Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Kalna

আপস নয়, কংগ্রেসের জয়ে পথে বৃদ্ধ প্রভাত

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বরাবর কংগ্রেসের হয়ে কাজ করেছেন প্রভাতবাবু। তবে নেতা নয়, নিজেকে দলের কর্মী বলতেই পছন্দ করেন।

প্রভাত দাস। নিজস্ব চিত্র

প্রভাত দাস। নিজস্ব চিত্র

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
কালনা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৩ ০৯:৪৫
Share: Save:

মুখে সাদা দাড়ি। পরনে ধুতি। বয়স ৭২। অনেকেই এই বয়সে বাড়ির বাইরে পা রাখতে চান না। তিনি অবশ্য অন্য ধাতুতে গড়া। সকাল হলেই পুরনো সঙ্গী সাইকেলটি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন প্রত্যন্ত গ্রামেগঞ্জে। মাইলের পর মাইল সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরেন সন্ধ্যায়। তাঁর সাইকেলের সামনে ঝোলে একটি বোর্ড। সেখানে কখনও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, কখনও এলাকার চাষিদের সমস্যা, আবার কখনও কংগ্রেসের সাফল্যের কথা লেখা থাকে। সম্প্রতি কর্ণাটকে কংগ্রেসের জয়ের পরে পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্বচ্ছতার দাবি তুলে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ঘুরছেন কালনা ১ ব্লকের সিমলন গ্রামের বাসিন্দাপ্রভাত দাস।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বরাবর কংগ্রেসের হয়ে কাজ করেছেন প্রভাতবাবু। তবে নেতা নয়, নিজেকে দলের কর্মী বলতেই পছন্দ করেন। ২০০৯ সাল থেকে সাইকেলের ভরসাতেই তাঁর গ্রামে গ্রামে ঘোরা শুরু। এলাকার চাষিরা যখনই সমস্যায় পড়েছেন তিনি প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন। সব থেকে বেশি সরব হয়েছেন চাষিদের ফসল বিমা নিয়ে। জেলাশাসকের দফতরে প্রতিবাদপত্র জমা দেওয়া, চাষিদের সমস্যা শোনা, সব করেছেন একাই। এলাকায় একটি সেতু তৈরির দাবি নিয়েও ঘুরেছেন অজস্র গ্রাম। মাস দুয়েক কংগ্রেসের ‘সাগর থেকে পাহাড়’ কর্মসূচিতেও সাইকেলে বারশো কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দেন কিনি। এ বার সাইকেলের সামনে যে বোর্ড ঝুলিয়েছেন তাতে এক দিকে রয়েছে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ছবি। সেখানে লেখা রয়েছে ‘ডর মত’। বোর্ডের আর এক পাশে লাল কালিতে লেখা ‘কর্নাটকে কংগ্রেসের জয়, মানুষের জয়’। এর সঙ্গেই মানুষের বিভাজন বন্ধ করা, দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়া, পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্বচ্ছতার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

অকৃতদার এই বৃদ্ধ বলেন, ‘‘প্রতিদিনই নানা জায়গা ঘুরি। বুধবার ৫৫ কিলোমিটার দূরে মন্তেশ্বরে যাব ভেবেছি। যাঁর সঙ্গে দেখা হবে বলব, দুর্নীতি দেখলেই প্রতিবাদ কর।’’ কিন্তু এ ভাবে ঘুরে লাভ কি হয়? চোয়াল শক্ত হয় বৃদ্ধের। বলেন, ‘‘আগামী প্রজন্মের কাছে আমাদের একটা দায় আছে। অন্যায় মেনে নেওয়া অপরাধ। তাই দুর্নীতি দেখলেই সাইনবোর্ডে প্রতিবাদ করে মানুষের কাছে পৌঁছে যাই। সাড়াও পাই।’’ যত দিন বাঁচবেন এ ভাবেই মানুষের কাছে পৌঁছে যাবেন, দাবি তাঁর।

কালনার কংগ্রেস নেতা নবকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘এই বয়সে মাইলের পর মাইল সাইকেল চালিয়েও ক্লান্তি নেই ওঁর। এমন মানুষ যে কোনও দলের সম্পদ। কী ভাবে মানুষের কাছে পৌঁছতে হয়, মানুষকে আপন করতে হয়, উনি আমাদের শেখান।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalna inspiration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE