছবি: শৈলেন সরকার।

প্রত্যাশিতই ছিল। শনিবার

চিত্র ১: আসানসোলের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের নিশ্চিন্তা গ্রাম। এক সিপিএম কর্মীকে ঘরে বন্ধ করে রেখেছিল তৃণমূল। খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করতে যান ওই ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী মানিক রুইদাস। উদ্ধার করার পরে পুলিশের সামনে শাসকদলের কর্মীরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। বাঁ হাঁটু ভেঙে দেওয়া হয়। তাঁর স্ত্রী ও ভাইপোকেও মারধোর করা হয়। মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় এলাকার সিপিএম নেতা কান্তি চক্রবর্তীরও। সিপিএমের অভিযোগ, পুলিশের কর্তা নজরুল ইসলামের উপস্থিতিতেই তাঁদের উপরে যথেচ্ছ অত্যাচার চালিয়েছে শাসকদলের কর্মীরা।

চিত্র ২: আসানসোলের ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের ধ্রুবডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুপুর ২টো নাগাদ তৃণমূলের গুন্ডাদের বুথ লুঠ করতে আসার খবর ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা একজোট হয়েই দাঁড়িয়েছিলেন। ছিল বিজেপির লোকজনও। আচমকা তৃণমূল নেতা বৈজু ঠাকুরের নেতৃত্বে একদল বহিরাগত বুথে ঢুকতে যায়। বাসিন্দাদের বাধায় বহিরাগতরা পালালেও ধরা পরে যান বৈজু। তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন এলাকার বাসিন্দারা। জেলা হাসপাতালে ভর্তিও করানো হয়। পরিস্থিতি সামলাতে নামে পুলিশ বাহিনী।

চিত্র ৩: দুপুর আড়াইটে। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাল্লা হাসপাতালের কাছে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে গাড়িতে এসে দাঁড়ান জনা চারেক। শুরু হয় এলোপাথারি গুলি চালানো। উল্টো দিক থেকে কিছু সাধারণ ভোটার বুথে ঢুকছিলেন। সামনেই ছিল বিজেপির শিবির। অভিযোগ, তিন বিজেপি কর্মীর গায়ে গুলি লাগে। তাঁদের দু’জনকে গুরুতর অবস্থায় দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে।

কর্পোরেশন হওয়ার পরের প্রথম ভোটে সকাল থেকেই এমন গুলি-বোমা-রক্ত দেখল আসানসোল। বিরোধী থেকে সাধারণ ভোটার বাদ গেলেন না কেউ। মার জুটল তৃণমূলের কিছু নেতার কপালেও। বহিরাগত দুষ্কৃতী এনে ভোট লুঠ, বাইক-গাড়িতে বেলাগাম যাতায়াতও চলল। বিসি কলেজে বহিরাগতদের হাতে চড় খান কংগ্রেস প্রার্থী কমলজিৎ সিংহ। প্রশাসনের দাবি, দিনের শেষে ভোট পড়েছে ৭১ শতাংশ।

এ দিন ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের কুলটির মাজিদিয়া পার্ক এলাকার দুটি বুথেও ছাপ্পা দিতে আসার অভিযোগ ওঠে ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সেলিম আখতার আনসারির বিরুদ্ধে। সাধারণ মানুষকে নিয়ে প্রতিবাদ করেন ওয়ার্ডের নির্দল প্রর্থী সদ্য বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা আখতার হুসেন। দু’পক্ষের বচসা, মারধর বাধে। তৃণমূল প্রার্থী ও তাঁর এক আত্মীয়কে ধানবাদের একটি সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ছাড়াও খুচখাচ ভাঙচুরের অভিযোগ চলছিলই। হাটন রোড এলাকার রব্বানিয়া স্কুলের বুথে ইভিএম ভাঙচুরের অভিয়োগ ওঠে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। আধ ঘন্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে। পরে নতুন মেশিন এনে ভোট শুরু হয়। ভোটার না হয়েও বাইক বাহিনী এলাকা দাপানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের যুব নেতা পাপ্পু উপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ পুলিশের।

আসানসোলের তৃণমূল নেতা মলয় ঘটকের অবশ্য দাবি, ‘‘‘সারা দিন ধরে বিরোধীরা সন্ত্রাস চালিয়েছে। বাইরে থেকে লোক আনা হয়েছে। তবে এরপরেও আমরা অন্তত ৭৫টি আসন পাব।’’ সিপিএমের বংশগোপাল চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘বাঁকুড়া, মেজিয়া, ঝাড়খণ্ড, পুরুলিয়া থেকে লোক এনেছে তৃণমূল। ১২টি ওয়ার্ডে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি।’’ বিজেপির আসানসোল জেলা সাধারণ সম্পাদক তাপস রায়ও বলেন, ‘‘শাসকদলের গুলিতে জখম হয়েছেন আমাদের কর্মীরা। একাধিক জায়গায় ভোট লুঠ হয়েছে।’’ যদিও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলের কোনও বুথে পুনর্নির্বাচন হবে না।

asansol poll election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy