খনন হয়েছিল। দুর্গাপুরের অদূরে দামোদরের পাড়ে ভরতপুর বৌদ্ধস্তূপটি বেড়া দিয়ে ‘সংরক্ষিত এলাকা’ ঘোষণা করে পুরাতত্ত্ব বিভাগ। তার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় চার দশক। বেড়াগুলিও বেহাল। এমনকী, এলাকায় দুষ্কৃতীদের আনাগোনাও চলছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, সংরক্ষিত এলাকার বেড়াগুলি মাঝে মেরামত করেছিল স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু এখন তা বেহাল। ফলে, গবাদি পশু থেকে দুষ্কৃতী, সকলেই অবাধে ঢুকে পড়ছে বলে অভিযোগ। অনেকে স্তুপের মাথাতেও চড়ে বসছেন। এমনকী স্তূপ লাগোয়া এলাকা থেকে পানীয়ের বোতলও মিলছে বলে অভিযোগ।
ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বাসস্থান, ধর্মশিক্ষা, ধর্মীয় আচার পালন ও ধ্যানের জায়গা হিসেবে বৌদ্ধবিহারগুলি গড়ে ওঠে। খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতক পর্যন্ত কুষান রীতিতে গড়া স্তূপগুলির অস্তিত্ব ছিল। সেগুলি ইট দিয়ে তৈরি, কয়েক তলা পর্যন্ত উঁচু হতো। ভিতরে থাকত উঠোন, বারান্দা, মঞ্চ, উপাসনাগৃহ। মন্দিরের ভিতরে বুদ্ধ, বোধিসত্ত্ব অথবা বৌদ্ধ ধর্মের অন্য কোনও দেবদেবীর মূর্তি থাকত। সাধারণত, গুপ্ত ও পাল যুগে এমন বিহারগুলি বাংলা, বিহারে তৈরি হয়। ভরতপুরে এখনও মাটির উপরে সে রকমই স্তূপের মাথা দেখা যায়।
প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, ভরতপুরে ১৯৭১ ও ১৯৭৪ সালে দু’দফায় ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনায় করা খননকার্যে বৌদ্ধস্তূপটির অস্তিত্ব জানা যায়। মেলে বৌদ্ধ ধর্মের নানা নিদর্শনও। পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের মতে, দ্বাদশ-ত্রয়োদশ শতক পর্যন্ত এখানে বসতির প্রমাণ মিলেছে। তবে এর পরে আর খননকাজ হয়নি এলাকায়।
মাটির ঢিবির উঁচুতে রয়েছে স্তূপের মাথা। বৃষ্টির জল পড়ে বেশ কিছু জায়গা নিচু হয়ে গিয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, ফের খননকাজ চালিয়ে স্তূপটি আরও কিছুটা বের করে পর্যটনস্থান হিসেবে গড়ে তুলুক সরকার। গলসির বিডিও তারকনাথ দাসের আশ্বাস, ‘‘যা প্রয়োজন, করা হবে। পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগকেও বিষয়টি জানাব।’’