E-Paper

প্রবাসেই প্রতিমা গড়ে জমজমাট পুজো

২০১৫ সালে কর্মসূত্রে আটলান্টা যান তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী ঘোষ দম্পতি। ২০১৯ সালে পুজো শুরু। টানা ১৮ ঘণ্টা ধরে প্রতিমা তৈরি করেন অমিত নিজেই।

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৪৮
কাজে ব্যস্ত অমিত।

কাজে ব্যস্ত অমিত। নিজস্ব চিত্র ।

কর্মসূত্রে পাড়ি দিতে হয়েছে সাগরপাড়ে। কিন্তু পুজো এলেই মন ছুটে যায় প্রায় সাড়ে বাইশ হাজার কিলোমিটার দূরে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের ডোকরা গ্রাম নামে পরিচিত দ্বারিয়াপুরে। তবে ফেরা তো হয় না। দুঃখ ভুলতে আটলান্টাতেই নিজে মূর্তি গড়ে দুর্গাপুজো শুরু করেন অমিত ঘোষ। গত সাত বছর ধরে আটলান্টার ঘোষবাড়ির পুজো প্রবাসী বাঙালিদের অন্যতম গন্তব্য।

শহরের বাঙালি, অবাঙালিরা হুল্লোড় করে, খাওয়াদাওয়া, নাচেগানে মেতে ওঠেন ওই ক’দিন।অমিত বলেন, “প্রথম বছর সেভাবে কাউকে চিনতাম না। পুজোর সময় কয়েকটি প্রবাসী বাঙালি ক্লাবের পুজোয় গিয়েছিলাম। প্রত্যক্ষ ভাবে যোগ দিতে পারিনি। খুব মন খারাপ হয়েছিল। তারপরে নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে বাড়িতে দুর্গাপুজোর আয়োজন করি। প্রথম বছর ছয়-সাতটি পরিবার আমাদের পুজোয় যোগ দেন। বর্তমানে প্রায় ছ’শো মানুষ আসেন।’’

২০১৫ সালে কর্মসূত্রে আটলান্টা যান তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী ঘোষ দম্পতি। ২০১৯ সালে পুজো শুরু। টানা ১৮ ঘণ্টা ধরে প্রতিমা তৈরি করেন অমিত নিজেই। পুজোর বাকি কাজে সহযোদ্ধা হন স্ত্রী ঐন্দ্রিলা। এখন পুজোর চার দিন ধরে নানা অনুষ্ঠান, ভুরিভোজেরও আয়োজন থাকে। অমিত বলেন, ‘‘নির্ঘণ্ট মেনে নিষ্ঠা ভরে পুজো হয়। আমিই মূর্তি বানাই। এলাকার আরও কয়েকটি বাঙালি পরিবার আমাদের সাহায্য করেন। প্রতিমার সাজ-পোশাক প্রতিবছর নিয়ম করে কুমোরটুলি থেকে কিনে ক্যুরিয়ারে পাঠিয়ে দেন আমার মা তাপসী ঘোষ ও পিসিমা নীলিমা সিংহ। গ্রামের শিল্পীর কাছ থেকেই প্রতিমা তৈরি শিখেছি।’’ পুজোর মাস খানেক আগে থেকেই অফিস ফেরত প্রতিমা তৈরির কাজে লেগে পড়েন অমিত। হাত লাগায় তাঁর ১০ বছরের মেয়ে আরাত্রিকা এবং আট বছরের ছেলে আর্নিশও। পুজোর পরিকল্পনা থেকে রূপায়ন সবেই যোগ দেন শিলিগুড়ির ত্রিদিপ ও অঙ্কিতা পাল, খড়্গপুরের কৌশিক দাস, আসামের রেশমি বরুয়ারা। ঐন্দ্রিলা বলেন, ‘‘এ বারের থিম অরণ্যের মধ্যে দুর্গা। সেই মতো মণ্ডপসজ্জাও হচ্ছে। চণ্ডীপাঠ থেকে সন্ধিক্ষণে ১০৮ প্রদীপ জ্বালানো, সবই করি।’’ পৌরহিত্য করেন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য। তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে আটলান্টায় রয়েছেন। ঢাক বাজানো থেকে রান্নার দায়িত্ব সামলান সুমন হালদার। তাঁরা জানান, ছোটদের নাচ, মহিলাদের নবদুর্গা, পুরুষদের রামলীলার অনুষ্ঠান হয়। চার দিন ধরে প্রতিদিন দু’শো জনের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। ত্রিদিপ, অঙ্কিতা, কৌশিকেরা জানান, পুজোয় এখানেই দেশের মাটির গন্ধ পান তাঁরা। বছরভর দূরে থাকার রসদ জোগাড় হয় এখান থেকেই।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ausgram Atlanta

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy