পঙ্গু ঠাকুমার মুখে কথা ফোটাতে ‘সবুজ সাথী’র সাইকেলে করে আউশগ্রাম থেকে কেদারনাথ যাত্রা করলেন বছর চব্বিশের ইন্দ্রজিৎ মাজি। তাঁর বাড়ি আউশগ্রামের নৃসিংহপুরে। সোমবার প্রায় সতেরোশো কিলোমিটারের এই যাত্রা শুরু করলেন তিনি।
ইন্দ্রজিৎ দিনমজুরির কাজ করেন। মাঝে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে চেন্নাই, কেরলে গিয়েছিলেন। এখন সেখান থেকে ফিরে ঠাকুমার সঙ্গেই থাকেন। ইন্দ্রজিৎ জানান, প্রথমে গ্রামের আরও তিন-চার জন তাঁর সঙ্গে যাবেন বলে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁরা যেতে না পারায় তিনি একাই রওনা দেন। সঙ্গে নেন সাইকেলের চাকায় হাওয়া দেওয়ার যন্ত্র, মোবাইল ফোনের চার্জার আর কিছু জামা-কাপড়। মঙ্গলবার আসানসোলে পৌঁছন তিনি।
সাইকেলের সামনে একটি গেরুয়া পতাকা এবং পিছনে ভারতের জাতীয় পতাকা বেঁধেছেন। সাইকেলের সামনে কেদারনাথের ছবি দেওয়া একটি বোর্ড, ইংরেজিতে লেখা ‘ভেদিয়া নৃসিংহপুর টু কেদারনাথ’। মোবাইলে গুগল ম্যাপ দেখেই তিনি কেদারনাথের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর কথায়, “চলার পথে অনেকেই এগিয়ে এসে সাহায্য করছেন। সাইকেলের অবস্থা খুব ভাল নেই। কতটা পথ যাওয়া যাবে জানি না। যদি সাইকেলে যাওয়া না যায়, তখন বাকি পথটুকু হেঁটেই চলে যাব।” কেদারনাথ পৌঁছতে মাস দেড়েক সময় লাগবে বলে জানান তিনি।
হঠাৎ এই রকম সিদ্ধান্ত কেন? উত্তরে ইন্দ্রজিৎ বলেন, “ঠাকুমা আমার জন্য অনেক করেছেন। এখন তিনি ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে পঙ্গু হয়ে পড়েছেন। কথা বলতে পারছেন না। অনেক চিকিৎসা করিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তাঁর মুখে কথা ফেরাতে কেদারনাথে যাওয়ার এই সংকল্প নিয়েছি। বিনা কষ্টে ফল মেলে না। তাই সেখানে সাইকেলে করে যাচ্ছি।” স্থানীয় বাসিন্দা সৌরভ ঘোষ বলেন, “এই রকম দুঃসাহসিক অভিযানের তারিফ করতেই হয়। পথে অনেক জনপদ, অনেক রাজ্য পেরিয়ে ও কেদারনাথে পৌঁছবে। সে সব জায়গায় আমাদের এলাকারও নাম হবে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)